সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পূর্ব পাকিস্তান (East Pakistan) হাতছাড়া হয়েছিল কেন, তার জন্য কি রাজনৈতিক ব্যর্থতা দায়ী, নাকি সেনার ভুলে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভাব হয় বাংলাদেশের (Bangladesh)! নতুন করে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে পাকিস্তানে। সম্মুখসমরে সেদেশের বিদায়ী সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া (General Qamar Javed Bajwa) এবং জুলফিকর আলি ভুট্টোর (Zulfikar Ali Bhutto) নাতি পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি (Bilawal Bhutto-Zardari)। বিলাওয়াল দাবি করেছেন, সামরিক ব্যর্থতার কারণেই হাতছাড়া হয়েছিল পূর্ব পাকিস্তান।
জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া সম্প্রতি পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের পদ থেকে অবসর নিয়েছেন। ২৪ নভেম্বর নিজের ভাষণে বিদায়ী সেনাপ্রধান দাবি করেন, পূর্ব পাকিস্তান (বাংলাদেশ) হাতছাড়া হওয়া সামরিক নয়, বরং রাজনৈতিক ব্যর্থতা ছিল। সেনাঘাঁটিতে এক অনুষ্ঠানে নিজের বক্তৃতায় তিনি বলেন, “আমি একটা তথ্য সংশোধন করে দিতে চাই। প্রথমত, পূর্ব পাকিস্তান (বাংলাদেশ) হাতছাড়া হওয়া সামরিক নয়, ছিল রাজনৈতিক ব্যর্থতা। লড়াইরত সেনার সংখ্যা ৯২ হাজার ছিল না, বরং তা ছিল মাত্র ৩৪ হাজার। বাকিরা ছিলেন সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মী।”
[আরও পড়ুন: বহু কর্মীর চাকরি গেলেও এই মহিলাকে ছাঁটাই করতে পারবেন না মাস্ক, কেন জানেন?]
কামার জাভেদ বাজওয়া দাবি করেন, মাত্র ৩৪ হাজার সেনা ভারতীয় বাহিনীর আড়াই লাখ সেনা এবং মুক্তিবাহিনীর প্রশিক্ষিত ২ লাখ যোদ্ধার বিরুদ্ধে লড়েছিল। তীব্র প্রতিকূলতা সত্ত্বেও তাঁরা সাহসের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিলেন এবং নজিরবিহীন ত্যাগ স্বীকার করেছিলেন। বাজওয়া আরও অভিযোগ করেন, পূর্ব পাকিস্তানে লড়া সেনাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি শাহবাজ শরিফের দেশ। এই বিষয়ে তীব্র উষ্মা প্রকাশ করেন তিনি।
বুধবার বাজওয়ার এই বক্তব্যের পালটা দিলেন জুলফিকর ভুট্টোর নাতি পাক বিদেশমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি। নিস্তার পার্ক ব়্যালিতে ভাষণ দিতে গিয়ে বিলাওয়াল বলেন, “যখন জুলফিকর আলি ভুট্টোর হাতে ক্ষমতা এসেছিল ততক্ষণে মানসিক ভাবে যুদ্ধ হার হয়েছে। সেই হারানো আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে ছিলেন জুলফিকর ভুট্টো। এছাড়াও পূর্ব পাকিস্তানে শ্রত্রুপক্ষের হাতে বন্দি ৯০ হাজার সেনাকে ফেরানোর ব্যবস্থা করেন তিনি। ভুট্টোর উদ্যোগেই আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা হয় ওঁদের। সদার্থক ব্যাঞ্জক রাজনীতির কারণেই এই কাজ সম্ভব হয়েছে।”
[আরও পড়ুন: ভারত এবার আফগানিস্তানের অসম্পূর্ণ প্রকল্পগুলি শেষ করবে, দাবি তালিবানের]
উল্লেখ্য, পূর্ব পাকিস্তান নিয়ে সাম্প্রতিক বিতর্ক হোক বা অন্য বিষয় পাকিস্তানে সেনা ভার্সেস রাজনীতি পুরনো ঘটনা। সম্প্রতি ইমরান খানের (Imran Khan) ক্ষমতচ্যূত হওয়ার পিছনেই সেনার হাত রয়েছে বলে খোদ অভিযোগ করেন কিংবদন্তি ক্রিকেটার রাজনীতিবিদ। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করে পাক সেনা।