সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চিন, ইউরোপের পর আমেরিকায় তাণ্ডব চালাচ্ছে মারণ ভাইরাস কোভিড-১৯। লাশের পাহাড়ে দাঁড়িয়ে চিনকে ক্রমাগত চোখ রাঙাচ্ছে আমেরিকা। চিনের গবেষণাগারেই নোভেল করোনা জীবাণু তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগে সরব ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর বন্ধুরা। এমন পরিস্থিতি এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। দাবি করা হচ্ছে, বিতর্কের মূলে থাকা ইউহানের ওই গবেষণাগারকে আর্থিক সাহায্য করছিল আমেরিকা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের এহেন দাবিতে আমেরিকা-চিন যুদ্ধে নতুন মশলা যুক্ত হল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। প্রশ্ন উঠেছে, অনুদান দেওয়ার আগে কি আমেরিকা জানত না, সেখানে কী নিয়ে গবেষণা চলছে। না জেনেই এরকম একটি প্রতিষ্ঠানে কী করে সাহায্য করল তারা।
সূত্রের দাবি, ইউহানের ওই ল্যাবে চিনের যুনান প্রদেশের গুহা থেকে ধরা স্তন্যপায়ী প্রাণী যেমন বাদুড়ের উপর গবেষণা চলত, আমেরিকার টাকায়। কী গবেষণা? করোনা ভাইরাসের পরীক্ষা! ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম ‘ডেইলি মেইল’ যে তথ্য পেয়েছে, তাতে স্পষ্ট মার্কিন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথের প্রকল্পের অংশ হিসাবে ইউহানে বাদুড়ের উপর গবেষণা চলছিল। এই মার্কিন সংস্থা আমেরিকার স্বাস্থ্য দপ্তরের অধীন। বায়োমেডিক্যাল ও জনস্বাস্থ্য সম্পর্কিত পরীক্ষা তাদের মাধ্যমে হয়ে থাকে। গবেষণা বলছে, করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব প্রথম মেলে যুনান প্রদেশের গুহায় থাকা বাদুড়ের মধ্যে। ইউহানের এই ল্যাব চিনের আধুনিক ও অগ্রণী গবেষণাগারগুলির মধ্যে অন্যতম। ইউহানের পশু বাজারের কুড়ি মাইল দূরে সেটি অবস্থিত। ওই বাজার থেকেই কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়েছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। মার্কিন অনুদানের তথ্য সামনে আসায় বিতর্ক নতুন করে দানা বেঁধেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ২০১১ সালে অর্থাৎ ওবামার আমলে ইউহান ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজিকে ৩.৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ সাহায্য করা হয়েছিল।
[আরও পড়ুন : ‘করোনা দীর্ঘদিনের অতিথি, এখনই লকডাউন তুলবেন না’, সতর্কবার্তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার]
অনেকেই মনে করছেন, ইউহানের বাজার নয়, আসলে ভাইরাস ছড়িয়েছে ওই ল্যাব থেকেই। এই খবর সামনে আসতেই মার্কিন আইন প্রণেতারা, বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগতে শুরু করেছে। এই ধরনের বিপজ্জনক ও নিষ্ঠুর পরীক্ষায় কী করে মার্কিন সরকার টাকা ঢেলেছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। মার্কিন কংগ্রেস সদস্য ম্যাট গেটজ বলেন, “এই ধরনের ভয়ঙ্কর কাজে সরকার এত দিন ধরে মদত দিচ্ছে! খবর শুনে আমি স্তম্ভিত। তার মানে চিনের অন্য গবেষণা সম্পর্কে সরকারের ধারণা রয়েছে। তার পরেও কীভাবে এটা সম্ভব?” প্রেসার গ্রুপ হোয়াইট কোট ওয়েস্ট-এর প্রেসিডেন্ট এনটনী বেলত্তির মতে, ল্যাবে সংক্রামিত বা অসুস্থ পশুই হয়তো ওই বাজারে চলে এসেছিল। তা থেকে ভাইরাস ছড়াতে পারে।এপ্রিলের গোড়ায় চিনের বিরুদ্ধে মার্কিন আদালতে ২০ ট্রিলিয়ন ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা দায়ের হয়েছে। কারণ, কোভিড-১৯ ছড়ানোর জন্য বেজিংয়ের দিকে আঙ্গুল তুলেছে অনেকে। তাঁদের মতে, চিনা কর্তৃপক্ষ জৈব অস্ত্র তৈরি করেছে। কিন্তু মার্কিন অনুদানের তথ্য সামনে আসায় অনেক হিসাবই এখন পাল্টে গেল।
[আরও পড়ুন : ডায়েরিতে ইউহানের সেই অভিজ্ঞতা, খুনের হুমকি চিনের মুক্তমনা লেখিকাকে]
The post আমেরিকার টাকায় চিনে মারণ ভাইরাসের গবেষণা! ব্রিটিশ সংবাদপত্রের দাবিতে বিতর্ক appeared first on Sangbad Pratidin.
