shono
Advertisement

বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক বাঘ! ২৬ তম জন্মদিন পালনে জলদাপাড়া অভয়ারণ্যে বিশাল আয়োজন

কেক কেটে, চিকেন-মাটন খাইয়ে জন্মদিন উদযাপনের জমজমাট প্রস্তুতি চলছে।
Posted: 11:46 AM Aug 23, 2021Updated: 11:49 AM Aug 23, 2021

ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: আর কোথাও কারও কোনও হদিশ না থাকলে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যাঘ্রের শিরোপা পেতে চলেছে বাংলার বাঘ – রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার (Royal Bengal Tiger)। ২৫ বছর পেরিয়ে সোমবার ছাব্বিশে পা দিল ‘রাজা’। জলদাপাড়ার (Jaldapara) দক্ষিণ খয়েরবাড়ি ব্যাঘ্র উদ্ধারকেন্দ্রে মহা ধুমধাম করে আজ রাজার জন্মদিন পালন করবে বনদপ্তর। এতদিন পর্যন্ত বৃদ্ধতমের রেকর্ড গড়ে আমেরিকার টেক্সাসের চিড়িয়াখানা দাপিয়ে বেড়িয়েছে যে বাঘ, তার নাম ‘বাঙালি’। সেও রয়্যাল বেঙ্গল। অল্প কিছুদিনের ব্যবধানে তার রেকর্ড টপকে গেল রাজা। আগামী ৩১ আগস্ট ২৬তম জন্মদিন পালন করা হবে ‘বাঙালির’। ‘রাজা’ তার চেয়ে ৮ দিনের বড়।

Advertisement

জলদাপাড়ার দক্ষিণ খয়েরবাড়ি ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্রের বাসিন্দা রাজা

জন্মদিনে পালনের আয়োজন ঠিক কেমন? রাজার জন্য অল্প রান্না করা খাবার তৈরি হচ্ছে। মেনুর মূল আকর্ষণ মাটন আর চিকেন। খাঁচার গায়ে বেলুন ঝুলিয়ে তার গেটের বাইরে বিরাট কেক রেখে তার সামনে কেটে সেলিব্রেট করা হবে জন্মদিন। এতক্ষণে সেসব প্রস্তুত। কিন্তু রান্না করা খাবার কি সে খাবে? রাজ্য চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের এক কর্তা বলছেন, “তার রান্না কি আর মানুষের মতো? তার মতো করেই তাকে খাওয়ানো হবে। তার প্রস্তুতিও চূড়ান্ত।” বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক নিজেও রাজার জন্মদিন পালন নিয়ে উৎসাহিত। বলছেন, “সম্ভবত বিশ্বের সব থেকে বৃদ্ধ বাঘ রাজা। সেই বাঘ আমাদের রাজ্যে রয়েছে। তাই উৎসাহ কিছুটা বেশি।”

[আরও পড়ুন: রাতের অন্ধকারে ৫০০ টাকায় ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্পের ফর্ম বিক্রি! পুলিশি তৎপরতায় দুর্নীতির পর্দাফাঁস]

দক্ষিণ খয়েরবাড়ির এই ব্যাঘ্র উদ্ধারকেন্দ্রে এই মূলত লেপার্ড (Leopard) উদ্ধার করেই রাখা হয়। এখন সেখানে ২১টি লেপার্ড রয়েছে। তাদের সঙ্গেই রয়েছে রাজা। রাজার জন্ম সুন্দরবনে। ২০০৮ সালে তার যখন বছর ১২ বয়স, তখন এক দুর্ঘটনায় পিছনের পা খোয়ায় রাজা। একটা খাঁড়ি পেরনোর সময় কুমিরের খপ্পরে পড়ে। কুমিরের এক কামড়ে রাজার পিছনের বাঁ হাড় থেকে ছিঁড়ে যায়। কোনওরকমে প্রাণ নিয়ে জঙ্গলে ঘণ্টা খানেক পড়ে থাকার পর স্থানীয় বনকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে আলিপুর চিড়িয়াখানায় (Alipur Zoo) তাৎক্ষণিক চিকিৎসার জন্য পাঠায়। এক পা হারিয়েও তার তেজ আর রাজকীয় চেহারা সকলের নজর কেড়ে নেয়। নাম দেওয়া হয় – রাজা।

[আরও পড়ুন: কিশোরীকে ‘অপহরণ’ প্রতিবেশী যুবকের, মেয়েকে ফেরানোর দাবিতে রাস্তায় বসে বিক্ষোভ বাবার]

সেখান থেকে ২৩ আগস্ট তার জন্মদিনেই জলদাপাড়ার এই উদ্ধারকেন্দ্রে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। একে এখন শিকারের ক্ষমতা সে হারিয়েছে। তাতে প্রায় ৮০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়ার ধকল। সবটা একসঙ্গে সে সামলে উঠতে পারেনি। তাই সেখানে পৌঁছে প্রথমে সে কিছু খেতে চায়নি। দিন দুয়েক পর প্রথম খাবার খায়। পরে তাকে একটি নকল পা-ও বানিয়ে দেয় দপ্তর।

কিন্তু রাজার এত বছর বেঁচে থাকার রহস্যটা কী? রাজ্যের এক বাঘ বিশেষজ্ঞ জানাচ্ছেন, “জঙ্গলে থাকলে স্বাভাবিক নিয়মে এত বছর বাঁচা সম্ভব নয়। সেখানে সে বড়জোর ১৮ বছর বাঁচত। শত্রু বাঘের সঙ্গে লড়াই হলে শরীরে জখম নিয়ে আরও চার-পাঁচ বছর কম বাঁচবে। কিন্তু জখম হওয়ার কিছু পরেই যেহেতু এটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল, তাই সে চিকিৎসাও পেয়েছিল।” তাঁর কথায়, “কোনও প্রতিকূল পরিবেশের সঙ্গে লড়াই করে বা অন্য কোনও বাঘের সঙ্গে তার কোনও লড়াই নেই। নিয়মমতো খাবার পাচ্ছে। তাই তার শরীরের শক্তিক্ষয়ও কম। স্বাভাবিক কারণেই সে অন্যদের থেকে কিছু বেশিদিন বাঁচবে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup ছাঁদনাতলা toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার