বিশেষ সংবাদদাতা, নয়াদিল্লি: বিশ্বের দরবারে 'সন্ত্রাসী' পাকিস্তানের মুখোশ খুলতে বিদেশ সফরে কেন্দ্রের প্রতিনিধি দল। জাপান ঘুরে রবিবার তাঁরা দক্ষিণ কোরিয়ার সিওলে পৌঁছন। সেখানকার প্রতিনিধিদের কাছে ভারতের উপর সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলা নিয়ে একপ্রস্ত বৈঠকও সারেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, কংগ্রেসের সলমন খুরশিদরা। আর সে প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ভারত-দক্ষিণ কোরিয়া সুসম্পর্ক তুলে ধরতে কবিগুরু স্মরণে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কোরিয়ানদের সঙ্গে বাংলার যোগাযোগের কথা উল্লেখ করার সময়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘দ্য ল্যাম্প অফ দ্য ইস্ট’ কবিতার উল্লেখ করলেন তিনি। রবিবার দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিওলে প্রাক্তন উপমন্ত্রী-সহ শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের সময়ে দুই দেশের সম্পর্কের গভীরতা বোঝাতে বিশ্বকবির কথা তুলে ধরেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
রবিবার ‘এক্স’ হ্যান্ডলে অভিষেক লিখেছেন, ‘আমার আলোচনায়, আমি বিশেষভাবে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে কোরিয়ানদের গভীর সাংস্কৃতিক বন্ধনের কথা তুলে ধরেছি। তাঁর কালজয়ী কবিতা ‘দ্য ল্যাম্প অফ দ্য ইস্ট’ কোরিয়ানদের হৃদয়ে একটি বিশেষ স্থান ধরে রেখেছে। এটি অত্যন্ত গর্বের বিষয় যে তাঁর সেই কবিতা এখনও কোরিয়ার স্কুলগুলিতে পড়ানো হয় এবং আজও তাদের পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যা আমাদের জনগণের মধ্যে স্থায়ী আধ্যাত্মিক এবং সভ্যতার সংযোগের একটি প্রমাণ।’ পাশাপাশি কোরিয়ার শীর্ষস্তরের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনার সময়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইতে ভারত যে অটল অবস্থান নিয়েছে সেই বার্তাও তুলে ধরেছেন তরুণ তৃণমূল সাংসদ। স্পষ্টভাবেই তিনি জানিয়েছেন, সন্ত্রাস ও আলোচনা একসঙ্গে চলতে পারে না।
সিওলে কেন্দ্রের সংসদীয় প্রতিনিধি দল।
সিওলে এদিন অভিষেকরা সন্ত্রাসের মোকাবিলায় দুই দেশের সহাবস্থানের কথাও উল্লেখ, যা অভিষেকের এক্স হ্যান্ডলের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট বোঝা গিয়েছে। তাঁর মতে, ‘সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ভারত এবং দক্ষিণ কোরিয়া অটল প্রতিশ্রুতিতে ঐক্যবদ্ধ। একসঙ্গে, আমরা এই ধরনের বিশ্বব্যাপী হুমকির মুখে শান্তি, স্থিতিস্থাপকতা এবং ন্যায়বিচারের আমাদের ভাগ করা মূল্যবোধগুলিকে তুলে ধরেছি। আমরা কোরিয়ার কিছু শীর্ষস্থানীয় কৌশলগত চিন্তাবিদদের সঙ্গেও আলোচনা করেছি। এঁদের মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন উপমন্ত্রী, রাষ্ট্রদূত এবং দেশের শীর্ষস্থানীয় নেতৃত্ব। আমাদের কথোপকথনে শান্তি, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং সন্ত্রাসের হুমকি মোকাবিলায় বহুপাক্ষিক প্রচেষ্টা জোরদার করার বিষয়গুলি উঠে এসেছে।’
জাপান সফর সেরে সিওলে পৌঁছে অভিষেক সমাজমাধ্যমে লিখেছিলেন, ‘আমরা এখন সিওলে পৌঁছেছি, আমাদের সংকল্প দৃঢ়। ভারত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহস এবং দৃঢ়তার সঙ্গে গোটা বিশ্বে নেতৃত্ব দিয়ে যাবে।’ সেইমতোই এদিন সকাল থেকে একের পর কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন অভিষেক-সহ ভারতীয় প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। ভারতীয় রাষ্ট্রদূত অমিত কুমারের সঙ্গে বৈঠক থেকেই সেই কর্মসূচির শুরু, তা ‘এক্স’ হ্যান্ডলে জানিয়েছেন অভিষেকই। তিনি লিখেছেন, ‘ভারতের সর্বদলীয় সংসদীয় প্রতিনিধিদলের অংশ হিসাবে, আমরা সিওলে আমাদের প্রচারের প্রথম দিনটি রাষ্ট্রদূত অমিত কুমারের (বিদেশমন্ত্রক)সঙ্গে বিস্তারিত মতবিনিময়ের মাধ্যমে শুরু করেছি, যিনি আমাদের কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের রূপরেখা তৈরি করেছেন এবং বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের অটল প্রতিশ্রুতির উপর জোর দিয়েছেন।’
