রাজা দাস, বালুরঘাট: সহকর্মীদের সঙ্গে প্রধান শিক্ষকের দুর্ব্যবহার ও নানা দুর্নীতির অভিযোগ তুলে স্কুলের গেটে তালা ঝুলিয়ে দিলেন গ্রামবাসীরা। প্রধান শিক্ষকের বদলির মধ্য দিয়ে পরিবেশ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত, পড়ুয়াদের স্কুলে পাঠাতে নারাজ অভিভাবকরা। দক্ষিণ দিনাজপুরের বংশীহারির গৌরীপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা।
[প্রাণ বাঁচাতে ঘরছাড়া বন্যাদুর্গতরা, ফাঁকা বাড়িতে অবাধ লুটপাট]
জানা গিয়েছে, ওই বিদ্যালয়ে মোট ৭ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা থাকলেও শুধুমাত্র প্রধান শিক্ষক রমেন্দ্র নাথ রায়ের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ গ্রামবাসীদের। বিষয়গুলি জানানোর পরও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা না নেওয়ায় বুধবার গ্রামবাসীরা একত্রিত হয়ে তালা মারে মূল গেটে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ২০১৩ সাল থেকে মিড-ডে মিলের দায়িত্ব পান। স্কুলে ৭০ জন ছাত্রছাত্রী থাকলেও ১৫০ জন দেখিয়ে মিড-ডে মিলে দুর্নীতি করছেন প্রধান শিক্ষক। এমনকি শিক্ষিকাদের গায়ে হাত দেওয়া-সহ অশ্লীল আচরণের অভিযোগও উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। এর আগে এই স্কুলের সহকারী শিক্ষক প্রদীপ দাসের সঙ্গে মারপিটের ঘটনা হয়। এমনকি এই স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার নিত্যদিনের ব্যাপার। কিছু বলতে গেলেই হুমকি দেন তিনি। কয়েকদিন আগে স্কুলের বই, লোহার সামগ্রী, ফ্যান ও অন্যান্য জিনিস বিক্রয় করে দেন বলে অভিযোগ।
[১০ টাকার নোট ছড়িয়ে ২০ হাজার টাকার কেপমারি! মালদহে চাঞ্চল্য]
গ্রামবাসী বিনয় রায় জানান, বিগত ৩-৪ মাস থেকে এমন ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। এই নিয়ে সহকর্মী এবং তাঁরা অভিভাবকরা প্রতিবাদও করেছেন। এরপরেই হুমকি দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। এদিকে পুরো বিষয়টি অবর প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক ও বিডিওকে স্কুলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এই প্রধান শিক্ষক স্কুলের ইট-বালি-পাথর থেকে রান্নার কাঠও নিয়ে চলে যান বাড়িতে। বহু দিন থেকে বন্ধ মিড-ডে মিলের খাবার। এই ঘটনা এসআইকে জানানো হয়েছে। তবে সমস্যার সমাধান হয়নি।
[স্ক্রুটিনির পর বদলে গেল ৭ হাজার মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর ফল]
সহকারী প্রধান শিক্ষক শুকুর আলি জানান, ২০১৩ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে আসেন রমেন্দ্রনাথ রায়। তিনি আসার পর থেকে একের পর এক সমস্যা লেগেই রয়েছে। এক শিক্ষককে মারধর করেন। সরকারি বিভিন্ন টাকা আত্মসাৎ করেন। অবর প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক মকসেদ আলম সরকার জানান, বিষয়টি জানামাত্র বিডিও থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। আলোচনা হয়েছে তাদের। খুব দ্রুত সমস্যার সুরাহা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। অন্যদিকে, অভিযোগ ওঠা প্রধান শিক্ষক রমেন্দ্রনাথ রায় কিছু বলতে চাননি।
