সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সেটা ১৯৯০ সাল। ডিসেম্বরে এক বিদেশির বিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। সেই বিদেশি কে? চিমা ওকোরি (Chima Okorie)। ক্যাথির সঙ্গে লম্বা প্রেম পর্বের পর পরিণয় হয়েছিল ওই বাঙালি ভদ্রলোকের হাত ধরে। তিনি ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal) প্রাক্তন ফুটবল সচিব সুপ্রকাশ গড়গড়ি (Suprakash Gargari)। এহেন লাল-হলুদের দাপুটে কর্তা ৮০ বছর বয়সে কালীঘাটে নিজের বাড়িতে থামলেন। দেশের ৭৭তম স্বাধীনতা দিবসের রাতে গোটা দেশ যখন উৎসবে মেতে তখন রাত ১টা নাগাদ নিভৃতে বিদায় নিলেন তিনি। রেখে গেলেন স্ত্রী ও বিবাহিত কন্যাকে।
সালটা ১৯৮৮। সেবার আর্থিক দৈন্যতা ক্লাবে প্রকট। ফুটবল দল গড়া হবে কীভাবে কেউ জানে না। তখন তো স্পনসরের যুগ ময়দানে আসেনি। কর্তারা দিশেহারা। কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। তখন ক্লাবের ফুটবল সচিব ছিলেন সুপ্রকাশ গড়গড়ি। সকলে জানেন, ময়দানি মানুষদের মধ্যে বাংলায় একমাত্র সুপ্রকাশ গড়গড়ির সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল সুরসম্রাজ্ঞীর। তাই ক্লাবের কাছে সুপ্রকাশ প্রস্তাব দিলেন, যদি লতা মঙ্গেশকরকে (Lata Mangeshkar) দিয়ে বিচিত্রানুষ্ঠান করা যায় তাহলে কেমন হয়?
যেমন কথা। তেমন কাজ। সকলে এককথায় রাজি হয়ে গেলেন। দলকে নিয়ে মুম্বইতে গেলেন রোভার্স কাপ খেলতে। সেবার গিয়ে সরাসরি লতার কাছে সুপ্রকাশ অনুষ্ঠান করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। তাঁর প্রস্তাবে স্বর্গীয় লতা এককথায় সম্মতি জানিয়ে দিলেন। সেবার লতাকে নিয়ে এসে প্রায় ২০ লাখ টাকা তুলেছিল ইস্টবেঙ্গল।
[আরও পড়ুন: AFC কাপে নেপালের ক্লাবে কলকাতা ময়দানের দুই পরিচিত মুখ, মোহনবাগান কি প্রস্তুত?]
দলগঠনের জন্য লতাকে নিয়ে আসা হয়েছিল তা কিন্তু ক্লাব বলেনি। চাউর করা হয়েছিল ক্লাবের প্রি-প্লাটিনাম জুবিলি উৎসবের অঙ্গ হিসেবে। সেই অনুষ্ঠান হয়েছিল ক্লাবের নিজস্ব মাঠেই। তার ঠিক তিনদিন পরে করা হয় জ্যোতিষ গুহ ফুটবল টুর্নামেন্ট। অনুষ্ঠানের শুরুতে লতা মঙ্গেশকরের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল আজীবন সদস্যপদ।
ইস্টবেঙ্গল ক্লাব বা ময়দানি ফুটবলের বৈচিত্র্যপূর্ণ চরিত্র ময়দানে আসছিলেন না বহুদিন। সাম্প্রতিক অতীতে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের বিরোধী গোষ্ঠীর হয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। সেই সুপ্রকাশ এবার থামলেন।