সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ছোট পরিসরে গল্প বলা নাকি সবচেয়ে কঠিন। কোনও গল্পকে সময়ের কাঁটায় ফেলে দিলে, সে গল্প অনেক সময় নিজের মতো করে এগোতে পারে না। তবে নেটফ্লিক্সের (Netflix) নতুন অ্যান্থলজি ‘আনকহি কাহানিয়া’কে (Ankahi kahaniya) যদি বেশি পরিসর দেওয়া হত, তাহলে হয়তো এগোতেই পারত না! তিনটে গল্প, তিনটেই প্রেমের। তবে এমন প্রেমের গল্প যেখানে তথাকতিথ মিলন বা বিচ্ছেদ নেই। বরং এ গল্প এমন জায়গায় গিয়ে শেষ হয়, যেখান থেকে হতে পারে নতুন শুরু!
এক ম্য়ানিকুইনের প্রেমে পড়ে যায় প্রদীপ (অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়)। কাজের ফাঁকে ম্যানিকুইনের সঙ্গে কথা বলে, লুডো খেলে, নাচ করে। সিসিটিভিতে সে ছবি ধরা পড়লে চাকরিও যায় প্রদীপের। তবুও প্রেম যায় না। ছোটবেলার বান্ধবির সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয়। তবুও ভুলতে পারে না সেই পুতুল প্রেমিকাকে। ফিরে আসে তাঁর কাছে। তারপর… এখানেই শেষ হয়ে যায় ‘আনকহি কাহানিয়া’র প্রথম প্রেমের গল্প। অভিনয়ের দিক থেকে এই গল্পকে একা কাঁধে নিয়ে এগিয়ে যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে দেখতে হয় তাঁর অভিনয়। তবে গল্প তাল কাটে শেষ দৃশ্যের সংলাপে। একটু যেন বেশিই বলে দেন পরিচালক অশ্বিনী আইয়ার তিওয়ারি। দর্শকের ভাবনাকে উর্বর করেন না।
[আরও পড়ুন: বাদল সরকারের ‘বাকি ইতিহাস’ নাটক কি ‘শহরের উপকথা’ ছবিতে ফুটিয়ে তোলা গেল?]
এই অ্যান্থলজিতে সেরাটা দিয়েছেন পরিচালক অভিষেক চৌবে। কন্নড় লেখক জয়ন্ত কৈকিনীর ‘মধ্যান্তর’ গল্প অবলম্বনে অভিষেকের এই ছবি। অভিনয় করেছেন জনপ্রিয় মারাঠি ছবি ‘সাইরাত’-এর অভিনেত্রী রিঙ্কু রাজগুরু (মঞ্জুরি) এবং দেলজাদ হিওয়ালে (নন্দু)। সিনেমাহলে চাকরি করে নন্দু। টিকিটে স্ট্য়াম্প দেয়, সিঙাড়া বিক্রি করে,বাথরুম পরিষ্কার করে। অন্যদিকে মঞ্জুরি পরিবারে বেশ অবহেলিত। নিজের মতো এমব্রয়ডারি করে, টাকা রোজগার করে সেই টাকায় সিনেমা দেখে। এই সিনেমার সূত্র ধরেই নন্দু ও মঞ্জুরির চার চোখ এক হয়ে যায়। প্রেম শুরু হয়। হঠাৎ করে দুজনে বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। গল্প এগিয়ে চললেও, প্রেম যেন থমকে যায়। দুজনের প্রেম মাখা চোখ পালটাতে শুরু করে…অদ্ভুত এক জায়গায় গিয়ে শেষ হয় এই প্রেমের গল্প, যা কিনা চমকে দেওয়ার মতো! অভিনয়, গল্প বলার ধরন সবই যেন নিখুঁত। এমনকী, পুরো অ্য়ান্থলজি শেষ হয়ে গেলেও, এই গল্পই মাথায় ঘুরপাক খায়।
‘আনকহি কাহানিয়া’র তৃতীয় গল্পটি অপেক্ষাকৃত সহজসরল ভঙ্গিতে এগোয়। উপস্থাপনাও অনেক বেশি ঝকঝকে। দাম্পত্য, প্রেম, পরকীয়া, বিরহের মতো পুরনো ছকেই এগোতে থাকে এই অ্যান্থলজির শেষ গল্প। এই গল্পে অভিনয়ে জোয়া হুসেন, কুণাল কাপুর, নিখিল দ্বিবেদী, পালোমি নজর কাড়লেও গল্পে তেমন জোর থাকে না। এটি পরিচালনা করেছেন সাকেত চৌধুরী।
শেষমেশ বলা চলে, এই অ্য়ান্থলজি খুব ধীম গতিতে এগোলেও, প্রেমকে নতুন করে দেখতে শেখাবে। ভাবনাকে উসকে দেবে ‘আনকহি কাহানিয়া’।