shono
Advertisement

Bijoyar Pore Review: একাকীত্বের বিষাদ সিন্ধু ‘বিজয়ার পরে’, মন ছুঁতে পারল স্বস্তিকা-মমতা শঙ্করের ছবি?

আত্মযন্ত্রণায় কাতর এক দম্পতির কথা ও কাহিনি নিয়ে চিত্রনাট্য সাজিয়েছেন নবাগত পরিচালক।
Posted: 02:13 PM Jan 13, 2024Updated: 02:13 PM Jan 13, 2024

চারুবাক: এখনকার সময়ে বার্ধক্য একটি বড় রকমের ব্যাধি। বিশেষ করে সন্তান-সন্ততি যদি কাছে না থাকে, তাহলে বৃদ্ধ বাবা-মায়ের অবস্থা হয় নিদারুণ। অসুস্থ হলে তো বটেই, না হলেও একাকীত্বের যন্ত্রণা আরও বেশি গভীর হয়ে গেঁথে বসে হৃদয়ে। আত্মজাদের সঙ্গহীন জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। তারও পর জমে অভিমান। সেই অকথিত অনুচ্চারিত ব্যথা-বেদনা শেয়ার করতে না পারার যন্ত্রণা আরও বেশি করে চাপ দেয় বুকে। এমনই এক আত্মযন্ত্রণায় কাতর দম্পতির কথা ও কাহিনি নিয়ে ‘বিজয়ার পরে’র চিত্রনাট্য সাজিয়েছেন নবাগত পরিচালক অভিজিৎ শ্রীদাস।

Advertisement

বিষয়ের দিক থেকে অভিনব তেমন কিছু না হলেও অভিজিৎ বৃদ্ধ দম্পতির একাকীত্বের বেদনাকে ধরতে চেয়েছেন। সেটাইবা এখনকার বাংলা সিনেমার ক’জন করেন! সেদিক থেকে ‘বিজয়ার পরে’ (Bijoyar Pore) নিঃসন্দেহে একটি অভিনন্দনযোগ্য প্রচেষ্টা। আরও বেশি সাবাশি দেওয়া যেত যদি চিত্রনাট্য ও পরিচালনার কাজে মনোযোগের পরিচয় পাওয়া যেত। সেটা প্রায় নেইই বলা যায়। বৃদ্ধ দম্পতির বিশাল বাড়িতে বার্ষিক দুর্গাপুজো হয়ে থাকে, সেই সময় প্রবাসী বা দূরে থাকা ছেলে-বউমা, মেয়ে-জামাই, নাতি, নাতনিরা ঠাম্মি-দাদুর কাছে আসে – এ পর্যন্ত ঠিক। কিন্তু গোল বাধে যখন দেখা যায় না অত বড় বাড়িতে পুজোর জোগাড় কোন ভূতে করছে। বাড়ির বৃদ্ধ মালিক অসুস্থ হয়ে পড়লে কে বা কারা তাঁর দেখভাল করে?
ছবির শুরু শুভ মহালয়ার সকালে মহিষাসুরমর্দিনী পাঠ দিয়ে! বেশ ভালো। কিন্তু, তারপর পুজোর বাকি কাজ কে বা কারা করছে? দশমীর সকালে বাড়ির কর্ত্রী পুজোর কাজ করলেন, তারপরই তাঁর গালে সিঁদুর লাগলো কী করে? সিঁদুর খেলা তো হয় বিকেলে বিসর্জনের আগে! সারাটা দিন তিনি ওই সিঁদুর মাখা গাল নিয়ে ছেলে-মেয়ে, জামাই-বউমাদের দেখভাল করলেন একাই! বাড়িতে আর কেউ নেই? যে নাতি জানালো পুজোর দিন সকালে স্টার্ট করে পরের দিন সকালেই বাড়ি আসবে, সে এল দশমীর বিকেলে! পুজোর চারটে দিন কেউই এল না? সবাই কি বিজয়া করতেই এসেছিল তাহলে? কিন্তু চিত্রনাট্যে তেমন কিছু বলা হয়নি।

[আরও পড়ুন: একের পর এক টুইস্টে ভরা ‘মেরি ক্রিসমাস’, ক্যাটরিনা-বিজয়ের জুটি ধরায় নতুনত্বের নেশা]

এর পরও রয়েছে কনটিনিউটির অজস্র চাপানউতোর। কোন চরিত্র কোন পরিস্থিতিতে কেমন রিঅ্যাক্ট করছে তার কোনও কার্যকারণ বোঝা মুশকিল! অসুস্থ বাবা ভেতরের ঘরে একা রইলেন, কিন্তু কেউ তাঁকে দেখতে গেল না, এমনকী আত্মজনের প্রায় কেউই একটিবারের জন্য মাকে প্রশ্নও করল না বাবার কী হয়েছে? অথচ এখান থেকেই মূল নাটকের শুরু। এবং সেই পর্যায়টি এতটাই দীর্ঘ যে দর্শকের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে পড়ে। চিত্রনাট্যকার অন্যরকমভাবে সাজাতে পারতেন এই পর্বটি। বাবার অসুস্থতা ঢাকতে মাকে বারবার মিথ্যার আশ্রয় নিতে হতো না তাহলে। পরিচালক হয়তো ভেবেছেন – এভাবেই দর্শকের সহানুভূতি পাবেন, বরং উলটোটাই ঘটেছে। বৃদ্ধা দম্পতির একাকীত্বের বিষাদ সিন্ধু দর্শকের কাছে বিরক্তিকর অভিজ্ঞতা হয়ে উঠেছে।

আসলে, সিনেমা-ভাবনার দৈন্যতাই এজন্য দায়ী। রণজয় ভট্টাচার্যের রবীন্দ্র গান বা আধুনিক গানের ব্যবহার কোনও কাজেই লাগলো না। এমনকী, মমতা শঙ্কর, দীপঙ্কর দে, মীর আফসার আলি, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়দের বেশ মনোযোগী অভিনয়ও অপাত্রে পড়ল। এঁরা প্রচুর পরিশ্রম করলেন, কিন্তু দুর্বল চিত্রনাট্য ও নড়বড়ে পরিচালনায় সবটাই হল পন্ডশ্রম। এমনকী মিশকা হালিম, বিদিপ্তা চক্রবর্তী, ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়, খেয়া – কেউই চরিত্র হয়ে উঠতেই পারলেন না।

সিনেমা – বিজয়ার পরে
অভিনয়ে – মমতা শঙ্কর, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, দীপঙ্কর দে, মির আফসার আলি, মিশকা হালিম, বিদিপ্তা চক্রবর্তী, ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়, খেয়া চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ
পরিচালনা – অভিজিৎ শ্রীদাস

[আরও পড়ুন: বিতর্কে মোড়া জীবন! এবার সিনেপর্দায় মাইকেল জ্যাকসনের বায়োপিক]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement