শুভময় মণ্ডল: ‘ভদ্রলোকের রাজনীতি’ চলবে না। নিজের অবস্থান একেবারে খুল্লামখুল্লা বলেই দিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি। রবিবার নৈহাটিতে অভিনন্দন যাত্রার পর সাহেব বাগান এলাকায় একটি জনসভায় যোগ দিয়ে দিলীপ ঘোষ স্পষ্টই বললেন, ”লিখে নিন, দিলীপ ঘোষ বলছে, ভদ্রলোকের রাজনীতি করতে আমরা আসিনি। ভদ্রলোকের রাজনীতি ছোটলোকদের সঙ্গে হবে না। আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে হলে, তৃণমূলকে মার খেতে হবে।” বুঝতে বাকি রইল না যে তিনি তৃণমূলের রাজনীতিকেই ‘ছোটলোকের রাজনীতি’ বলে অ্যাখ্যা দিলেন। তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে ফের তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
বিজেপি রাজ্য সভাপতির পদে দ্বিতীয়বার বসার পর আরও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছেন দিলীপ ঘোষ। রোজই কোনও না কোনও বিতর্কিত মন্তব্য করে বসছেন। আর সেই কুকথার রাজনীতিকেই যেন মূল অস্ত্র করে বাংলার মাটিতে শাসকদলের সঙ্গে লড়াইয়ে নেমেছে বিজেপি। দিলীপ ঘোষ আগেই নিদান দিয়েছিলেন, CAA বিক্ষোভে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট হলে গুলি চালিয়ে দেওয়া উচিত। এ নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠলেও নিজের মন্তব্যে অনড় ছিলেন তিনি। যতবারই এ নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছে, ততবারই সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ‘গুলি’ মন্তব্য নিয়ে তাঁর মনে কোনও দ্বিধাদ্বন্দ্ব নেই। তিনি যা মনে করেন, তাইই বলেছেন। এরপর বিরোধী এবং বুদ্ধিজীবীদের এক সারিতে বসিয়ে তাঁদের ‘মা-বাবার ঠিক নেই’, ‘পরজীবী’ – এ জাতীয় বেনজির মন্তব্য অবলীলায় করে ফেলেছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি।
[আরও পড়ুন: ফের মুর্শিদাবাদে শুটআউট, স্বর্ণ ব্যবসায়ী কাকার সঙ্গে বাড়ি ফেরার পথে জখম স্কুলছাত্র]
নৈহাটির সভাতেও তার ব্যতিক্রম ঘটল না। বুঝিয়েই দিলেন, রাজনীতিতে শালীনতা বজায় রাখার দায় তাঁর নেই। কারণ, দিলীপ ঘোষ মনে করেন যে প্রতিপক্ষ খুব ‘ভদ্র’ নয়। তাই তাঁদের সঙ্গে ‘ভদ্রলোকের রাজনীতি’ করারও কোনও প্রয়োজন নেই। আর নির্দ্বিধায় সে কথা জনসভা থেকে ঘোষণা করে দিতেও পিছপা হননি তিনি। নাহলে কি এতটা খোলাখুলি বলতে পারতেন, ‘ভদ্রলোকের রাজনীতি করতে আমরা আসিনি’? রবিবারের সভা থেকে তিনি এও বললেন, ”আমরা মারও খাব, মামলাও হবে আমাদের বিরুদ্ধে, এতটা ভাল হওয়ার কিছু নেই। আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করলে, আপনাদের মারটা খেতে হবে।”
[আরও পড়ুন: নেই বৃষ্টির সম্ভাবনা, আগামী ২-৩ দিনে ফের কমতে পারে তাপমাত্রার পারদ]
এদিনও তিনি ‘গুলি’ মন্তব্যে অনড় থেকে তার ব্যাখ্যা দিলেন। এ বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তাঁর জবাব, ”আমি কেন, এখানে ১০ হাজার মানুষ বলছে যে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করলে গুলি করে মারা উচিত। দেশের লোক তাই চায়। যে বিরোধীরা সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করছে, তাদের কী যায় আসে? গরিব মানুষের করের টাকা ওরা এভাবে লুটে খাচ্ছে।” আগামী বিধানসভাতেও তৃণমূলকে কড়া টক্কর দেওয়ার চ্যালেঞ্জ দিয়ে রাখলেন দিলীপ ঘোষ।
শুনুন দিলীপ ঘোষের বক্তব্য:
The post ‘ভদ্রলোকের রাজনীতি করতে আসিনি’, জনসভা থেকে খোলাখুলি হুঁশিয়ারি দিলীপ ঘোষের appeared first on Sangbad Pratidin.
