সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেয়া শেঠ বহুদিন ধরেই প্রসাধনী দ্রব্যের পাশাপাশি নিজস্ব ব্র্যান্ডে গয়না এবং শাড়ি বিক্রি করছেন। বিবিধ অনুষ্ঠান অনুযায়ী কেনাকাটায় নানা ছাড়ও দেওয়া হয়। সেই ‘কেয়া শেঠ এক্সক্লুসিভ’ কালেকশন থেকে শাড়ি কেনার পর শতরূপা সান্যাল সম্প্রতি অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর কেনা ব্যোমকাই নকল। যার জেরে নেটপাড়াতেও চর্চার অন্ত নেই! এবার সেই প্রেক্ষিতেই পালটা প্রশ্ন তুললেন কেয়া শেঠ। তাঁর মন্তব্য, "তসর ব্যোমকাই অর্ডার করেছিলেন, সেটাই পেয়েছেন, নকল শাড়ির অভিযোগ উঠছে কেন?"
পরিচালক শতরূপা সান্যালের 'নকল' অভিযোগের বিরুদ্ধে কেয়া শেঠের জবাব, "উনি যে শাড়িটা অর্ডার করেছিলেন, সেটা তসর ব্যোমকাই, ডেসক্রিপশনেই সেটা দেওয়া হয়েছে। এবং শাড়ির ছবির নিচে এও উল্লেখ করা রয়েছে যে, এই প্রোডাক্ট 'নন সিল্ক'। শতরূপার অর্ডার করা শাড়িটিও তাই ছিল। এটা তো সাইটেই পরিষ্কার করে লেখা। আনুষঙ্গিক যেসমস্ত বিবরণ দরকার সবটাই সেখানে লেখা। এবং তিনি সেটা দেখেই নিশ্চয়ই অর্ডার করেছেন। তাহলে কেন, নকল শাড়ি বিক্রির অভিযোগ উঠছে?", প্রশ্ন তুললেন কেয়া শেঠ।
শতরূপা সান্যাল তাঁর অ্যাকাউন্টে লেখেন, "নানা কারণে মন ভালো নেই। শরীরটাও যেন বিদ্রোহ করছে। এর মধ্যে কেউ যখন বোকা বানিয়ে, ডাহা ঠকিয়ে যায়, তখন কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে পড়ে।" তার পালটা কেয়া শেঠের মন্তব্য, "আজকের এই কঠিন সময়ে দাঁড়িয়ে মন সায় দিচ্ছে না, এই বিষয়ে কথা বলতে। কিন্তু কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে কারও গায়ে কাদা ছেটানোর চেষ্টা করে, সেখানে উত্তর দিতেই হয়। মন ভালো থাকুক বা না থাকুক।"
শতরূপা সান্যাল অভিযোগ তুলেছিলেন, "কিছু নামী-দামি কোম্পানির জিনিসও কিনেছি যথেষ্ট। পছন্দ না হলে ফেরতও দিয়েছি। তারা তাদের সুনাম রেখেছেন এখন অবধি! তাদের ব্যবহারও ভদ্রলোকের মত। অসুবিধে হল ‘কেয়া শেঠ এক্সক্লুসিভ’ নামক বিক্রেতাদের সঙ্গে। ‘সিল্ক বোমকাই’ বলে একটি নকল জিনিস চালিয়ে দিলেন তাঁরা, ডিসকাউন্টে প্রায় পাঁচহাজার টাকা দাম নিয়ে।" সেই প্রেক্ষিতে কেয়া শেঠের মন্তব্য, "অনলাইনে যেটা উনি দেখেছেন, "সেই প্রোডাক্টই শতরূপা সান্যাল হাতে পেয়েছেন। আমরা তো এরকম কোনও প্রতিশ্রুতি দিইনি যে, ৪ হাজার টাকায় সিল্ক ব্যোমকাই দেব। উনি পোস্টে লিখেছেন, অনলাইন সাইটগুলোর কোনওটাতেই এরকম অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হননি! তাহলে কি ওঁর এটাই অভ্যেস যে, শপিং করে বারবার ফেরত দেওয়া?" এরপরই কেয়া শেঠের সংযোজন, "মিসেস সান্যালের মতো অজস্র মহিলারা রয়েছেন, যাঁরা মনখারাপ থাকলে অনলাইনে শপিং করেন। সেটা শাড়ি কিংবা যে কোনও প্রোডাক্ট হতে পারে। এবং পরে মত বদলালে সেটা ফেরত দিয়ে দেন।"
অনলাইন শপিংয়ের ক্ষেত্রে কী কী সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়? সেটা জানালেন কেয়া শেঠ। তিনি জানিয়েছেন, "অনেকেই শাড়ি অর্ডার করে বাড়িতে পরে বা সেটার ছবি তুলে ফেরত দিয়ে বলেন এটা পছন্দ নয়। কিন্তু ক্রেতাদের কাছে প্রোডাক্ট পাঠানোর একটা ক্যারিং কস্ট তো রয়েছে। এমনকী, অনেকে দোরগোড়া থেকেই ডেলিভারি পার্সনকে বলে দেন যে- অর্ডার লাগবে না। এবং ব্যবসার পলিসিতেও আমাদের পরিষ্কার বলা রয়েছে যে, কোনও প্রোডাক্ট ছেড়াফাটা থাকলেই আমরা রিটার্ন নিই। তবে শতরূপা এবং আমাদের তরফে যেহেতু মেইল মারফত কথা হয়েছিল, সেক্ষেত্রে আমরা বলেছিলাম, আমাদের শোরুমে এসে শাড়ি ফেরত দিতে। তার মাঝেই এমন পোস্ট।"
কেয়া শেঠের পোস্ট করা স্ক্রিনশট
ফেসবুক ভিডিওতে কী বলেন কেয়া শেঠ? তাঁর পালটা অভিযোগ, সাইটেই শাড়ির বিবরণীতে উল্লেখ ছিল- ‘এটি আসল নয়’। অতঃপর সেটা না দেখে শাড়ি কেনা শতরূপারই ভুল। ওই ভিডিওতেই শতরূপাকন্যা তথা অভিনেত্রী চিত্রাঙ্গদাকে তাঁর পরামর্শ, ফেসবুকে কীভাবে ট্যাগ করতে হয় কিংবা কোনটা আসল-নকল শাড়ি, ইত্যাদি যেন তিনি মা শতরূপা সান্যালকে শিখিয়ে দেন। কেয়া শেঠের মন্তব্য, "বছর খানেক আগে তাঁর কাছে শতরূপা এসেছিলেন সিনেমার চিত্রনাট্য নিয়ে গল্প শোনাতে, প্রযোজক হওয়ার জন্য অনুরোধ নিয়ে। তাই শতরূপার কাছে তাঁর ফোন নম্বর আছে। তাও তাঁকে সরাসরি ফোন না করে, এভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘কুৎসা’ রটানো তাঁর ব্র্যান্ডের ভাবমূর্তির ক্ষতি করা।" সেই সঙ্গে কেয়া এও জানিয়ে দেন যে, যদি না তাঁর ব্র্যান্ডের প্রোডাক্টে কোনও ছেড়াফাটা থাকে, তাহলে ফেরত নেওয়া হয় না। তবুও দুই তরফে মেইল চালাচালির পর, প্রস্তাব জানানো হয়েছিল যে শোরুমে এসে শাড়ি বদলে নিয়ে যাওয়ার। এর মাঝেই যে শতরূপার তরফে এহেন ফেসবুক পোস্ট আসতে পারে, সেটা তিনি আশা করেননি বলেই জানান।