সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ওয়াশিংটনের আকাশে চক্কর 'ডুমস ডে' বিমানের। চার ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চক্কর কাটার পর ওয়াশিংটনের নিকটবর্তী বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে সেটি। এরপরই ইরান-আমেরিকার সম্মুখ সমরের সম্ভাবনার পারদ চড়ছে। কিন্তু কি এই 'ডুমস ডে' বিমান? এর সঙ্গে যুদ্ধ পরিস্থিতিরই বা কী যোগ?
'ডুমস ডে' বিমানের পোশাকি নাম বোয়িং ই-৪ বি। জানা গিয়েছে, লুইজিয়ানার বার্কসডেল সেনা ঘাঁটি থেকে মার্কিন সময় অনুযায়ী সন্ধে ছ'টায় রওনা দেয় বিমানটি। ওয়াশিংটনের আকাশে চক্কর কাটার পর রাত ১০টা নাগাদ ভার্জিনিয়া এবং নর্থ ক্যারোলিনা সীমান্ত ঘুরে অ্যান্ড্রুজ জয়েন্ট বেসে নামে। সাধারণত পারমাণবিক যুদ্ধ পরিস্থিতি বা দেশের জরুরি অবস্থা তৈরি হলে দেখা মেলে এই বিমানের। এটি কার্যত 'টেম্পোরারি ওয়াররুম'। কমান্ডিং সেন্টারের রূপ নেয়। হামলার আশঙ্কা থাকলে এই বিমানে চড়ে আকাশপথে ঘোরাফেরা করেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ রাজনীতিবিদ থেকে সেনাপ্রধান, কমান্ডাররা। সেখানে বসেই ঠিক হয় রণকৌশল। যোগাযোগ করা হয় অন্য রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে বিমানটির জন্য এবার যে সংকেত ব্যবহার করা হয়েছে তা আগে কখনও করা হয়নি। এতদিন যাবৎ বোয়িং ই-৪ বি-কে ডাকতে 'অর্ডার সিক্স' সংকেত ব্যবহার করা হত। এবার ব্যবহার করা হয়েছে 'অর্ডার ওয়ান' (ORDER01)। যার অর্থ প্রকাশ্যে আনেনি পেন্টাগন।
'ডুমস ডে' বিমানের বিশেষত্ব কী?
রয়েছে বিশেষ শিল্ড। যা পরমাণু বোমা বিস্ফোরণ থেকে তৈরি হওয়া ইলেকট্রো ম্যাগনেটিক তরঙ্গ, তাপ থেকে বিমানে থাকা লোকজনকে রক্ষা করে।
৬৭টি স্যাটেলাইট এবং ডিশ অ্যান্টেনা রয়েছে। যা নিরবিচ্ছিন্নভাবে সেনাঘাঁটি এবং রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা যায়।
রয়েছে ব্রিফিং রুম, কনফারেন্স রুম, কমিউনিকেশন জোন।
১৮টি স্লিপিং বাঙ্ক রয়েছে বিমানে।
মাঝ আকাশে জ্বালানি ভরতে সক্ষম।
একটানা ৩৫ ঘণ্টা উড়তে পারে বিমানটি।
সঙ্গে থাকে দু'টি সেনা বিমান। যা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিরোধ করে।
এর আগে দু'বার এই বিমান ব্যবহার করেছিল আমেরিকা। এক, ১৯৯৫ সালে হারিকেন ঝড় ওপালের সময়। দুই, ২০০১ সালের ৯/১১ হামলার সময় প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশকে নিয়ে উড়েছিল বিমানটি। এবার কি তবে আমেরিকা সেরকমই যুদ্ধ পরিস্থিতির আঁচ করছে? আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহল বলছে, চলতি সপ্তাহেই ইরানে সরাসরি হামলা চালাতে পারে আমেরিকা। যার পালটা আঁচ পড়তে পারে ওয়াশিংটনে। সেই কথা মাথায় রেখে প্রেসিডেন্টের সুরক্ষার স্বার্থে ডাকা হল 'ডুমস ডে' বিমান।
