সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রয়াত প্রাক্তন মার্কিন বিদেশ সচিব হেনরি কিসিঞ্জার। বয়স হয়েছিল ১০০ বছর। বলা হয়, প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের জমানায় মার্কিন বিদেশনীতির ‘ভারত বিরোধী’ অভিমুখের মূলে তিনিই ছিলেন। বিতর্কে মোড়া কার্যকালে মুক্তিযুদ্ধে খলনায়ক হিসাবেই কুখ্যাত ছিলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার কিসিঞ্জার অ্যাসোসিয়েটসের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, জার্মান বংশোদ্ভূত কূটনীতিক কিসিঞ্জার কানেক্টিকাটে তাঁর বাড়িতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। বার্ধক্যজনিত কারণেই মৃত্যু হয়েছে প্রাক্তন মার্কিন বিদেশ সচিবের বলে খবর। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে ও সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে ঠান্ডা লড়াইয়ের আবহে মার্কিন কূটনীতির ‘বাস্তবমূখী’ (নিন্দুকেরা বলেন সুযোগসন্ধানী) গতিপথের নেপথ্যে মূলত কিসিঞ্জারেরই হাত ছিল বলে মনে করা হয়।
[আরও পড়ুন: মুক্তি দিয়েও শিশু পণবন্দিদের হুকুম বন্দুকধারীদের! হামাসের হাড়হিম করা ভিডিও প্রকাশ্যে]
তবে ভারত ও বাংলাদেশের কাছে ‘খলনায়ক’ হিসাবেই কুখ্যাত প্রাক্তন এই মার্কিন বিদেশ সচিব। ১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর কিসিঞ্জারের ভূমিকা সমালোচনার মুখে পড়েছিল। নয়াদিল্লির সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছিল ওয়াশিংটনের। কারণ, মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। প্রেসিডেন্ট নিক্সনের সঙ্গে খান সেনার গণহত্যায় দেখেও দেখেননি তিনি। পূর্ব-পাকিস্তান (বর্তমানে বাংলাদেশ) রক্তে লাল হয়ে উঠলেও ভারতকে চাপে ফেলতে মার্কিন নৌবহর পাঠিয়েছিল নিক্সন-কিসিঞ্জার জুটি। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে কিসিঞ্জারের আদায়-কাঁচকলা সম্পর্ক নিয়ে গল্পের ছড়াছড়ি।
আমেরিকার দুই প্রেসিডেন্টের আমলে বিদেশ সচিব ও নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসাবে কাজ করেছেন কিসিঞ্জার (Henry Kissinger)। প্রথমে রিচার্ড নিক্সনের নেতৃত্বাধীন প্রশাসনে, পরে জেরাল্ড ফোর্ডের। বিদেশ সচিব হিসাবে ইজরায়েল এবং প্যালেস্টাইনের মধ্যে হওয়া ইয়ম কিপুরের যুদ্ধ থামাতে তাঁর ভূমিকার কথা স্মরণ করেন কেউ কেউ। আবার ভিয়েতনাম যুদ্ধে কম্বোডিয়ায় বোমা ফেলার কিসিঞ্জারের সিদ্ধান্তে অনেকেই তাঁকে যুদ্ধাপরাধীর তকমা দিয়েছেন।