সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: মৃত ও স্থান পরিবর্তন করা ভোটার নিয়ে অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখতে ফলতায় নির্বাচন কমিশনের বিশেষ পর্যবেক্ষক। যদিও, কমিশনের পর্যবেক্ষকদের ঘিরে বিক্ষভ দেখান স্থানীয় মহিলারা।
জানা গিয়েছে, কমিশনে জমা পড়া অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে বৃহস্পতিবার ফলতায় আসেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিশেষ পর্যবেক্ষক সি মুরুগান। যদিও, কোনও অনিয়ম তিনি পাননি বলেই প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে। এদিকে কমিশনের পর্যবেক্ষককে ঘিরে ব্যাপক বিক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার মহিলারা। তাঁদের অভিযোগ, কেন্দ্র নাগরিকদের আবাস যোজনার টাকা ও ১০০ দিনের কাজের টাকা আটকে রেখেছে। কিন্তু, এসআইআরের মাধ্যমে সেই প্রকৃত নাগরিকদেরই অহেতুক হয়রান করা হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশনে বিজেপি অভিযোগ জানায়, ফলতার ভোটারলিস্টে বহু মৃত ভোটারের নাম থেকে গিয়েছে। পাশাপাশি, পাকাপাকিভাবে অন্যত্র চলে যাওয়া ভোটারের নামও রয়ে গিয়েছে বলে দাবি করা হয়। অভিযোগ করা হয়, শাসকদলের চাপে বিএলওরা সঠিক তথ্য যাচাই না করেই ওই মৃত ভোটার এবং অন্যত্র চলে যাওয়া ভোটারের নামেই এনুমারেশন ফর্ম বিলি করেছেন এবং সেগুলি জমা নিয়েছেন।
অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখতে, বৃহস্পতিবার দুপুরে ফলতায় আসেন বিশেষ পর্যবেক্ষক সি মুরুগান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ফলতার বিডিও তথা এইআরও শানু বক্সি। কমিশনের পর্যবেক্ষককে ঘিরে ছিল কড়া পুলিশি নিরাপত্তা। অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি এলাকার বেশ কিছু বাড়িতেও যান এবং অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখেন। প্রয়োজন অনুযায়ী পরিবারগুলির কাছে নথিও চান তিনি। বিএলও-রা সঠিকভাবে কাজ করছেন কিনা, সেবিষয়েও খতিয়ে দেখতে একটি প্রশাসনিক বৈঠকও করেন তিনি। বিডিও জানান, "কমিশনের পর্যবেক্ষক মৃত ভোটার ও স্থান পরিবর্তন করা ভোটারের অভিযোগের সত্যতা জানতে তথ্য খতিয়ে দেখেন। তবে তিনি কোনও গরমিল পাননি।" সি মুরুগান বলেন, "খতিয়ে দেখলাম। কি পেলাম আর কি পেলাম না তা নির্বাচন কমিশনকেই জানাবো।" গরমিল কিছু পেলেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, "ওটা প্রশাসনিক বিষয়।"
অন্যদিকে, বিশেষ পর্যবেক্ষককে ঘিরে ব্যাপক বিক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার মহিলারা। তাঁদের বক্তব্য, "দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রীয় সরকার আমাদের ১০০ দিনের কাজের টাকা এবং আবাস যোজনার টাকা দিচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। আমাদের হকের টাকা আটকে রেখে বিজেপি কেবল এসআইআরের নামে মানুষকে আতঙ্কিত করছে। বিজেপির দালালি চলতে দেবো না।" এপ্রসঙ্গে পর্যবেক্ষক বলেন, "বিক্ষোভ আমাকে কেউ দেখায়নি।" বিডিও জানান, "গ্রামের ওই মহিলারা প্রথমে ভেবেছিলেন বন্ধ থাকা উন্নয়নের কাজগুলির সমীক্ষা করতে এসেছেন তাঁরা। পরে মহিলারা বুঝতে পারেন যে তাঁরা ভুল ভেবেছেন। বুঝতে পেরে বিক্ষোভ থেকে পিছুও হটেন তাঁরা।"
