পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই প্রধান আসিম মালিকের বাংলাদেশ সফরে স্পষ্ট ভারতবিরোধী কার্যকলাপের অশনি।
বাংলাদেশে তিনদিনের সরকারি সফর সেরে গেলেন পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা অাইএসঅাই প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিম মালিক। সদ্য পাকিস্তান সফর করে এসেছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছ’জন কর্তাও। মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের অামলে বাংলাদেশ উদ্যোগী হয়েছে ভারত বিরোধিতার জন্য পাকিস্তানের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ গড়ে তুলতে। ইউনূসকে সামনে রেখে বাংলাদেশের বর্তমান সরকার পরিচালনা করছে পাকপন্থী ও মুক্তিযুদ্ধ-বিরোধী শক্তি। এই শক্তির সুপ্ত মনোবাঞ্ছা হল স্বাধীন বাংলাদেশকে ফের পাকিস্তানের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া। পাকিস্তানও এই সুযোগ পুরোমাত্রায় গ্রহণ করতে আগ্রহী।
বস্তুত ভারতের উপর বাংলাদেশ যুদ্ধে পরাজয়ের বদলা নিতে গত ৫০ বছর ধরেই পাকিস্তান সচেষ্ট। পাকিস্তানের সরকার এবং বাংলাদেশের পাকপন্থী মৌলবাদী শক্তি হাত মিলিয়ে যেভাবে ভারতবিরোধী যড়যন্ত্রের ছক তৈরি করতে শুরু করেছে তাতে অার নয়াদিল্লির পক্ষে হাত গুটিয়ে বসে থাকা বিচক্ষণতার কাজ হবে না। ভারতের বিদেশমন্ত্রকের অাধিকারিকরা তঁাদের ইস্পাত-দৃঢ় মানসিকতা নিয়ে বাংলাদেশের ঘটনাবলি পর্যবেক্ষণ করছেন। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে গত প্রায় ছ’মাস ধরে যেসব প্ররোচনা দেওয়া হচ্ছে তাতে নয়াদিল্লি উত্তেজিত বোধ করছে না। সময় হলে ঠিকই নয়াদিল্লি পদক্ষেপ করবে। বাংলাদেশের মাটিতে পাকিস্তানের তৎপরতা দেখে মনে হচ্ছে নয়াদিল্লির সামনে সেই সময় উপস্থিত হয়েছে।
সংবাদে প্রকাশিত, বাংলাদেশ সফরে এসে অাইএসঅাই প্রধান ও পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থার অন্যান্য পদাধিকারীরা বিভিন্ন ভারতবিরোধী শক্তির সঙ্গে বৈঠক সেরেছেন। চট্টগ্রামে পরেশ বরুয়ার নেতৃত্বাধীন অালফা (স্বাধীন) গোষ্ঠীর কয়েকজন জঙ্গি নেতার সঙ্গেও অাইএসঅাই কর্তাদের বৈঠক হয়েছে বলে খবর। ভারতবিরোধী কার্যকলাপ পরিচালনার জন্য বাংলাদেশে ইতিমধে্য অাইএসঅাইয়ের একটি ঘঁাটি গড়ে উঠেছে, খবর। অালফা (স্বাধীন)-র মতো জঙ্গি গোষ্ঠীগুলিকে এক ছাতার তলায় এনে অাইএসঅাই চেষ্টা করবে তাদের এই ঘঁাটি থেকে ভারতে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চালাতে। অাইএসঅাইয়ের দীর্ঘদিনের টার্গেট শিলিগুড়ি করিডোর তথা “চিকেন’স্ নেক”-এর দখল নেওয়া। সফল হলে গোটা উত্তর-পূর্ব ভারতকে তারা বিচ্ছিন্ন করে দিতে পারবে। বিস্তর টাকা ছড়িয়ে উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনগুলিকে কাজে লাগিয়ে অাইএসঅাই বাংলাদেশের নিরাপদ ঘঁাটিতে বসে এই কাজে যে ইতিমধে্য হাত লাগিয়েছে তা অাসিম মালিকদের ঢাকা সফর থেকে স্পষ্ট।
শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশে থাকা অাইএসঅাইয়ের মদতপুষ্ট ভারতবিরোধী জঙ্গি ঘাঁটিগুলো ধ্বংস করেছিলেন। উনি সমনদে নেই। এবার ভারতকেই উদে্যাগী হতে হবে অাইএসঅাইয়ের বাংলাদেশি ঘঁাটিগুলো অঙ্কুরেই বিনষ্ট করার। এই কাজে যত দেরি হবে তত ভারতের বিপদ।
