shono
Advertisement
Tutu Bose

অঞ্জন-টুটু বন্ধুত্বে বিচ্ছেদের নেপথ্যেও দেবাশিস দত্ত! নাম না করে বিস্ফোরক টুটু

৭ বছর আগের কথা মনে করালেন টুটু বোস।
Published By: Subhajit MandalPosted: 09:21 PM May 03, 2025Updated: 09:53 PM May 03, 2025

সুলয়া সিংহ ও অর্পণ দাস: 'মোহনবাগানে অঞ্জন ছাড়া যেমন টুটু হয় না, টুটু ছাড়াও অঞ্জন হয় না। অঞ্জনের যা সাফল্য, তার পিছনে টুটু রয়েছে। টুটুর সাফল্যের পিছনে ঠিক ততটাই অঞ্জন।' প্রিয় বন্ধুর প্রয়াণের পর এই কথাগুলিই বলেছিলেন টুটু বোস। আসলে টুটু বোস-অঞ্জন মিত্র জুটি ময়দানে সবচেয়ে দীর্ঘদিনের, সবচেয়ে পরিচিত জুটি। তাঁরা হরিহর আত্মা। সেই ছোটবেলায় হাত ধরাধরি করে ময়দানে যাওয়া থেকে শুরু করে মোহনবাগান ক্লাবকে সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছে দেওয়া। প্রায় ৪ দশকের বন্ধুত্বের সাক্ষী থেকেছে ময়দান। অথচ জীবন সায়াহ্নে এসে সেই বন্ধুত্বেও চিড় ধরেছে। টুটু-অঞ্জন দুই শিবিরে বিভক্ত হয়েছে। আর এই অকল্পনীয় কাণ্ডটির নেপথ্যে নাকি রয়েছেন দেবাশিস দত্ত। শনিবার এক সাংবাদিক বৈঠকে এসে টুটু বোস নাম না করে দাবি করলেন, তাঁর প্রাণের প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে বিবাদের মূল কারণও ক্লাবের বর্তমান সচিব।

Advertisement

২০১৮ সালে মোহনবাগানের বার্ষিক সাধারণ সভায় কার্যত সম্মুখসমরে দেখা গিয়েছিল টুটু বোস-অঞ্জন মিত্রকে। সেবারের নির্বাচনেও একে অপরের বিরুদ্ধে নেমে পড়েন তাঁরা। প্রিয় বন্ধুর বিরুদ্ধে নির্বাচনে লড়তে শেষপর্যন্ত অবশ্য রাজি হননি অঞ্জন। সরে দাঁড়ান তিনি। পরে বন্ধুকে ধন্যবাদ জানিয়ে তাঁর মেয়েকে কার্যকরী কমিটিতে শামিল করার সিদ্ধান্ত নেন টুটুবাবুও। কিন্তু সেসব পরের কথা। তার আগে টুটু-অঞ্জনের বিবাদ নিয়ে বিস্তর লেখালেখি হয়ে গিয়েছে। কেন মতপার্থক্য তৈরি হয়েছিল দুই অভিন্নহৃদয় বন্ধুর? শনিবার বিস্ফোরক দাবি করলেন টুটুবাবু। তাঁর দাবি, "সেবার অঞ্জনের সঙ্গে আমার বিবাদের কারণ ক্লাবের বর্তমান সচিব।" অঞ্জনবাবু অতিরিক্ত 'লোভী' দেবাশিস দত্তকে বহিষ্কার করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু টুটুবাবুই তখন বাধা দেন। এমনকী টুটুবাবু সভাপতি হিসাবে লড়তে চেয়েছিলেন, তাতেও অঞ্জনের আপত্তি ছিল ওই দেবাশিসের জন্যই। অঞ্জনবাবুর আশঙ্কা ছিল, টুটু সভাপতি হয়ে গেলে দেবাশিসের অপরাধ মাফ করে দেবেন। সেই নিয়েই প্রকাশ্যে দুই বন্ধুর বিবাদ। টুটুবাবুর আক্ষেপ, "সেদিন অঞ্জন ঠিক ছিল।"

সেবার নির্বাচন হয়নি। অঞ্জন সরিয়ে নেন নিজেকে। টুটুবাবু সাম্মানিক সভাপতি পদ নেন। তারপরও অঞ্জনবাবু সাবধান করেন টুটুকে। বলে দেন, "বড্ড ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললি।" প্রিয় বন্ধুর সেই আশঙ্কা ভুল ছিল না। পরে টের পেয়েছেন টুটু। পরে মোহনবাগানের কার্যকরী কমিটি থেকে সরতে হয়েছে তাঁর ছেলেকে। তিনি নিজেও একাধিকবার অপমানিত হয়েছেন। শনিবার টুটুবাবু বলছিলেন, "অঞ্জন মারা যাওয়ার পর মিত্র পরিবার ধ্বংস করে দিয়েছে। যে বসু পরিবারকে ধ্বংস করতে গেছে। সে তাড়াতাড়ি করে ফেলেছে। আমি মারা যাওয়ার পর করতে পারত। আমি সাবধান হয়ে গিয়েছি। এবার দেখো কী হয়।"

দেবাশিস দত্তর প্রচারে বোস পরিবার এবং মিত্র পরিবারকে একসুরে আক্রমণ করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, দুই পরিবার মোহনবাগান দখল করে দেবে। সেই অভিযোগও খণ্ডন করেন টুটুবাবু। তিনি বলেন, "একটা সময় ক্লাবকে টেনেছি। আমি-অঞ্জন কতটা কঠিন সময়ে ক্লাবকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছি অনেকেই জানেন।" ক্ষুব্ধ প্রাক্তন মোহনবাগান সভাপতির প্রশ্ন, "বোস পরিবার-মিত্র পরিবারকে আক্রমণকে করা হচ্ছে। কীসের পরিবারতন্ত্র। ওকেও তো আমি নিজের হাতে বসিয়েছি। দত্ত তো আর পরিবারতন্ত্র নয়। সৃঞ্জয় যখন সচিব হল, নিজের কৃতিত্বে হয়েছে। সে যখন ছাড়ল তখন তো আমি বাধা দিইনি। এখন সে দাঁড়াতে চাইলে এত নোংরামি হচ্ছে কেন?" সব মিলিয়ে ভোটপ্রচারে যেভাবে লাগাতার তাঁর পরিবার এবং মিত্র পরিবারকে জড়িয়ে আক্রমণ করা হচ্ছে তাতে রীতিমতো বিরক্ত টুটুবাবু।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • ২০১৮ সালে মোহনবাগানের বার্ষিক সাধারণ সভায় কার্যত সম্মুখসমরে দেখা গিয়েছিল টুটু বোস-অঞ্জন মিত্রকে।
  • সেবারের নির্বাচনেও একে অপরের বিরুদ্ধে নেমে পড়েন তাঁরা।
  • প্রিয় বন্ধুর বিরুদ্ধে নির্বাচনে লড়তে শেষপর্যন্ত অবশ্য রাজি হননি অঞ্জন। সরে দাঁড়ান তিনি।
Advertisement