সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজতন্ত্র থেকে তালিবানের মোল্লাতন্ত্র। আফগানভূমে পটপরিবর্তন কিছু কম হয়নি। সম্রাট মহম্মদ জাহির শাহর আমলে গোলাপি স্কার্ট পরা আফগান সুন্দরি থেকে তালিবান (Taliban) জমানায় বোরখা পরিহিত নারীদের সন্ত্রস্ত চোখ বন্দি হয়েছে বহু চিত্র সাংবাদিকের ক্যামেরায়। বিবর্তনের পথে আফগানিস্তানের (Afghanistan) পিছু হঠায় বারবার বকধার্মিক বর্বরদের হাতে লাঞ্ছিত হতে হয়েছে মহিলাদের। এবার হারানো জমি উদ্ধার করে ফের নিজের স্বরূপ প্রকাশ করল তালিবান। তাদের দখলে থাকা এলাকাগুলি থেকে যৌনদাসী বেছে নেওয়ার কাজ শুরু করেছে জঙ্গিরা।
[আরও পড়ুন: যুদ্ধ ও রোগের জোড়া ফলা বিঁধেছিল এথেন্সকে, আজও রহস্যে মোড়া ইতিহাসের প্রথম মহামারী]
আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা সরতেই দেশটির প্রায় ৮০ শতাংশ এলাকা দখল করার দাবি করেছে তালিবান। রীতিমতো বেকায়দায় পড়ে ময়দান ছেড়ে পালাচ্ছে কাবুলের সরকারি বাহিনী। ইতিমধ্যে ইরান, পাকিস্তান, উজবেকিস্তান, তাজাকিস্তানের সীমান্ত লাগোয়া একাধিক অঞ্চল তালিবান দখল করে নিয়েছে বলে খবর। তবে আফগান সেনাও পালটা হামলা চালিয়ে এলাকা পুনরোদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানিয়েছে কাবুল প্রশাসন। সম্প্রতি দখলে থাকা শহরগুলিতে ধর্মগুরুদের উদ্দেশে একটি নির্দেশনামা জারি করেছে তালিবান কালচারাল কমিশন। সেখানে বলা হয়েছে, ‘তালিবান যোদ্ধাদের বিয়ে দেওয়ার জন্য পাত্রী চাই। পাত্রীদের বয়স ১৫ বছরের ঊর্ধ্বে হতে হবে। অথবা বিধবা হলে ৪৫ বছরের নীচে হতে হবে। তাঁদের বিয়ে করে পাকিস্তানের ওয়াজিরিস্তানে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে সবাইকে মুসলিম ধর্ম নিতে হবে।” আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে এই খবর প্রকাশ পেতেই পড়তেই তীব্র চঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। তালিবানের বর্তমান নির্দেশে ভয়ে কাঁপছেন সে দেশের অভিভাবকরা। তাঁদের আশঙ্কা, এ বার জোর করে বাড়ির তরুণীদের তুলে নিয়ে যাবে তালিবান জঙ্গিরা। বিশ্লেষকদের মতে, আফগানিস্তানে তালিবান ফিরলে মহিলাদের জীবনে ভয়াবহ অন্ধকার নেমে আসবে। জেহাদের নামে জঙ্গিদের লালসা মেটাতে যৌনদাসী করা হবে তরুণীদের। ভিনধর্মীদের অবস্থা হবে আরও শোচনীয়।
উল্লেখ্য, তালিবানি ফতোয়ায় আফগান মহিলাদের অবস্থা অনেকটা নাদিয়া মুরাদের মতো হবে বলে মনে করছেন অনেকে। সিরিয়ায় আইএস তথা ইসলামিক স্টেটের যৌনদাসী হিসাবে মাসের পর মাস গণধর্ষিতা হয়েছেন নাদিয়া৷ ধরেই নিয়েছিলেন, জাহান্নমে থাকতে থাকতে এভাবেই একদিন মৃত্যুকে বরণ করে নিতে হবে৷ তবে সেই নারকীয় জীবন থেকে নাটকীয়ভাবে উদ্ধার পান তিনি৷ তারপর অনেক পথ হেঁটে এখন তিনি রাষ্ট্রসংঘের গুডউইল অ্যাম্বাসাডর৷