শ্রীষিতা ঘোষ, কলকাতা: প্রবাদ আছে, ‘মাছে ভাতে বাঙালি’! আর বাঙালির সেই চিরাচরিত মাছ-ভাত ‘ব্র্যান্ড’ হিসাবে তুলে ধরতে ‘দিলওয়ালো কি শহর’ দিল্লিতে পা রাখছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। আগামী ১৬ জুন, শুক্রবার থেকে দিল্লির জনপথে শুরু হচ্ছে খাদ্য উৎসব৷ প্রিন্সিপাল রেসিডেন্ট কমিশনারের উদ্যোগে ৩০ জুন পর্যন্ত এই জাতীয় মানের খাদ্য উৎসব চলবে। বাংলার নানান মাছের পদের পসরা সাজিয়ে তাই শীঘ্র ভিনরাজ্যে হাজির হতে চলেছে রাজ্য মৎস্য দপ্তর অধীন সংস্থা পশ্চিমবঙ্গ মৎস্য উন্নয়ন নিগম।
একদিকে খাদ্য উৎসব, অন্যদিকে জামাইষষ্ঠী, ইদের অনুষ্ঠান। সব মিলিয়ে আপাতত জোর তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে নিগমের অন্দরমহলে। খাদ্য উৎসবের জন্য বেশ কিছু অভিনব মাছের রেসিপি নিয়ে চলছে ‘এক্সপেরিমেন্ট’। দিল্লিবাসী বাঙালি জামাইদের রসনাতৃপ্তিতে নানা ধরনের মাছের থালির ব্যবস্থা থাকছে খাদ্য উৎসবে। আগামী ১৯ জুন জামাইষষ্ঠীর দিন ‘বাঙাল’ ও ‘ঘটি’ জামাইদের জন্য আলাদা রকমের থালির বন্দোবস্ত করা হয়েছে৷ এই থালি অবশ্য মিলবে সল্টলেকের নলবন ফুড পার্কেও। নিগমের অ্যাপ মারফত অর্ডার দেওয়া যাবে ঘরে বসেও। নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৌম্যজিৎ দাসের কথায়, “প্রতিটি খাবারের দাম থাকছে সাধ্যের মধ্যে। থালিগুলির দাম রাখা হয়েছে ২৯৯ থেকে ৫৯৯ টাকার মধ্যে।”
[বর্ষার শুরুতেই তিলোত্তমায় বিপর্যস্ত জনজীবন]
নিগমের তথ্য অনুযায়ী, বাঙাল থালিতে থাকছে ভাত, কচুশাক (ইলিশ মাছের মাথা দিয়ে), ভাপা ইলিশ, সর্ষে ইলিশ, ইলিশের পাতুরি-সহ একাধিক ডিশ। ঘটি থালিতে রাখা হচ্ছে কলাইয়ের ডাল, আলুপোস্ত, পোস্তর বড়া, চিংড়ির মালাইকারির মতো লোভনীয় সমস্ত পদ। উপরি পাওনা রকমারি মিষ্টি, দই। দেওয়া হবে ফলের প্লেটও। তাতে চার ধরনের ফল থাকছে আম, জাম, লিচু আর কাঁঠাল। ইদের জন্য রয়েছে আবার ভিন্ন ধরনের খাবারের ব্যবস্থা। ইদের দিন মিলবে মাছের পরোটা, চার ধরনের মাছের বিরিয়ানি, লাচ্চা পরোটা, সিমাই, ফিশ ফিঙ্গার।
একইসঙ্গে আম দিয়ে তৈরি মাছের নানান অভিনব রেসিপিও মিলবে এই খাদ্য উৎসবে। সৌম্যজিৎবাবু জানান, গরমে ঠান্ডা হতে আমপোড়ার শরবত তো সকলেই খেয়েছেন। নতুনত্ব আনতে তাই এবার আমপোড়া দিয়ে মাছের পদ নিয়ে আসছে নিগম। এছাড়া মিলবে আম-শোল, আম দিয়ে ইলিশের টক, আমডাল দিয়ে মাছের আইটেমও৷
[মুখ্যমন্ত্রীর আপত্তিতে পিছোল নীতি আয়োগের বৈঠকের দিন]
গত বছর নভেম্বর মাসে দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে আন্তর্জাতিক মানের খাদ্য উৎসবে যোগ দিয়েছিল রাজ্যের মৎস্য দপ্তর। দু’দিনব্যাপী সেই মেলায় শরিক হয়েছিল তাইওয়ান, থাইল্যান্ড-সহ বিভিন্ন দেশ। খাবারের প্রদর্শনীর পাশাপাশি আয়োজন করা হয়েছিল সেমিনার, ব্যবসায়িক আলোচনাচক্রেরও। গতবারের খাদ্য উৎসবে অংশ নেওয়ায় দেশ-বিদেশের সঙ্গে ব্যবসায়িক যোগসূত্র গড়ে তোলার ক্ষেত্রে দপ্তর অনেকটাই উপকৃত হয়েছিল বলে দাবি আধিকারিকদের৷ এবারও মেলা থেকে ভাল লক্ষ্মীলাভের সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা৷
The post মাছ-ভাতকে এবার বিশ্বের বাজারে তুলে ধরছে রাজ্য সরকার appeared first on Sangbad Pratidin.