অভিষেক চৌধুরী, কালনা: ওড়িশায় ফুলগাছের চারা বিক্রি করতে গিয়েছিলেন পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর বাসিন্দারা। সেখানে বাংলা ভাষায় কথা বলার জন্য ফুলচাষিদের 'বাংলাদেশি' তকমা দিয়ে সোজা বাংলাদেশ পাঠানোর হুমকি দেওয়া হল বলে অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে সরব হয়েছেন পূর্বস্থলীর স্টেশন লাগোয়া পাণ্ডবপাড়ার সাহাবুদ্দিন শেখ, বাপন শেখ, সাগর শেখ ও শাহজাহান শেখের পরিবার। যদিও স্থানীয় তৃণমূল বিধায়কের চেষ্টায় অবশেষে তাঁরা বাড়ি ফিরেছেন।
পূর্বস্থলীতে প্রচুর নার্সারি রয়েছে। ভিনরাজ্যে ফুলের চারার চাহিদা থাকায় এখানকার যুবকরা বিহার, ওড়িশা, অসম-সহ বিভিন্ন রাজ্যে তা বিক্রি করতে যান। পূর্বস্থলীর পাণ্ডবপাড়ার চার যুবকও সেই কাজে ওড়িশায় গিয়েছিলেন। বাংলা ভাষায় কথা বলার 'অপরাধে' তাঁদের ওড়িশার খুরদা রোড এলাকায় দীর্ঘক্ষণ ধরে আটকে রেখে হেনস্তার অভিযোগ ওঠে। পরিবারের লোকজনদের অভিযোগ, ৪ জনের কাছে বৈধ পরিচয়পত্র থাকা সত্বেও তাঁদের বাংলাদেশি তকমা দিয়ে বাংলাদেশে পাঠানোর হুমকি দেওয়া হয়েছে। ফুলের চারা বিক্রেতা সাহাবুদ্দিন শেখের ভাই সিরু শেখ বলেন, "পুলিশ এসে দাদাদের থানায় নিয়ে গেলে সেখানকার বিজেপির লোকজন চড়াও হয়ে দাবি করে যে দাদাদের যেন তাঁদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়। চরম হেনস্তার শিকার হতে হয়।"
ঘটনার কথা কানে আসতেই পূর্বস্থলী উত্তরের তৃণমূল বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় পূর্বস্থলী থানায় ঘটনার কথা জানান। এরপর পূর্বস্থলী থানা খুরদা রোড এলাকার থানার সঙ্গে যোগাযোগ করলে ফুলচাষিরা থানা থেকে মুক্তি পান। বিধায়ক বলেন, “এখান থেকে বাঙালিরা গেলেই বিজেপির নেতৃত্বে ও ইন্ধনে তাদের হেনস্তা করা হচ্ছে। এখানকার পুলিশের মাধ্যমে যোগাযোগ করে ওদের ফেরানোর ব্যবস্থা হয়।”
এই খবর চাউর হতেই ভিনরাজ্যে আর কেউ যেতে চাইছেন না। কয়েকটি নার্সারির মালিকরা জানান, ওড়িশাতে ফুলের চারা বিক্রি হয় বেশ ভালো। এই ঘটনার পর এখন আর কেউ যেতে চাইছেন না। ফুলচাষি হেকমত আলি খাঁ বলেন, "বাংলায় কথা বললে হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে। তাই বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে কেউ আর চারা বিক্রি করতে যাচ্ছে না। এর ফলে আমরাও পড়েছি সমস্যায়।” যদিও স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের দরকার। কারণ এমন অভিযোগ নজরে আসেনি।
