অভিষেক চৌধুরী, কালনা: কৃষকদের সুবিধার কথা ভেবে বাংলায় প্রথম ব্যবহার শুরু হল ন্যানো বা তরল ইউরিয়ার (Liquid Urea)। এই প্রকল্পের সূচনা করেন রাজ্যের প্রাণীসম্পদ উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। পূর্বস্থলী ১ ব্লকের কিষাণ মাণ্ডিতে এলাকায় বুধবার ভারচুয়াল অনুষ্ঠানে এর সূচনা হল। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হতেই গুজরাটের ইফকোর প্ল্যান্ট থেকে একটি ট্রাকও বের হয় বাংলায় আসার উদ্দেশে। অন্যদিকে, ভারচুয়াল এই অনুষ্ঠানে দুর্গাপুর থেকে এই বিষয়ে বক্তব্য রাখেন রাজ্য সরকারের কৃষি উপদেষ্টা তথা বিধায়ক প্রদীপ মজুমদার।
বস্তা-বস্তা ইউরিয়া আর নয়। অল্প স্প্রে করেই চাষের জমির উর্বরতা বজায় রাখা সম্ভব। এমনই ইউরিয়াকে বলা হচ্ছে ন্যানো ইউরিয়া (তরল)। আর এই ইউরিয়া ব্যবহার করে লাভবান হবেন চাষিরা। কালনা মহকুমা কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্বস্থলী এলাকায় ভারচুয়াল ওই অনুষ্ঠানের বাংলায় তার ব্যবহার আনুষ্ঠানিক সূচনা করা হয়। চাষি তাঁর চাষের কাজে নাইট্রোজেন ঘটিত সার ইউরিয়া আকারে এতদিন মাটিতে প্রয়োগ করে এসেছেন। আর তার ফলে যে পরিমাণ সারের প্রয়োজন পড়ত, এই তরল ইউরিয়া সার তুলনায় কম পরিমাণ লাগবে। অর্থাৎ দানা ইউরিয়ার প্রয়োগে যে পরিমাণ সারের প্রয়োজন হত ন্যানো ইউরিয়াতে তার প্রয়োজন অনেকটা কমবে। দানা ইউরিয়া ৪০-৪৫ শতাংশ কাজে দেয়, বাকিটা নষ্ট হয়। কিন্তু ন্যানো ইউরিয়ার কার্যকারিতা ৮০ শতাংশ।
[আরও পড়ুন: প্রাণীখাদ্য তৈরি-সহ প্রোটিনের জোগানে অ্যাজোলা চাষে জোর, বৈঠক সারলেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ]
এই তরল ইউরিয়া সার মাটিতে নয়, সরাসরি এইবার গাছের পাতায় প্রয়োগ করবেন চাষিরা। তার ফলে যে পরিমাণ সার মাটিতে পড়ে নষ্ট হতো, এখন আর তা হবে না বলেই দাবি কৃষি দপ্তরের। এই সারের প্রয়োগে মাটির স্বাস্থ্য যেমন ভাল থাকবে, তেমনই তার উর্বরতাও বজায় থাকবে। অন্যদিকে পরিবেশ দূষণও কম হবে। তাই মাটিতে রাসায়নিক সারের প্রয়োগ কমিয়ে এই তরল ইউরিয়া সার গাছের পাতায় স্প্রে করলে গাছের যেমন বৃদ্ধি হবে, তেমনই ফলনও বাড়বে বলে। জানিয়েছেন কালনা মহকুমার সহ কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষ। তিনি বলেন, “নাইট্রোজেন ঘটিত এই সার বাংলায় এই প্রথম এল। সরাসরি এই সার গাছে দেওয়ায় আশি শতাংশ কাজ হবে। ফলে কম সার প্রয়োগেই অনেক বেশি কাজ হবে। এতে কৃষকের যেমন লাভ তেমনই গাছের বৃদ্ধি ও ফলনও বেশ ভাল হবে।” মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, “ইফকো ন্যানো ইউরিয়া (তরল) এই সার প্রয়োগে কৃষক লাভবান হবেন। মাত্র পাঁচশো গ্রাম তরল ইউরিয়া সারে এক বস্তা ইউরিয়ার সমান কাজ হবে।”