ধীমান রায়, কাটোয়া: পূর্ব বর্ধমান জেলার গুসকরা কলেজের বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব দেওয়ার ঘটনায় জড়িত ছাত্রীও। খতিয়ে দেখার পর জানতে পারল কলেজ কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি ওই ছাত্রীর এক ‘বন্ধু’ এবং বান্ধবী এই ঘটনায় যুক্ত। অধ্যক্ষের সিল সই জাল করে বিজ্ঞপ্তি ভাইরাল হওয়ার ঘটনার জেরে ওই দুই ছাত্রী ও এক প্রাক্তন ছাত্রকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল কলেজের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির পক্ষ থেকে। দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাদের।
গুসকরা কলেজের অধ্যক্ষ সুদীপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “দুই ছাত্রী ও এক প্রাক্তন ছাত্র আমাদের কাছে স্বীকার করেছে তারাই এই ঘটনা ঘটিয়েছিল। তবে মজার ছলে কলেজের সিল, সই জাল করে এটা করেছিল। তাঁরা নিজেরাই ক্ষমা চেয়ে মুচলেকা দিয়েছে। প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এই ধরনের ঘটনা কোনওদিন ঘটাবে না। আমরা কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে নির্দিষ্টভাবে এফআইআর করিনি। তবে সমগ্র বিষয়টি পুলিশকে জানিয়ে রাখা হয়েছে।” পাশাপাশি সুদীপবাবু জানিয়েছেন আপাতত সাময়িকভাবে ওই দুই ছাত্রীকে কলেজে ঢুকতে নিষেধ করা হয়েছে। প্রাক্তন ছাত্রকেও সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে যাতে সে কলেজের ত্রিসীমানায় না আসে।
[আরও পড়ুন: মুরগির খামারে লুকনো ১৪ হাজার মদের বোতল! গ্রেপ্তার বিজেপি নেতা]
গত মঙ্গলবার গুসকরা কলেজের প্যাডে কলেজের অধ্যক্ষের সই সিল ব্যবহার করে একটি বিজ্ঞাপ্তি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। তাতে দেখা যাচ্ছে কলেজের অধ্যক্ষ এক ছাত্রীর উদ্দেশ্যে লিখছেন, কলেজের এক প্রাক্তন ছাত্রের প্রেমের প্রস্তাবে যেন ছাত্রী সাড়া দেয়। কলেজের অধ্যক্ষের নাম করে গুসকরা কলেজের প্যাডে লেখা এই ধরনের জাল বিজ্ঞপ্তি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। তারপরেই বিতর্ক সৃষ্টি হয় এলাকায়। নড়েচড়ে বসে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
জানা গিয়েছে, কলেজের অধ্যক্ষ ওই জাল বিজ্ঞপ্তি দেখার পরেই প্রথমে গুসকরা শহরের বাসিন্দা কলেজের পঞ্চম সেমিস্টারের জনৈক ছাত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ছাত্রী তখনই নিজের ‘ভুল’ এর কথা স্বীকার করে নেন। পাশাপাশি ছাত্রী জানিয়ে দেন কলেজের একটি বিজ্ঞাপ্তিতে অধ্যক্ষের সই, সিল স্ক্যান করে এই নকল বিজ্ঞপ্তি তৈরি করা হয় কম্পিউটারে ফটোশপের মাধ্যমে। তখনই ছাত্রীটি তাঁর বন্ধু ওই প্রাক্তন ছাত্র এবং বান্ধবী দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রীর নাম জানিয়ে দেন। জানা গিয়েছে, দ্বিতীয় বর্ষের ওই ছাত্রীর বাড়ি ভাতারের কামারপাড়া গ্রামে। তিনজনকেই এদিন বুধবার কলেজে ডেকে পাঠানো হয়। তারপর দীর্ঘক্ষণ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তিনজনেই নিজেদের দোষ স্বীকার করে নেন। তারপর কলেজের কাছে মুচলেকাও দেন। অভিযুক্ত ছাত্র অবশ্য এদিন বলেন,” আমিই এডিটিং করে ওই ভুয়ো বিজ্ঞপ্তি তৈরি করে ছাত্রীর কাছে পাঠিয়েছিলাম। তারপর সে তার হোয়াটসঅ্যাপ স্ট্যাটাসে শেয়ার করলে ভাইরাল হয়ে যায়।বন্ধুদের সঙ্গে সম্পূর্ণ মজা করেই এটা করা হয়েছিল। তবে যা করেছি ভীষণ অপরাধ করে ফেলেছি। ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা ঘটবে না। আমি সবার কাছেই ক্ষমাপ্রার্থী।”