সংগ্রাম সিংহরায়, শিলিগুড়ি: হিম ঠাণ্ডা, কনকনে বাতাস আর নরম আলোর সাম্রাজ্যে ভ্রমণপিপাসুদের স্বাগত জানাতে তৈরি হচ্ছে ‘উত্তরে’। পশ্চিম সিকিমের ছোট্ট জনপদ ‘উত্তরে’-কে ঘিরে ভারত-নেপাল পর্যটনের নতুন দিগন্ত তৈরি হতে চলেছে। সৌজন্যে সিকিম সরকারের একটি সড়ক তৈরির উদ্যোগ। ‘উত্তরে’ থেকেই যার সূচনা, শেষ হবে আরও পশ্চিমে ‘চিয়া ভঞ্জন’ এলাকায়। চিয়া ভঞ্জনে নেপাল সীমান্ত। তারপর শুধুই বিদেশ। স্ট্র্যাটেজিক পয়েন্টে এমন ভ্রমণের নয়া ডেস্টিনেশন, ‘উত্তরে’-কে ঘিরে পর্যটনের পালে টাটকা বাতাস। সেই সঙ্গে ওই রাস্তা দিয়ে চলতে চলতেই একসঙ্গে দু’দেশের নৈসর্গ উপভোগ করা যাবে। যা বাড়তি আকর্ষণ।
[বাঁধাধরা গন্তব্য ভুলে ঘুরে আসুন দেশের এইসব তীর্থস্থানে]
[দমাতে পারেনি নিরাপত্তার চিন্তা, অসমের অসময়েও সফর বাতিলে নারাজ বাঙালি]
দেশের মধ্যে অন্যতম উল্লেখযোগ্য পাহাড়ি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে ‘উত্তরে’। দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে পারে ‘উত্তরে’। পশ্চিম সিকিমের অন্যতম জনপ্রিয় ও আকর্ষণীয় টুরিস্ট স্পট পেলিং থেকে কুড়ি কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এটি৷ এখানে রয়েছে ছোট জলপ্রপাত, হ্রদ, গুম্ফা ও পাইন গাছের জঙ্গল। যা মন ভাল করে দেবেই। গ্যাংটক, রাবাংলা, নাথুলা, লাচেন ও লাচুংয়ের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা এই ‘উত্তরে’ এখন পর্যটক বিস্ফোরণের অপেক্ষায়। হ্রদটি বর্তমানে শুকিয়ে গেলেও সেটিকে পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করছে সিকিম সরকার। পাশাপাশি এখানে এশিয়ার অন্যতম উচ্চতম ‘সাসপেনশন ব্রিজ’ রয়েছে। সেটিকেও সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। ‘উত্তরে’ সিকিমের অন্যতম নৈসর্গিক সৌন্দর্যের জায়গা। এই জনপদের উচ্চতা ১০ হাজার ৫০০ ফুট। ফলে রাস্তাটি তৈরি হলে দেশের অন্যতম উঁচু মোটরযান রাস্তা হিসেবেও এর আলাদা গুরুত্ব তৈরি হতে চলেছে। ‘উত্তরে’ থেকে ‘চিয়া ভঞ্জন’ পর্যন্ত রাস্তার একদিকে থাকবে ভারত ও অপরদিকে নেপালের জনপদ। রাস্তায় চলতে চলতেই দেখা যাবে একসঙ্গে দু’দেশের দৃশ্য। তার কারণ, রাস্তার এক পাশে এদেশের সিকিম এবং অন্য পাশে পার্শ্ববর্তী নেপাল।
[টাইগার হিলে এবার রাত্রিবাসের সুযোগ, চায়ের সঙ্গে কাঞ্চনজঙ্ঘা দর্শন]
[এক যুগ পর মুন্নারের আন্নামালাই পাহাড় রূপ নিল বেগুনি উপত্যকার, কিন্তু কেন?]
সিকিম সরকারের উদ্যোগে ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৮ কিলোমিটার রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। নেপালের তরফে একইভাবে সীমান্ত পর্যন্ত রাস্তা তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। ফলে ভারতীয় নাগরিক হলে নির্বিঘ্নে ওদিকে নেপালও ঘুরে চলে আসা যায় অনায়াসে। সিকিমের তরফে কাজের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল ২০১৬-য়। কিন্তু বন ও পরিবেশের ছাড়পত্র হাতে নিয়ে কাজ শুরু করতে কিছুটা সময় ব্যয় হয়েছে। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ চলছে।
[চোখের সামনে বাঘ দেখতে চান? পাড়ি জমাতে পারেন এই সব অরণ্যে]
স্থানীয়দের দাবি, এই রাস্তার ফলে শুধু পর্যটনের উন্নতি হবে তা নয়৷ এই রাস্তা তৈরি হলে খুব সহজেই বিভিন্ন নিত্য ব্যবহার্য সামগ্রী আদানপ্রদান করা সম্ভব হবে। দু’দেশের মধ্যে যেহেতু তেমন কোনও বাধা নেই, ফলে নুন, চিনি ও কেরোসিন-সহ নানা দ্রব্য এদিক থেকে নিয়ে যাওয়া হয়। সিকিম ও নেপাল পর্যটনের যৌথ পরামর্শদাতা রাজ বসু বলেন, ‘‘এই রাস্তা তৈরি হলে সার্কিটটি আরও একটু বড় হয়ে যাবে। পর্যটকদের ভাল লাগবেই।’’
[মেঘলা দিনে প্রকৃতির এই রূপ পরিবর্তনের সাক্ষী হয়েছেন?]
The post কনকনে বাতাস আর নরম আলোর সাম্রাজ্যে ভ্রমণপিপাসুদের স্বাগত জানাতে তৈরি ‘উত্তরে’ appeared first on Sangbad Pratidin.