নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: দিল্লিতে দাঁড়িয়ে বাংলার বঞ্চনা নিয়ে ফের সরব অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তাঁর সাফ দাবি, ‘বাংলাকে সবাই বঞ্চিত করেছে।’ স্বাভাবিকভাবে তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে জল্পনা শুরু হয়েছে। তবে কি কংগ্রেস জমানা অর্থাৎ ইউপিএ ১ (UPA 1) এবং ২ (UPA 2) আমলেও বাংলাকে বঞ্চনা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক? উঠছে প্রশ্ন।
কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে রাজঘাটে ‘সত্যাগ্রহ’ করে তৃণমূল। মাঝপথে লাঠি উঁচিয়ে সেই ‘সত্যাগ্রহ’ তুলে দেয় দিল্লি পুলিশ। এর পর মহাত্মা গান্ধীর সমাধিস্থল রাজঘাটে সাংবাদিক সম্মেলন করেন অভিষেক। তবে তাও মাঝপথে থামিয়ে দিতে হয় তাঁকে। সাংবাদিক সম্মেলনে কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে বলতে গিয়ে অভিযোগ করেন, “১৯১১ সালে দেশের রাজধানী বাংলা থেকে তুলে দিল্লিতে নিয়ে এসেছিল ইংরেজ সরকার। এরপর থেকে কেন্দ্রের সব সরকারই বাংলাকে বঞ্চনা করেছে।” তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে।
[আরও পড়ুন: তৃণমূলের অভিযানের মাঝেই দিল্লিতে ‘বঞ্চিত’ চাকরিপ্রার্থীরা, যন্তরমন্তরের পর আন্দোলন রাজঘাটে]
উল্লেখ্য, বাংলার পূর্বতন বাম সরকার বারবার কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ তুলত। কিন্তু সেই অভিযোগ সর্বৈব মিথ্যা বলে দাবি করতেন তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। কিন্তু এদিন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কার্যত বামেদের সেই অভিযোগেই সিলমোহর দিলেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ২০১১ সালে যখন রাজ্যে ক্ষমতার পরিবর্তন হয় সেইসময় কেন্দ্রে ইউপিএ-২ সরকার। ২০১১-২০১৪ সাল পর্যন্ত তবে কি কেন্দ্রের কাছ থেকে কোনওরকম সহযোগিতা পায়নি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার? উঠছে প্রশ্ন। তবে তাঁর এই মন্তব্যের অন্য রাজনৈতিক তাৎপর্য রয়েছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
বিজেপি বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের শরিক তৃণমূলও। মোদির বিরুদ্ধে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করছে হাত ও ঘাসফুল শিবির। জোট ধর্ম মেনে কংগ্রেস বাংলায় তৃণমূলের প্রতি নরম মনোভাব দেখাচ্ছে বলে প্রদেশ নেতৃত্বের অন্দরের খবর। অথচ রাজঘাটে দাঁড়িয়ে নাম না করে সেই জোটসঙ্গী কংগ্রেসকেই নিশানা করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক? এর পরও কি চুপ থাকবে হাত শিবির? যদি তারা পালটা সরব হয়, তবে ইন্ডিয়া জোটের ভবিষ্যতও কি?জোটসঙ্গীদের আক্রমণ, পালটা আক্রমণের জেরে শেষপর্যন্ত দুর্বল হবে বিজেপি বিরোধী জোটই? প্রশ্ন অনেক, তবে সব উত্তর রয়েছে কালের গর্ভে।