সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নিজেদের মৌলিক অধিকারের দাবিতে তালিবানের (Taliban) বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন আফগানিস্তানের মহিলারা। সেই ‘অপরাধে’ প্রকাশ্যে তাঁদের বেধড়ক মারধর করা হল। প্রাণ বাঁচাতে লুকিয়ে পড়লেও রেহাই মিলল না। মহিলাদের খুঁজে বের করে মারধর করল তালিবরা। ঘটনার ভিডিও করতে গেলে মারধর করা হয় উপস্থিত সাংবাদিকদেরও। শনিবার আফগানিস্তানের (Afghanistan) রাজধানী কাবুলে এই নৃশংস ঘটনাটি ঘটেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ঘটনাটির তীব্র নিন্দা করেছে।
জানা গিয়েছে, অন্তত ৪০ জন মহিলা হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে মিছিল করেন। কাবুলে আফগানিস্তানের শিক্ষা দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন তাঁরা। প্রতিবাদের মূল দাবি ছিল, “ব্রেড, ওয়ার্ক অ্যান্ড ফ্রিডম”। অর্থাৎ খাদ্য সুরক্ষা, কাজ এবং স্বাধীনতা চাই। ১৫ আগস্টকে কালো দিন হিসাবে চিহ্নিত করারও দাবি জানিয়েছেন ওই মহিলারা। কারণ ২০২১ সালের এই দিনেই তালিবানের হাতে কাবুলের সরকারের পতন হয়। তারপরেই আফগানিস্তানে নারীস্বাধীনতা একেবারে শেষ হয়ে যায়।
[আরও পড়ুন: ‘এবার আপনার পালা’, রুশদির আরোগ্য কামনা করতেই খুনের হুমকি হ্যারি পটারের স্রষ্টাকে]
জোলিয়া পারসি নামে এক প্রতিবাদী জানিয়েছেন, “ন্যায়বিচার চাই আমরা। সবসময় আমাদের উপেক্ষা করা হয়। এটা আর মেনে নেওয়া যায় না।” বিক্ষোভ দেখেই সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে এসে শূন্যে গুলি চালায় তালিবরা। তারপরেই শুরু হয় নির্বিচারে মারধর। জোলিয়া জানিয়েছেন, মহিলাদের মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়েছে। যাঁরা পালাতে চাইছিলেন, তাঁদের তাড়া করে মারধর করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, বেশ কয়েক মাস পরে শনিবার রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছিলেন আফগান মহিলারা।
ঘটনার ভিডিও করার কারণে সাংবাদিকদেরও মারধর করা হয়। প্রসঙ্গত, কুড়ি বছর ধরে আফগানিস্তানে বেশ কিছু বিষয়ে স্বাধীনতা পেয়েছিলেন মহিলারা (Afghan Women)। পড়াশোনা, চাকরি-সহ নানা ক্ষেত্রে মহিলাদের অংশগ্রহণ করার অনুমতি ছিল। কিন্তু গত বছর তালিবান ক্ষমতায় ফিরতেই ছবিটা পালটে যায়। যদিও ক্ষমতা দখলের পরে তালিবান জানিয়েছিল, নারীদের অধিকার সুরক্ষিত করা হবে। কিন্তু সেই কথা আজও বাস্তবায়িত হয়নি। বারবার মেয়েদের স্কুল খোলার কথা ঘোষণা করেও পিছিয়ে এসেছে তালিবান। সব মিলিয়ে আফগানিস্তানে মহিলাদের পরিস্থিতি শোচনীয়।