সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মুখে অযত্নে বেড়ে ওঠা কাঁচাপাকা দাড়ি৷ প্রায় অনাবৃত দেহ৷ কাঠফাটা রোদে গ্রামের রাস্তায় সাইকেল চালিয়ে আসা-যাওয়া করেন৷ আস্তানা বলতে একচিলতে একটা ঘর৷ আর সম্পত্তি বলতে নিজের হাতে পোঁতা কিছু গাছ৷ যার ফলমূল খেয়েই ৩২ বছর ধরে দিন গুজরান হচ্ছে অলোক সাগরের৷
এই পরিচয়েই হয়তো বাকি জীবনটাও কেটে যেত মধ্যপ্রদেশের বেতুল জেলার অখ্যাত কোচামু গ্রামের প্রৌঢ়ের৷ যদি না ভোটের জন্য তাঁর শিকড়ের খোঁজ করত জেলা প্রশাসন৷ অতীতের কোনও রেকর্ডই মিলছিল না আদিবাসীগ্রামের বাসিন্দার৷ শেষমেশ যখন মিলল, সবার চোখ কপালে ওঠার জোগাড়৷
শীর্ণকায় এই লোকটি আইআইটি দিল্লি থেকে পাশ করা ইঞ্জিনিয়ার৷ আমেরিকার হিউসটন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতোকত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি রয়েছে তাঁর৷ আশির দশকে রাজধানীতে ফিরে দীর্ঘদিন দিল্লির আইআইটিতে শিক্ষকতাও করেছেন অলোক৷ রাজধানীর অনেক হেভিওয়েট নামও রয়েছে তাঁর শিষ্যদের তালিকায়৷ যাঁদের একজন সদ্য প্রাক্তন হওয়া রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর রঘুরাম রাজন৷
গাড়ি-বাড়ি সব ছেড়েছেন অলোক৷ মাটির টানে পড়ে আছেন অখ্যাত আদিবাসী গ্রামে৷ কারণ তাঁর বিশ্বাস, বিদ্যে-বুদ্ধির বহর দেখানোর চাইতে, মানুষের জন্য কাজ করা বেশি প্রয়োজন৷ এই প্রয়োজনেই তিন দশক ধরে আদিবাসীদের সঙ্গে বাস করছেন৷ বিদ্যুৎহীন গ্রামে একাই লাগিয়েছেন প্রায় ৫০,০০০ গাছ৷ আদিবাসীদের বুঝিয়ে চলেছেন জীবনের মাহাত্ম্য, প্রকৃতির ভারসাম্যের প্রয়োজনীয়তা৷
The post আদিবাসী গ্রামে দেশের সেবায় মগ্ন রাজনের শিক্ষক appeared first on Sangbad Pratidin.