সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আশঙ্কা ছিল, কথা দিয়ে হয়ত কথা রাখবেন না রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইউক্রেনের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধবিরতি আলোচনায় হয়ত শেষ মুহূর্তে আসবেন না রাশিয়ার কোনও প্রতিনিধি। কিন্তু সেসব আশঙ্কা মিথ্যে করে নির্দিষ্ট দিন নির্দিষ্ট সময়েই বৈঠকে বসল মস্কো-কিয়েভ। তুরস্কের ইস্তানবুলে দু'দেশের প্রতিনিধিরা মুখোমুখি বসলেন। তবে যুদ্ধবিরতি নিয়ে একমত হতে পারলেন না তাঁরা। রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয়ই আপাতত বন্দিমুক্তিতে ঐক্যমত্য। সূত্রের খবর, দু'দেশের ১০০০ জন যুদ্ধবন্দিকে মুক্তি দিতে রাজি পুতিন ও জেলেনস্কি প্রশাসন। সরাসরি আলোচনার প্রথম ধাপের ফলাফল এটুকুই। মস্কোর তরফে আশাপ্রকাশ করে জানানো হয়েছে, সঠিক পথেই এগোচ্ছেন তাঁরা। তবে যুদ্ধ থামাতে রাশিয়ার উদাসীনতাকে দায়ী করছে ইউক্রেন।
২০২২ সালে দু'দেশের যুদ্ধ শুরুর পর এই প্রথম সরাসরি আলোচনায় বসল রাশিয়া-ইউক্রেন। কারও মধ্যস্থতা ছাড়াই এই বৈঠক নিঃসন্দেহে বিশাল তাৎপর্যপূর্ণ। বৈঠকের প্রস্তাব প্রথম দেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনই। তিনিই জানিয়েছিলেন, ইউক্রেনের সঙ্গে মুখোমুখি কথা বলতে রাজি রাশিয়া। বৈঠকের স্থান ও দিনক্ষণও ঘোষণা করেছিলেন পুতিন। ১৫ মে ইস্তানবুলে দুই দেশের প্রতিনিধিরা আলোচনায় বসুন, এই প্রস্তাব পাঠানো হয় কিয়েভে। পালটা ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও শর্ত দিয়েছিলেন, কথা নিশ্চয়ই হবে, তবে আগে চাই সংঘর্ষবিরতি। জেলেনস্কির আশঙ্কা ছিল, হয়ত শেষপর্যন্ত আলোচনার রাস্তা থেকে পিছিয়ে যাবেন পুতিন। কিন্তু তা হল না।নির্দিষ্ট দিন নির্দিষ্ট স্থানেই হাজির হলেন রুশ প্রতিনিধিরা। রাশিয়ার তরফে ছিলেন পুতিনের প্রধান উপদেষ্টা ভ্লাদিমির মেডেনস্কি। আর কিয়েভের প্রতিনিধি জেলেনস্কির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রুস্তম উমেরভ। যদিও শোনা যাচ্ছে, জেলেনস্কি নিজে তুরস্কে ছিলেন, তবে এই আলোচনায় তাঁকে দেখা যায়নি।
দু'পক্ষের সরাসরি আলোচনায় স্থির হয়, দু'দেশই এতদিন ধরে থাকা যুদ্ধবন্দিদের ছেড়ে দেবে। প্রথম দফায় ১০০০ জনকে মুক্ত করা হবে। রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয়েই বন্দিদের নিজেদের দেশে ফিরিয়ে দেবে। প্রথম দফার আলোচনায় এই শর্তে দু'দেশ একমত হওয়াকেই বড় সাফল্য বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল। ধাপে ধাপে আলোচনাক্রমে স্থায়ী সমাধানের আশায় তাঁরা। সূত্রের খবর, পরবর্তী ধাপে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট অর্থাৎ পুতিন এবং জেলেনস্কিকে মুখোমুখি বসানোর লক্ষ্যে এগোচ্ছেন দু'দেশের প্রতিনিধিরা। মস্কো-কিয়েভের বন্দিমুক্তি সংক্রান্ত সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন মার্কিন বিদেশ সচিব মার্কো রুবিও।
