shono
Advertisement

Breaking News

Indian Army

কর্নেল সোফিয়া কুরেশি ‘সন্ত্রাসবাদীদের বোন’! জনপ্রতিনিধির এমন কুরুচিকর মন্তব্য চূড়ান্ত হতাশাজনক

যে-দল ধর্মীয় পরিচয়কে মাপকাঠি ধরেই বিভাজনের রাজনীতি করতে অভ্যস্ত, তাদের কাছ থেকে এ-মন্তব্য অপ্রত্যাশিত নয়।
Published By: Biswadip DeyPosted: 02:04 PM May 16, 2025Updated: 02:04 PM May 16, 2025

যে সেনাবাহিনীর হাতে দেশের সুরক্ষা ন‌্যস্ত, তারা দেশের নেতার কুরুচিকর মন্তব্যের শিকার। জনপ্রতিনিধির এমন আচরণ হতাশাজনক।

Advertisement

যে ‘দ্বিজাতি তত্ত্ব’-র ভিত্তিতে দেশভাগ হয়েছিল, সেনাবাহিনী ও জঙ্গিদের উসকানি দিতে যে তত্ত্বকে হাতিয়ার করেছিলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির, সেই তত্ত্বকেই কার্যত সিলমোহর দিলেন বিজেপির এক নেতা। সম্প্রতি, মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী বিজয় শাহ কর্নেল সোফিয়া কুরেশি-র প্রশংসা করতে গিয়ে কার্যত তঁাকে ‘অপমান’ করে বসলেন! যে সৈনিক সগর্বে ঘোষণা করছেন, তিনি ভারতীয় এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ধর্মীয় পরিচয় নিয়ে কোনও বিভেদের জায়গা নেই– সেই সোফিয়ার ধর্মীয় পরিচয় তুলে ধরে কার্যত সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে একাসনে বসিয়ে দিয়েছেন ওই বিজেপি নেতা। কর্নেল সোফিয়া কুরেশিকে কার্যত ‘সন্ত্রাসবাদীদের বোন’ বানিয়ে ছাড়লেন তিনি!

স্বাভাবিকভাবেই এই বক্তব্যকে ‘অশালীন, নোংরা ও অপমানজনক’ বলে উল্লেখ করে মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিতভাবে পদক্ষেপ করে এফআইআরের নির্দেশ দেয়। পালটা সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেও লাভ হয়নি। প্রধান বিচারপতি বি. আর. গাভাইয়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ মন্ত্রীকে কার্যত তুলোধোনা করে বলে– ‘একজন সাংবিধানিক পদে থাকা ব্যক্তির কাছ থেকে দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশিত। এ কী ধরনের মন্তব্য? একজন মন্ত্রীর কাছ থেকে এ ধরনের বক্তব্য কি গ্রহণযোগ্য?’

সাধারণ দৃষ্টিতে জনপ্রতিনিধির কাছ থেকে এমন মন্তব্য হতাশাজনক। কিন্তু এক্ষেত্রে অবাক হওয়ার তেমন অবকাশ নেই। কারণ যে-দলটি ধর্মীয় পরিচয়কে মাপকাঠি ধরেই মেরুকরণ ও বিভাজনের রাজনীতি করতে অভ্যস্ত, তাদের কাছ থেকে এ-মন্তব্য অপ্রত্যাশিত নয়। অতীতেও বিভিন্ন সময়ে বিজেপি ও সংঘ-ঘনিষ্ঠ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃত্ব সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নানা সময় বিষোদ্গার করেছেন।

ভারতের মতো বৈচিত্রপূর্ণ দেশে একমাত্রিক সমাজ কোনওভাবেই সম্ভব নয়। কিন্তু ‘হিন্দু রাষ্ট্র’ গঠনের স্বপ্নে বিভোর গেরুয়া শিবির বারবার সে-কথা ভুল প্রমাণ করার চেষ্টা করে। স্বাভাবিকভাবেই আন্তর্জাতিক মহলে বার্তা পৌঁছে যাচ্ছে, ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতা বিপন্ন। সংখ্যালঘুদের ‘দ্বিতীয় শ্রেণি’-র নাগরিক বানানোর চেষ্টা চলছে– এমন বার্তাও প্রতিবেশী বৈরী দেশের হাত শক্ত করছে। দেশে সম্প্রীতি বিপন্ন হলে ক্ষোভের আগুনে জঙ্গি তৎপরতাও শঁাসে-জলে আরও বৃদ্ধি পাবে। দেশের উন্নয়নে সংখ্যালঘু নানা সম্প্রদায়ের হাজার, লক্ষ মানুষের অবদানও এতে অস্বীকার করা হয়।

স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, নেতা-মন্ত্রীদের ভূমিকা নিয়ে। তঁাদের বক্তব্যের জেরে দীর্ঘ দিনের প্রতিবেশীদের মধ্যে সন্দেহের বীজ অঙ্কুরিত হওয়া এখন সময়ের অপেক্ষা। পরিশেষে, দেশের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা সেনাবাহিনীকে নিয়ে অসংবেদনশীল ও অপমানজনক মন্তব্য যে কতখানি বিপজ্জনক, সেটা বোধহয় বোঝার সময় হয়েছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী বিজয় শাহ কর্নেল সোফিয়া কুরেশি-র প্রশংসা করতে গিয়ে কার্যত তঁাকে ‘অপমান’ করে বসলেন!
  • কর্নেল সোফিয়া কুরেশিকে কার্যত ‘সন্ত্রাসবাদীদের বোন’ বানিয়ে ছাড়লেন তিনি!
  • সাধারণ দৃষ্টিতে জনপ্রতিনিধির কাছ থেকে এমন মন্তব্য হতাশাজনক। কিন্তু এক্ষেত্রে অবাক হওয়ার তেমন অবকাশ নেই আসলে।
Advertisement