অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: স্বামীর সঙ্গে প্রতিবেশী মহিলার 'পরকীয়া'। সেই কথা জানতে পেরে স্ত্রী নিজেকে শেষ করে দেওয়ার চেষ্টা করেন বলে দাবি। শিলিগুড়ির উত্তর শান্তিনগর এলাকায় বৃহস্পতিবার ওই মহিলার মৃত্যু হলে বিক্ষোভের আগুনে ঘি পড়ে। প্রতিবেশীরা ওই যুবকের বাড়িতে ঢুকে কার্যত তাণ্ডব চালাল! বাড়ির দরজা ভাঙচুর থেকে ঘরে ঢুকে সমস্ত জিনিসপত্র তছনছ করে ফেলা হয়েছে। তুমুল বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। খবর পেয়ে আশিঘর ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। কিন্তু তাতে কার্যত হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে। ঘটনার জেরে এখনও থমথমে এলাকা, মোতায়েন পুলিশ বাহিনী।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর, ভজন সরকার নামে এক বাসিন্দার সঙ্গে প্রতিবেশী এক মহিলার বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। তা জেনে ফেলেন ভজনের স্ত্রী ঝর্ণা সরকার। এরপরই তিনি বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেন বলে অভিযোগ প্রতিবেশীদের। দু'দিন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াইয়ের পর বৃহস্পতিবার মৃত্যু হয় ঝর্ণাদেবীর। আর তারপর থেকেই এলাকার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। প্রতিবেশীরা ভজনের বাড়িতে চড়াও হয়। দীর্ঘক্ষণ ধরে চলে ভাঙচুর। বাড়ির ভিতরের আসবাবও ভেঙেচুরে তছনছ করে দেওয়া হয়।
মৃত ঝর্ণা সরকারের জা নমিতা সরকার বলেন, "এই ঘটনার বিচার চাই৷ ওই মহিলার সঙ্গে সম্পর্কের জেরে আজ এই মৃত্যু হল। ঘটনা মেনে নিতে পারছি না৷" প্রতিবেশী নমিতা মণ্ডলের কথায়, "অনেকদিন ধরেই এই সমস্যা চলছে৷ স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মাঝেমধ্যেই বচসা বাঁধত। এই দম্পতির দুই কন্যাসন্তান রয়েছে৷ কিন্তু স্বামীর অন্য সম্পর্কের কথা জেনে স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে। আজ মারা যাওয়ার পরই পরিস্থিতি বেসামাল হয়ে ওঠে।"
এই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় আশিঘর ফাঁড়ির পুলিশ। পৌঁছন এসিপি পদমর্যাদার আধিকারিকরা। পরিস্থিতি এতটাই উত্তেজক ছিল যে নামাতে হয় র্যাফ। পরিস্থিতি সামলানোর পাশাপাশি মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে পাঠায় পুলিশ। অন্যদিকে, ঘটনাকে কেন্দ্র করে ডিসিপি রাকেশ সিং জানিয়েছেন, "এখনও পর্যন্ত দুটি মামলা শুরু হয়েছে৷ যাঁদের বাড়ি ভাঙচুর হয়েছে, তাঁরা একটা মামলা করছে। অন্যদিকে পুলিশ নিজস্ব মামলা শুরু করছে। গোটা ঘটনার তদন্ত চলছে৷"
