সুলয়া সিংহ: 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস...', 'জাস্টিস ফর আর জি কর', গত এক মাস ধরে এই স্লোগানেই রাত জাগছে কলকাতা। কোথাও প্রতিবাদে মাথায় কালো কাপড়, কোথাও কালো টি-শার্ট, কোথাও ব্যাজ পরে... প্রতিবাদী মিছিলে চোখে পড়ছে এহেন নানা প্রতীকী বিষয়বস্তু। আর এই আন্দোলনেই তিলোত্তমার ন্যায়বিচারের জন্য, নারীদের উপর হওয়া নির্যাতনের জন্য শামিল আরেক নারী। রাতের পর রাত জেগে তিনি শুধু তৈরি করছেন 'প্রতিবাদী ব্যাজ'।
উত্তাল আবহেই নিত্যদিন ন্যায়বিচারের দাবিতে পথে নামছেন। তবে পাশাপাশি কাজ থামিয়ে রাখেননি ঋতুপর্ণা মিত্র। তাঁর তৈরি কোনও ব্যাজে লেখা 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস...', 'জাস্টিস ফর আর জি কর', আবার কোনও ব্যাজে লেখা প্রতিবাদের পরিবর্তিত স্লোগান- 'উই ডিমান্ড জাস্টিস'। স্বতঃস্ফূর্তভাবেই তিনি এই ব্যাজ তৈরি করে আন্দোলনকারীদের সরবরাহ করছেন। তার জন্য অতিরিক্ত কোনও ডেলিভারি চার্জও নিচ্ছেন না ঋতুপর্ণা। হস্তশিল্পী জানালেন, এই ব্যাজগুলোর ডিজাইন আমার করা। ১২ টাকা করে দাম রেখেছি। তৈরি করতে শুধু যেটুকু খরচ, সেটাই রেখেছি দাম হিসেবে। যাঁরা অর্ডার করছেন, কোনওরকম ক্যুরিয়র চার্জও নিচ্ছি না তাঁদের পাঠাতে। এটা আমি ব্যবসার স্বার্থে করছি না। কাজের মধ্য দিয়েই এভাবে প্রতিবাদ করছি।
[আরও পড়ুন: আম্বানিদের গণপতি মজলিশে কলকাতার পোশাকশিল্পী অভিষেকের ধুতি-পাঞ্জাবিতে সইফ]
এই প্রতিবাদী প্রতীকী ব্যাজ তৈরি কি তাঁরই মস্তিষ্কপ্রসূত? প্রশ্ন যেতেই, বেলঘড়িয়ার বাসিন্দা ঋতুপর্ণা মিত্র জানালেন, "রাখির সময়ে কিছু পরিচিত ডাক্তাররা এই ডিজাইনের রাখি চেয়েছিলেন। তার পরই এরকম ব্যাজ তৈরির আইডিয়া আসে।" তাঁর কথায়, "রাজ্যজুড়ে যে উত্তাল প্রতিবাদ হচ্ছে এবং সাধারণ মানুষ যাঁরা শামিল হচ্ছেন সেটা দৃষ্টান্তমূলক। পথে নামার পাশাপাশি মানুষের এই ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ে আমার তৈরি ব্যাজ বানিয়ে এভাবেই শামিল হচ্ছি। আমার ব্যবসার প্রচারের জন্য এই উদ্যোগ নয়, ব্যাজ তৈরির এই উদ্যোগ সমস্ত নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে।"
কীরকম সাড়া পাচ্ছেন এই উদ্যোগে? ঋতুপর্ণা জানালেন, "প্রচুর মানুষ যাঁরা প্রতিবাদে শামিল হচ্ছেন, তাঁরা অনেকেই ব্যাজ চাইছেন। সকলের কাছে হয়তো পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না একসঙ্গে, তবে আমার পক্ষে যতটা সম্ভব হচ্ছে, করছি। বারাসত থেকে নাগেরবাজার, আমার বাবা, ভাই গিয়ে পৌঁছে দিয়ে আসছেন নিজেই।"