সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলাদেশে পতন ঘটেছে শেখ হাসিনা সরকারের। ব্যাপক গণ আন্দোলনের (Bangladesh Protest) জেরে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন তিনি। আপাতত মুজিবকন্যা রয়েছেন ভারতে। এর মাঝেই বাংলাদেশে গঠিত হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এই পরিস্থিতিতে দিল্লিকে কড়া বার্তা দিয়ে বিএনপি সাফ জানিয়ে দিয়েছে, ভারত যদি তাদের 'শত্রু' হাসিনাকে সাহায্য করে তাহলে নয়াদিল্লি ও ঢাকার মধ্যে সুসম্পর্ক স্থাপন হওয়া কঠিন হবে।
বরাবর কট্টর ভারত বিরোধী হিসাবেই পরিচিত বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি বা বিএনপি। চলতি বছরের মাঝামাঝি সময় বাংলাদেশে স্লোগানও উঠেছিল 'বয়কট ইন্ডিয়ান গুডস'। তৎকালীন হাসিনা সরকারের অভিযোগ ছিল, এর নেপথ্যা রয়েছে খালেদা জিয়ার দল। ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনেও দিল্লির অঙ্গুলিহেননের অভিযোগ তুলেছিল বিএনপি। ফলে স্বভাবতই ভারত আপাতত হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ায় ক্ষুব্ধ তারা। গতকাল নতুন সরকারের শপথ নেওয়ার পর বাংলাদেশের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বিএনপি নেতা গয়েশ্বর রায় বলেন, "ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার প্রতি আস্থাশীল আমরা। কিন্তু ভারতকেও সেই চেতনা ও ভাবাবেগ বুঝতে হবে। আপনি যদি আমাদের শত্রুকে সাহায্য করেন তা হলে সেই পারস্পরিক সহযোগিতাকে সম্মান করা কঠিন হয়ে পড়ে।’’নাম না করলেও গয়েশ্বর যে হাসিনার কথাই বলতে চেয়েছেন তা স্পষ্ট।
[আরও পড়ুন: ‘সকলের সঙ্গে বৈঠকে বসতে প্রস্তুত’, দাবি হাসিনাপুত্র জয়ের]
তৎকালীন হাসিনা সরকারের অধীনে হওয়া নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে গয়েশ্বর বলেন,"আমাদের প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রীই গত নির্বাচনের আগে উল্লেখ করেছিলেন যে হাসিনা সরকারকে ক্ষমতায় ফেরাতে সমর্থন করবে ভারত। তারা মূলত হাসিনার দায়ভার বহন করছে। কীভাবে ভারতীয় ও বাংলাদেশিদের মঙ্গল হবে সেদিকে নজর দেওয়া উচিত। কিন্তু ভারত দেশ বা জাতির বদলে শুধুমাত্র একটা দলকে সমর্থন জানায়।" হাসিনার সরে যাওয়ার হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের নানা ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে গত কয়েকদিন ধরে। সেনিয়েও মুখ খোলেন এই বিএনপি নেতা। তিনি বলেন, "সকলে মনে করে বিএনপি হিন্দুবিরোধী। কিন্তু আমি স্পষ্ট করতে চাই যে, বাংলাদেশের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষদের নিয়েই তৈরি হয়েছে বিএনপি। আমরা সব ধর্মকেই সমর্থন করি।"
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, আওয়ামি লিগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ায় কার্যত প্রাণ ফিরে পেয়েছে বিএনপি। এতদিন দলের নেতারা পালিয়ে বিদেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কিন্তু এখন বিভিন্ন মন্ত্রকের গুরুত্বপূর্ণ পদেও বসেছেন বিএনপি নেতারা। জেলমুক্তি ঘটেছে দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। বাংলাদেশে ফিরতে পারেন তাঁর পুত্র তারেক রহমান। ফলে ভারত বিরোধীতার আবেগকে কাজে লাগিয়ে জনমত গঠন করতে চাইছে বিএনপি।