স্টাফ রিপোর্টার: তখনও কিবু ভিকুনা জানতেন না, মঙ্গলবার তাঁর সামনে চলে আসবে স্বপ্ন পূরণের দিন। আসলে তখনও যে রিয়াল কাশ্মীরকে হারানোর ঘটনা ইস্টবেঙ্গল জনতার সামনে আসেনি। কিন্তু ভিকুনা সাতসকালে সাংবাদিকদের বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন, ম্যাচটা থেকে তিন পয়েন্ট নেওয়াই তাঁর লক্ষ্য। অযথা চাপে ফেলতে ফুটবলারদের চাননা। কিন্তু সেই চাপ অবশেষে এসে পড়ল সবুজ-মেরুন তাঁবুতে। রিয়াল কাশ্মীরকে ১-০ গোলে ইস্টবেঙ্গল হারিয়ে দেওয়ায় এখন লিগের ছবিটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। আজ যদি মোহনবাগান (Mohun Bagan) আইজল এফসিকে হারাতে পারে তাহলে এবারের আই লিগ তুলে নেবে সুবজ-মেরুন শিবির। তাই আজ কল্যাণীতে সবুজ-মেরুন সমর্থকদের ঢেউ আছড়ে পড়াটাই স্বাভাবিক।
আইজল এফসি (Aizawl F.C.) এই মুহূর্ত মন্দ খেলছে না। তাছাড়া মোহনবাগানের বিরুদ্ধে তাদের ট্র্যাক রেকর্ড ভাল। তাহলে মোহনবাগান কি পারবে আজ কল্যাণীতে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার বিজয় পতাকা তুলে ধরতে? কার্ড সমস্যার দরুন নেই ফ্রান মোরান্তা। তাঁর পরিবর্তে দলে ঢুকছেন ড্যানিয়েল সাইরাস। তেমনই আভাস দিয়েছেন স্প্যানিশ কোচ। তাছাড়া একই দল থাকার কথা। আসলে গতম্যাচে চেন্নাইয়ের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে বসে মোহনবাগান। তাই সবুজ-মেরুন ফুটবলারদের পারফরম্যান্স নিয়ে সমর্থকরা সামান্য হলেও চিন্তিত। ভিকুনা ম্যাচটাকে কঠিন বলার পিছনে অবশ্য অন্য যুক্তি দেখিয়েছেন। কি যুক্তি? “আসলে গতম্যাচে দলের বেশ কয়েকজন তেমন পারফর্ম করতে পারেনি। সেই সঙ্গে আইজল দলটা বেশ ভাল। গত কয়েকটা ম্যাচে তারা ভাল খেলেছে। তাই আইজলকে হারানো সহজ হবে না।” মন্তব্য করেন কিবু ভিকুনা। পরক্ষণে অবশ্য তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, “ছেলেদের বলেছি, প্রতিপক্ষের দিকে নজর দেওয়ার প্রয়োজন নেই। নিজেদের ফোকাস ধরে রাখার চেষ্টা কর। তাহলেই আমরা ম্যাচটা জিতে ফিরতে পারব।”
[আরও পড়ুন: দোলের দিনে রঙিন ইস্টবেঙ্গল, লাল-হলুদের জয়ে খুশির হাওয়া মোহনবাগানেও]
শেষবারের সাক্ষাতে গোলশূন্য অবস্থায় খেলা শেষ হয়েছিল। কিন্তু ঘরের মাঠে ফায়দা নিয়ে প্রথমার্ধে আইজল সেদিন চাপে ফেলে দিয়েছিল মোহনবাগানকে। পরের অর্ধে অবশ্য মোহনবাগান ঘুরে দাঁড়ায়। কিন্তু এবার ডিপ ডিফেন্সে যখন ফ্রান মোরান্তা নেই তখন কী চাপে পড়ল না বাগান? প্রশ্নের জবাবে ভিকুনা বুঝিয়ে দিলেন, সত্যি বিষয়টা তাঁকে ভাবাচ্ছে। কি রকম? “হয়তো ড্যানিয়েল সাইরাস মঙ্গলবার খেলবে। কিন্তু আমি ভেবে রেখেছি গুরজিন্দর ও কিমকিমার মধ্যে যে কোনও একজনকে খেলাবো।” বেইতিয়া, ফ্রান গঞ্জালেজ ইতিমধ্যেই তিনটে করে হলুদ কার্ড দেখে বসে আছেন। সুতরাং তাঁদের মধ্যে একজন যদি আর একটা কার্ড দেখে ফেলেন তাহলে পরবর্তী ম্যাচে তাঁকে পাওয়া যাবে না। অর্থাৎ ডার্বিতে থাকবেন না। এসব জানা সত্ত্বেও ভিকুনার সাফ জবাব, “মঙ্গলবারের ম্যাচটা আমাদের কাছে খুব ভাইটাল। তিনটে করে হলুদ কার্ড দেখে বসে আছে বেইতিয়া ও ফ্রান গঞ্জালেজ। এসব নিয়ে আদৌ ভাবছি না। আমার কাছে লক্ষ্য তিন পয়েন্ট জোগাড় করা। যাতে লক্ষ্যে পৌঁছতে পারি।”
[আরও পড়ুন: করোনার প্রভাব ফুটবল মাঠে, বাতিল ভারত-কাতার বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের ম্যাচ]
এদিকে সমর্থকরা একপ্রকার ধরেই নিয়েছেন যে আজই ভারতসেরার শিরোপা চলে আসবে মোহনবাগানের কপালে। কল্যাণী স্টেডিয়ামও সেজে উঠছে চ্যাম্পিয়নদের বরণ করার লক্ষ্যে। আজ কল্যাণীতে কয়েক হাজার সমর্থক ম্যাচ দেখতে যাবেন, তা বলাই বাহুল্য। আর তাঁদের সঙ্গে যাচ্ছে প্রচুর সবুজ-মেরুন আবির এবং ব্যানার। কল্যাণীতে হাজার সমর্থকদের কলরব আজ দ্বাদশ ব্যক্তি হিসেবে কাজ করব।
The post জিতলেই লিগের রং সবুজ-মেরুন, বেইতিয়াদের বরণ করতে সেজে উঠেছে কল্যাণী appeared first on Sangbad Pratidin.
