গৌতম ব্রহ্ম: দারচিনি, আদা, ষষ্টিমধুর মতো ভেষজে করোনা নিরাময়ের দাবি করেছিলেন চিনের বিজ্ঞানীরা। প্রকাশিত হয়েছিল গবেষণাপত্রও। তাকে উদাহরণ হিসাবে সামনে রেখেই শনিবার দেশের আয়ুশ চিকিৎসকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। জানিয়ে দিলেন, করোনার মোকাবিলায় মডার্ন মেডিসিনের পাশাপাশি আয়ুশ চিকিৎসাবিজ্ঞানকেও কাজে লাগানোর প্রস্তুতি চলছে।
আয়ুর্বেদ, হোমিওপ্যাথি, সিদ্ধা, ইউনানি ও যোগ – আয়ুশের সব বিভাগের চিকিৎসকেরই মত নেওয়া হয়েছে। পদ্মভূষণ ডা. দেবেন্দ্র ত্রিগুণা, ডা. কৃষ্ণকুমারের মতো অনেকেই ‘এলসভিয়ার’ ও ‘সায়েন্স ডিরেক্ট’-এ প্রকাশিত চিনা গবেষণাপত্রটির প্রসঙ্গ টেনে করোনা মোকাবিলায় আয়ুর্বেদ ওষুধ প্রয়োগের কথা বলেন। এমনকী আয়ুশ হাসপাতালগুলিকে আইসোলশেন ওয়ার্ড হিসাবে ব্যবহার করার প্রস্তাবও দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী সবটাই মন দিয়ে শোনেন। নোট নিতে বলেন আয়ুশ সচিব ডা. রাজেশ কোটেচা ও ‘সেন্ট্রাল কাউন্সিল ফর রিসার্চ ইন আয়ুর্বেদিক সায়েন্স’-এর ডিজি অধ্যাপক কার্তার সিং ধীমান ও কেন্দ্রীয় আয়ুশ মন্ত্রী শ্রীপদ নায়েককে। জানান, আইসিএমআরের সঙ্গে কথা বলে কেন্দ্র দ্রুত এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। করোনা মোকাবিলায় তৈরি করবে আয়ুশ প্রোটোকল।
[আরও পড়ুন: কঠিন সময়ে ফের এগিয়ে এল টাটা গোষ্ঠী, করোনা রুখতে অনুদান ১৫০০ কোটি টাকা ]
শনিবার বেলা সাড়ে এগারোটায় এনআইসি থেকে শুরু হয় ভিডিও কনফারেন্স। বেঙ্গালুরুর ‘এস—ভাসা’র এইচ আর নগেন্দ্র রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে যোগের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। পতঞ্জলি খ্যাত বৈদ্য বালকৃষ্ণণ অশ্মগন্ধা ও গুলঞ্চের কার্যকারিতার কথা তুলে ধরেন। উপস্থিত ছিলেন নস্য-র সর্বভারতীয় প্রেসিডেন্ট ডা. ছগজ জাঙ্গিদ। সম্প্রতি ‘হেইলংজিয়াং ইউনিভার্সিটি অফ চাইনিজ মেডিসিন’-এর তিন বিজ্ঞানী জান লিং রেন, আই হুয়া ঝাং এবং ঝি-জান ওয়াংয়ে সম্মিলিতভাবে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন। তাতে দাবি করা হয়, ৭০১ জন করোনা পজিটিভের উপর ১২টি ভেষজ থেকে প্রস্তুত পাচন প্রয়োগ করা হয়। ১৩০ জন দ্রুত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। একান্নটি ক্ষেত্রে উপসর্গগুলি গায়েব হয়ে গিয়েছে। ২৬৮টি ক্ষেত্রে রোগীর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছিল। ২১২টি ক্ষেত্রে নতুন করে শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়নি। দাবির সপক্ষে রোগীদের ফুসফুসের সিটি স্ক্যান রিপোর্টও প্রকাশ্যে আনা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: লকডাউন ভেঙে হাজার হাজার শ্রমিকের ভিড়, বিপদঘণ্টা বাজাচ্ছে দিল্লির এই ছবি]
বিষয়টি নিয়ে ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এ প্রথম প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। আলোড়ন সৃষ্টি হয় আয়ুশ চিকিৎসকদের মধ্যে। ৬ হাজারের বেশি আয়ুশ চিকিৎসক প্রধানমন্ত্রীর কাছে করোনা-যুদ্ধে শামিল হওয়ার আবেদন জানান। কয়েকজন অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসকও আলাদা করে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে আয়ুশকে করোনা মোকাবিলায় অন্তর্ভুক্ত করার দাবি তোলেন। তারপরই প্রধানমন্ত্রীর এই ভিডিও কনফারেন্স।
The post করোনা মোকাবিলায় কাজে লাগান ভেষজ পদ্ধতিও, আয়ুশ মন্ত্রককে পরামর্শ মোদির appeared first on Sangbad Pratidin.
