সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশকে মাওবাদী মুক্ত করার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই লক্ষ্যমাত্রার ফেট্টি মাথায় বেঁধে লাল সন্ত্রাসকে সমূলে বিনাশ করতে মাঠে নেমেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। সাফল্যও এসেছে। এবার সেই সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরল শাহের মন্ত্রক। যেখানে দেখা যাচ্ছে, গত ১০ বছরে যৌথবাহিনীর অভিযানে মৃত্যু হয়েছে ১৮৬১ জন মাওবাদী নেতা ও কর্মী। পাশাপাশি গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৬৩৩৬ জনকে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়ে দিয়েছেন আগামী বছরের ৩১ মার্চের মধ্যে দেশ থেকে মুছে দেওয়া হবে মাওবাদকে। এরপর থেকেই ছত্তিশগড়, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, ওড়িশা, মহারাষ্ট্রের মাওবাদী বেল্টকে তছনছ করতে মাঠে নামে বাহিনী। লাগাতার অভিযানের জেরে শুধুমাত্র ২০২৫ সালের এখনও পর্যন্ত দেশে ৩৩৫ জন মাওবাদীর মৃত্যু হয়েছে। গত ১০ বছরের মধ্যে এই সংখ্যাটা সর্বাধিক। বেপরোয়া এই অভিযান ভয় ধরিয়েছে মাওবাদীদের মনে। ফলে আত্মসমর্পণেরও ঢল নেমেছে। এবছর এখনও পর্যন্ত আত্মসমর্পণ করেছেন ২১৬৭ জন মাওবাদী। যা সর্বকালীন রেকর্ড। রিপোর্টে আরও দাবি করা হয়েছে, গত ১০ বছরে বিভিন্ন রাজ্যে মোট আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীর সংখ্যা ৯৫৮৮।
শুধু তাই নয়, দ্রুত কমতে শুরু করেছে মাওবাদী অধ্যুষিত জেলার সংখ্যা। চলতি মাসের শুরুতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই সংসদে জানিয়েছিলেন, এই মুহূর্তে ছত্তিশগড়ের বস্তার ডিভিশনের সুকমা, বিজাপুর এবং নারায়ণপুর এই তিন জেলা 'অতি উপদ্রুত'। গোটা দেশে মোট মাওবাদী অধ্যুষিত জেলার সংখ্যা ১১টি। হিসেব তুলে ধরে মন্ত্রী আরও জানান, ২০১৮ সালে এই সংখ্যাটা ছিল ১২৬। ২০২১ সালে তা কমে দাঁড়ায় ৯০, ২০২৪ সালে ৭০ এবং ২০২৫ সালের এপ্রিলে ৩৮ থেকে অক্টোবরে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১১তে।
লাগাতার অভিযানে মৃত্যু হয়েছে মাওবাদী সাধারণ সম্পাদক নাম্বালা কেশব রাও ওরফে বাসবরাজু, পলিটব্যুরো সদস্য রামচন্দ্র রেড্ডি ওরফে চলপতি, তাঁর স্ত্রী রবি ভেঙ্কাটা লক্ষ্মী চৈতন্য ওরফে অরুণা, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুধাকর, টেক শঙ্কর, মাওবাদী গেরিলা বাহিনী পিএলজিএ-র প্রধান মাধবী হিডমা। একের পর এক শীর্ষ নেতা নেত্রীর মৃত্যু মাওবাদীদের সংগঠনকে ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে। মাওবাদীদের রেড করিডোরে সক্রিয় মাওবাদীর সংখ্যা কমে নেমে এসেছে দুশো তে। শুধু তাই নয়, ২০২৪ সালের তুলনায় ৮১ শতাংশ কমে গিয়েছে মাওবাদী হামলার ঘটনা।
