অভিরূপ দাস:বয়স মাত্র ১০ বছর। কিন্তু এই বয়সেই পরিণত স্তনযুগল! দেখে বোঝা দায় নাবালিকার এত কম বয়স! শরীরী গঠনে সে যেন একেবারেই যুবতী। ক্লাস ফাইভের সোমলতা হাজরা (নাম পরিবর্তিত) স্বাভাবিকভাবেই পরিচিত ও বন্ধুমহলে প্রবল বিড়ম্বনার শিকার। এই শারীরিক অস্বাভাবিকতার কারণ কী? চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এত অল্প বয়সে প্রকাণ্ড, পৃথুলা স্তন আদতে এক অসুখ। চিকিৎসা পরিভাষায় যার নাম জাইগানটোম্যাটসিয়া। সোমলতার মতো বহু বালিকাই তাতে আক্রান্ত। এতে শারীরিক অসুবিধার পাশাপাশি সামাজিক ও মানসিক চাপও তাদের সহ্য করতে হয় বিস্তর।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের (Kolkata Medcal College) ব্রেস্ট অ্যান্ড এন্ডোক্রাইন বিভাগের অতিকায় স্তনের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছে সোমলতা। কিন্তু তার মতো বিড়ম্বনায় ভুগছে অনেকেই। চিকিৎসকরা বলছেন, কিশোরী বয়সে বড়দের মতো স্তন (Breast Disease ) স্বাভাবিক নয়। অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। অনেক সময় দেখা যায় স্তনে টিউমার থাকে, যা অভিভাবকরা টের পান না। কিম্বা জাইগানটোম্যাসটিয়া থেকেও এমনটা হয়।
[আরও পড়ুন: মোমো খেতে গিয়ে মৃত্যু প্রৌঢ়ের, তড়িঘড়ি সতর্কবার্তা এইমসের]
কিশোরীদের ঋতুস্রাব শুরুর সময় থেকেই বাড়তে শুরু করে স্তনের পরিধি। নিয়ম অনুযায়ী এই ‘ডেভলপমেন্ট’ একটা নির্দিষ্ট বয়সে থেমে যায়। তা না থামলেই বিপদ। সাধারণত এই শারীরিক অবস্থা রজঃস্বলা মহিলাদের ক্ষেত্রেই দেখা যায়। কিন্তু মাত্র ১০ বছরের সোমলতার যা হয়েছিল তা বিরলতম। এখনও তার ঋতুস্রাব শুরু হয়নি। প্রকাণ্ড স্তন থেকে পিঠে ব্যথা শুরু হয়। সোমলতার বাড়ির লোক জানিয়েছে, ২০২১ সাল থেকে তার থেলারকি বা স্তন প্রস্ফুটন শুরু হয়। মাত্র দশ বছর বয়সে কেন শুরু হল তা? ব্রেস্ট এন্ডোক্রাইন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. ধৃতিমান মৈত্র জানিয়েছেন, জাইগানটোম্যাসটিয়ার কারণ অজানা। তবে লাইফস্টাইল, অপরিকল্পিত নগরায়ণকেই দায়ী করছেন চিকিৎসকরা। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের শিশুরোগ মেডিসিন বিভাগে সোমলতাকে দেখেন ডা. পার্থপ্রতিম চক্রবর্তী, ডা. অনিমেষ মাইতি। সেখান থেকে তাকে এন্ডোক্রিনোলজি বিভাগে রেফার করা হয়। অস্ত্রোপচারের পর স্তন পুনর্গঠন করা হয়েছে সোমলতার। স্তনযুগলকে বয়সোপযোগী করে তোলা হয়েছে। অস্ত্রোপচারে ডা. মৈত্রকে সাহায্য করেছেন ডা. শশী, ডা. হেমাভ সাহা, ডা. শুভ্রজিৎ নাথ। অ্যানাস্থেসিওলজির নেতৃত্বে ছিলেন ডা. দেবাশিস ঘোষ।