সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্বসন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর পাকিস্তান জায়গা পেল রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য পদে। বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে এই পদে জায়গা পেয়েছে শাহবাজ শরিফের দেশ। যার অর্থ 'সন্ত্রাসবাদের জনক' এখন থেকে বিশ্বকে দেবে শান্তির বার্তা। এই ঘটনাকে 'প্রহসন' হিসেবে দেখছে কূটনৈতিক মহল। নিয়ম অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই পদে থাকবে পাকিস্তান। পাশাপাশি নিরাপত্তা পরিষদে অস্থায়ী সদস্য হিসেবে জায়গা পেয়েছে, সোমালিয়া, ডেনমার্ক, গ্রিস এবং পানামা।
রাষ্ট্রসংঘের গুরুত্বপূর্ণ এই পদে অস্থায়ীভাবে জায়গা পেয়ে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত জঙ্গি লাদেনের আশ্রয়দাতা দেশ। পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত মুনির আক্রম বলেন, 'আমরা এমন একটা সময়ে এই পরিষদে জায়গা পেলাম যখন বিশ্বজুড়ে ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে। বড় বড় শক্তির আগ্রাসন-সহ, ইউরোপ মধ্য-পূর্ব, আফ্রিকা-সহ বহু দেশ যুদ্ধের মুখোমুখি। এই কঠিন সময়ে সক্রিয় ও সদর্থক পদ্ধতিতে সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেব আমরা। যুদ্ধ এড়িয়ে যাতে শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথে হাঁটা যায় সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে, সন্রাসবাদের মোকাবিলাতেও আমরা সদর্থক ভূমিকা নেব।' যদিও সন্ত্রাসবাদের আঁতুড়ঘর পাকিস্তানের এই বার্তাকে সোনার পাথরবাটি হিসেবে দেখছে কূটনৈতিক মহল। তাদের দাবি, এটা অনেকটা বিড়ালকে মাছ পাহারার দায়িত্ব দেওয়ার মতো।
কারণ, যে সন্ত্রাসবাদকে নির্মূল করার বার্তা পাকিস্তান দিচ্ছে, সেই পাকিস্তানেই বর্তমানে ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে রাষ্ট্রসংঘের সিলমোহর পাওয়া একাধিক আন্তর্জাতিক জঙ্গি। ২৬/১১ জঙ্গি হামলায় পাকিস্তানের যোগ ইতিমধ্যেই প্রমাণিত। আমেরিকার টুইন টাওয়ারে হামলা চালানো ওসামা বিন লাদেন ঘাঁটি গেড়েছিল এই পাকিস্তানে। মুম্বইয়ের আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন দাউদ ইব্রাহিম বর্তমানে করাচিতে আইএসআই-এর নিরাপত্তাধীন। সব মিলিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে সন্ত্রাসযোগের উদাহরণ বলে শেষ করা যায় না। এহেন পাকিস্তান রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
তবে পাকিস্তান নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্যপদ পেলেও, দীর্ঘদিন ধরেই রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্যপদের দাবি জানাচ্ছে ভারত। যত দিন যাচ্ছে এই দাবি আরও জোরালো হচ্ছে। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর বলেছেন, “১৯৪০ সালে রাষ্ট্রসংঘ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। সে সময় ৫০টি দেশ এর সদস্য ছিল। এখন দুশোর বেশি দেশ এর সদস্য। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রসংঘেরও পরিবর্তন হবে। জনসংখ্যার নিরিখে ভারত বিশ্বের বৃহত্তম দেশ। অর্থনৈতিক দিক দিয়ে ভারত আজ বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম দেশ। এরপরেও ভারতকে এখনও রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য করা হচ্ছে না। এতে রাষ্ট্রসংঘের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন উঠবে।” ইতিমধ্যে আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও রাশিয়া নয়াদিল্লির দাবিকে সমর্থন জানিয়েছে। কিন্তু বাদ সেধেছে চিন। যা নিয়ে বহুবার বেজিংকে একহাত নিয়েছে নয়াদিল্লি।