বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: মাস শেষে তিনদিন কলকাতায় কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক। ভারত জোড়ো যাত্রার শেষদিন কাশ্মীরে বিজেপি বিরোধী দলের সভা এড়িয়ে যাওয়ার জুতসই অজুহাত সিপিএমের! গুরুত্বপূর্ণ এই বৈঠকের কারণে শীর্ষ নেতৃত্ব হাজির থাকতে পারবে না। এমনই সিদ্ধান্ত কমরেডকুলের নেতাদের। রাহুলের ভারত জোড়ো যাত্রা এড়িয়ে যেতে ঠিক ওইদিনই সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক করছে বলে মনে করছে দিল্লির আকবর রোডের কংগ্রেস সদর দপ্তরের কর্তারা। তবে বিজেপি বিরোধী জোটের ঐক্যের কথা ভেবে সিপিএম প্রতিনিধি পাঠাবে বলে আশায় বুক বেঁধেছে কংগ্রেস।
৩০ জানুয়ারি কাশ্মীরে ভারত জোড়ো যাত্রা শেষ হবে। ওইদিন বিজেপি বিরোধী সব দলকে হাজির হওয়ার আবেদন জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। খোলা চিঠি লেখেন রাহুল গান্ধী। ইতিমধ্যেই ওইদিন থাকার সম্মতি জানিয়েছে এনসিপি, উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা, এডিএমকে, সিপিআই, আরজেডি, ন্যাশনাল কনফারেন্স, সমাজবাদী পার্টি। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাকে নিশ্চুপ সিপিএম (CPM)।
[আরও পড়ুন: স্রেফ রাইফেলের বাট দিয়ে ৩ সশস্ত্র ডাকাতকে নাস্তানাবুদ! ভাইরাল দুই বীরাঙ্গনা কনস্টেবলের ভিডিও]
যেখানে সংসদের ভিতরে ও বাইরে কংগ্রেস কোনও বৈঠক ডাকলেই সিপিএমের প্রতিনিধি হাজির থাকেন সেক্ষেত্রে ভারত জোড়ো যাত্রায় সিপিএমের অবস্থান ভাবাচ্ছে কংগ্রেসকে। কারণ রাহুল গান্ধীর সঙ্গে ইয়েচুরির সম্পর্ক অত্যন্ত মধুর। কেরল বাদ দিয়ে যে রাজ্যেই সিপিএমের সংগঠন আছে সেখানে হাতে হাত মেলাতে এক মিনিটও ভাবেন না কমরেডকুলের নেতারা। ত্রিপুরাতেও কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। আসন বণ্টন নিয়ে দু’তরফে কথা শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ভারত জোড়ো যাত্রা কেন সিপিএম এড়িয়ে যাচ্ছে তা নিয়ে জল্পনা চলছে কংগ্রেসের অন্দরে।
সিপিএমের যুক্তি, ২৯ থেকে ৩১ তারিখ কলকাতায় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক রয়েছে। শীর্ষনেতারা সকলেই কলকাতায় থাকবেন। কাশ্মীরের একমাত্র সিপিএম বিধায়ক কুলগামের ইউসুফ তারিগামীও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হওয়ায় কলকাতায় থাকবেন। ফলে শীর্ষনেতাদের পক্ষে ভারত জোড়ো যাত্রার শেষদিনে থাকা কার্যত অসম্ভব বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্য। তবে শেষ মুহূর্তে ইউসুফ তারিগামীকে পাঠান হতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তবে সবটাই নির্ভর করছে ২৯ জানুয়ারি পলিটব্যুরোর বৈঠকের ওপর।
[আরও পড়ুন: ‘বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চায় ভারত, কিন্তু…’, পাকিস্তানকে বার্তা দিলেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র]
তবে সিপিএমের এই যুক্তি মানতে নারাজ এআইসিসি। কংগ্রেসের যুক্তি, ভারত জোড়ো যাত্রার দিনক্ষণ অনেক আগেই প্রকাশ করে দেওয়া হয়েছিল। তারপরও ঠিক ৩০ জানুয়ারি বৈঠক করা মানে এড়িয়ে যাওয়ার কৌশল। তবে যেহেতু বিজেপি বিরোধিতার ক্ষেত্রে সিপিএম সর্বত্র কংগ্রেসের পাশে থাকে তাই প্রকাশ্যে মন্তব্য করা থেকে নীরব থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেস।