সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আপাতত পালিয়ে বেড়াচ্ছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। এমনই দাবি করছেন সেদেশের প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বোর্ডের সদস্য তিলক দেবাশের। তিনি বলছেন, শরিফ নাকি বাহরিন হয়ে লন্ডন চলে গিয়েছেন স্রেফ ২৯ নভেম্বরের ডেডলাইন এড়াতে। কেননা ওইদিনই ফিল্ড মার্শাল হিসেবে তিন বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল আসিম মুনিরের। কেননা তিনি কোনওভাবেই মুনিরকে আগামী পাঁচ বছরের জন্য সেনাপ্রধান ও দেশের প্রথম সিডিএস করতে চান না। ফলে কাগজে কলমে পাকিস্তানে এই মুহূর্তে কোনও সেনাপ্রধান নেই। এমন পরিস্থিতি অভিনব বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে দেবাশের উল্লেখ করেন যে, ২৯ নভেম্বরের সময়সীমা পেরবার ঠিক আগেই দেশ ছেড়েছেন শরিফ। প্রথমে বাহরিন এবং তারপর সেখান থেকে লন্ডনে চলে যান তিনি। ওই দিনই মুনিরের সেনাপ্রধান হিসেবে তিন বছরের মেয়াদ শেষ হয়েছে। তাঁর কথায়, "অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বাহরিনে গিয়েছিলেন। এবং সেখান থেকে তিনি লন্ডনে গিয়েছেন। তিনি ইচ্ছাকৃত ভাবেই পাকিস্তান থেকে দূরে রয়েছেন। কারণ তিনি আসিম মুনিরকে চিফ অফ ডিফেন্স এবং সেনাপ্রধান হিসেবে পাঁচ বছরের জন্য নিযুক্ত করার বিজ্ঞপ্তি জারি করতে চাইছেন না।"
পাশাপাশি দেবাশের বলছেন, ''এটাই যদি সত্যি বলে মেনে নিই যে, এই মুহূর্তে আসিম মুনির আর সেনাপ্রধান নন, তাহলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হল যেখানে পাকিস্তানের কোনও সেনাপ্রধান নেই! এমনকি পারমাণবিক কমান্ড কর্তৃপক্ষও নেই। এ এক অত্যন্ত অদ্ভুত পরিস্থিতি।"
উল্লেখ্য, শাহবাজ শরিফ ও আসিম মুনির জুটির কবলে এমনিতেই নিষ্পেষিত পাকিস্তানের গণতন্ত্র। নিজেদের মর্জিমতো সমস্ত কিছু করায়ত্ব করতে সংবিধানে বদল এনেছে শাহবাজ সরকার। সংবিধান সংশোধন করে পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের জন্য আনা হয়েছে বিশেষ রক্ষাকবচ। ক্ষমতাও বৃদ্ধি করা হয়েছে তাঁর। অন্যদিকে ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে সে দেশের সুপ্রিম কোর্টের। এহেন পরিস্থিতিতে কোনও কোনও বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, সংবিধানের পরিবর্তনের ফলে সেনাপ্রধানের মেয়াদ এমনিতেই বেড়ে পাঁচ বছর হয়ে গিয়েছে। ফলে মুনিরের আরও অন্তত দু'বছরের জন্য ওই পদে থাকতে আলাদা করে পাক প্রশাসনের তরফে ঘোষণার প্রয়োজনই নেই। এহেন দাবি ঘিরে বিতর্ক আরও ঘনীভূত হচ্ছে। ফলে শেষপর্যন্ত শাহবাজ সরকার কোন সিদ্ধান্ত নেয় সেদিকেই তাকিয়ে সকলে। কিন্তু পাক প্রধানমন্ত্রী দেশে না ফিরলে জট কাটার সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।
