সংবাদ প্রত্রিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বুচা গণহত্যায় শিউরে উঠেছে বিশ্ব। ওই ঘটনায় বন্ধুমহলেও কোণঠাসা হয়েছে অভিযুক্ত রাশিয়া (Russia)। ইউক্রেনের ওই অভিশপ্ত শহরের রাস্তায় ছড়িয়ে থাকা লাশগুলি যেন চিৎকার করে বলছিল মানুষের অন্ধকার দিকের গল্প। এবার তেমনই আরও এক ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে দাবি করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তাঁর দাবি, মারিওপোলে হাজার হাজার লাশ লুকোচ্ছে রাশিয়া।
[আরও পড়ুন: যুদ্ধ বন্ধ করতে ইউক্রেনকে শর্ত দিল রাশিয়া, মস্কোর দাবি কি মানবেন জেলেনস্কি?]
বুধবার জেলেনস্কি দাবি করেন, বন্দর শহর মারিওপোলে ত্রাণ পৌঁছতে দিচ্ছে না রুশ ফৌজ। কারণ, সেখানে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করে লাশ লুকিয়ে রেখেছে রাশিয়া। সেই খবর গোপন রাখতেই শহরটিকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে তারা। এদিন তুরস্কের এক বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বলেন, “ত্রাণ নিয়ে আমাদের মারিওপোলে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। কারণ, ওরা (রাশিয়া) ভয় পেয়েছে। আমরা ঢুকলে বিশ্ব জানতে পারবে ওই শহরে কী চলছে। আমি জানি, ওই শহরকে নরকে পরিণত করেছে ওরা (রাশিয়া)। সেখানে হাজার হাজার সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। আহত আরও কয়েকহাজার।” মস্কোর বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে সুর চড়িয়ে তিনি আরও বলেন, “বুচা শহরে হত্যার প্রমাণ লোপাট করার চেষ্টা করেছিল রাশিয়া। অধিকৃত জায়গাগুলিতে ওরা গোটা পরিবারকে পুড়িয়ে মেরেছে। স্বামী, স্ত্রী ও তাঁদের সন্তানকেও রেহাই দেয়নি হানাদাররা। তাই আমি ওদের নাৎসি তকমা দিয়েছি।”
অন্যদিকে, রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে জেলেনস্কি জানান, যে কোনও পরিস্থিতিতে শান্তি আলোচনার পথেই হাঁটতে হবে। এছাড়া যুদ্ধ থামানোর কোনও উপায় নেই। তবে কৌতূকশিল্পী থেকে দেশনায়ক হয়ে ওঠা জেলেনস্কি উদ্বেগের সুরে বলেন, “বিষয়টা (শান্তি আলোচনা) সহজ হবে না তা আমরা জানি। কারণ, কাদের সঙ্গে আমাদের আলোচনায় বসতে হচ্ছে সেই কথা আমাদের মাথায় রয়েছে।”
উল্লেখ্য, এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা রুশ হামলার মুখে এই প্রথম কিয়েভের আশপাশের ৩০টি শহর ও গ্রামের দখল নিতে পেরেছে ইউক্রেনের (Ukraine) ফৌজ। তারপরই হানাদার বাহিনীর হাত থেকে উদ্ধার হওয়া এলাকাগুলির ভয়াবহ ছবি জনসমক্ষে উঠে আসছে। রবিবারই ইউক্রেনের বুচা শহরে রুশ ফৌজের অত্যাচারের ভয়াবহতা দেখে কেঁপে ওঠে বিশ্ব। শহরটিতে পাওয়া গিয়েছে একের পর এক গণকবর, ৩০০-রও বেশি নাগরিকের মৃত্যু, মৃত মহিলাদের শরীরে পোড়া স্বস্তিক চিহ্নের দাগ এমনকি ১০ বছরের বালিকার গোপনাঙ্গে আঘাত এবং অত্যাচারের চিহ্ণও স্পষ্ট। যা দেখে সমালোচনার ঝড় উঠেছে বিশ্বে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে যুদ্ধাপরাধী বলে তোপ দেগেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। শুধু তাই নয়, অনেকটা নুরেমবার্গের কায়দায় পুতিনের বিচারের দাবিও জানিয়েছেন তিনি।