সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইজরায়েল ও ইরানের যুদ্ধকে কেন্দ্র করে দু'ভাগে বিভক্ত হল বিশ্ব। ইরানের মাটিতে হামলা প্রসঙ্গে ইজরায়েলের তরফে জানানো হয়েছে, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির অত্যন্ত কাছে পৌঁছে গিয়েছিল। বিশ্বকে বাঁচাতেই এই পদক্ষেপ করেছে তারা। ইজরায়েলের পদক্ষেপকে প্রকাশ্যে সমর্থন করেছে আমেরিকা, ফ্রান্স, ব্রিটেন, জার্মানি, ইতালির মতো দেশগুলি। অন্যদিকে, এই হামলার নিন্দায় সরব হয়েছে চিন, ইয়েমেন, ইরাক।
অন্যদিকে, দুই বন্ধু দেশের যুদ্ধ পরিস্থিতিতে নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে ভারত। ইরানের উপর ইজরায়েলি হানার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করেছে ৯ দেশীয় সাংহাই কোঅপারেশেন অর্গানাইজেশন (এসসিও)। তবে এই বিবৃতি থেকে নিজেদের আলাদা করলেও নয়াদিল্লির তরফে জানানো হয়েছে, আলোচনা এবং কূটনৈতিক পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে ইজরায়েল এবং ইরানকে সংঘর্ষ থামানো প্রচেষ্টা চালাতে হবে। দুই দেশের মধ্যে চলতে থাকা উত্তেজনা কমাতে দুপক্ষকে কূটনৈতিক আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছে ভারত। ভারতের বিদেশমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, শুক্রবারই ইরানের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে সংঘর্ষ নিয়ে কথা বলেছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। কূটনৈতিক স্তরে সমস্যা মেটানোর কথা বলেছেন তিনি। এসসিও-এর বিবৃতিতে সহমত পোষণ করেছে, চিন, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, রাশিয়া, পাকিস্তান, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান।
এই যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ইজরায়েলকে সমর্থন জানিয়েছে ইতালি। সেখানকার বিদেশমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আর্জি জানিয়েছেন। যদিও উদ্বেগ প্রকাশ করে তাঁর বক্তব্য, 'এই যুদ্ধ পশ্চিম এশিয়ার জন্য বিপদ ডেকে আনবে।' ফ্রান্সের বিদেশমন্ত্রী জিন-নোয়েল ব্যারোট জানিয়েছেন, 'ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র পাওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষায় প্যারিস উদ্বিগ্ন। আমরা ইজরায়েলের পাশে রয়েছি।' ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার জানিয়েছেন, 'ইরানের উপর ইজরায়েলের আক্রমণ যথেষ্ট উদ্বেগের। দুই পক্ষকেই তাদের অবস্থান থেকে পিছু হঠতে হবে।' একইসঙ্গে তিনি জানান, 'ইজরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে।' জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রেডরিক মের্জ জানান, 'এই যুদ্ধ ওই অঞ্চলের জন্য যথেষ্ট উদ্বেগের। তবে নিজেদের অস্তিত্বরক্ষা ও নাগরিকদের নিরাপত্তার অধিকার ইজরায়েলের রয়েছে।'
অন্যদিকে, দুই দেশের যুদ্ধে সরাসরি ইজরায়েলকে নিশানা করে ইরানের পাশে দাঁড়িয়েছে পাকিস্তান। পাক বিদেশমন্ত্রী ইসাক দার জানান, 'ইরানের উপর ইজরায়েলের হামলার তীব্র নিন্দা করছি আমি। পাকিস্তান ইরানের জনগণের পাশে রয়েছে।' ইজরায়েলকে তোপ দেগে তুরস্ক জানিয়েছে, 'এই হামলা সরাসরি আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। ইরানে ইজরায়েলের বিমান হামলা এটাই স্পষ্ট করে যে ওরা কূটনৈতিক উপায়ে সমস্যার সমাধান চায় না।' কাতারের আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলির কাছে আবেদন জানিয়েছে, ইজরায়েলের এহেন হামলা রোখার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হোক। ইজরায়েলের হামলার নিন্দা জানিয়ে কাতার। পাশাপাশি চিনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র লিন জিয়াং জানিয়েছেন, চিন এই যুদ্ধের মারাত্মক পরিণতি নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। ইরানের উপর এহেন আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বেজিং।
