সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিল্লির আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে মুঘল সাম্রাজ্যের ইতিহাস। লালকেল্লা তার সবচেয়ে বড় নিদর্শন। এই দুর্গই ছিল মুঘলদের রাজধানী। এবার সেই লালকেল্লারই সম্পত্তি দাবি করলেন শেষ মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফারের প্রপৌত্রের স্ত্রী সুলতানা বেগম! এনিয়ে দিল্লি হাই কোর্টে মামলাও করেছেন তিনি। আবেদনে জানান, "এই লালকেল্লা আমার।"
পিটিআই সূত্রে খবর, ওই মহিলার স্বামী মির্জা মহম্মদ বেদার বখত মারা গিয়েছেন। দিল্লির শেষ মুঘল সম্রাট ছিলেন বাহাদুর শাহ জাফার। তাঁরই বংশধর মির্জা মহম্মদ। বর্তমানে কলকাতায় থাকেন সুলতানা। শুক্রবার আদালতে তিনি দাবি করেন, লালকেল্লা তাঁদের। তাই হিসাব মতো তাঁকে যেন এই সম্পত্তির ভাগ দেওয়া হয়। কিন্তু এদিন সুলতানার এই আবেদন খারিজ করে দেয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বিভু বাখরু এবং বিচারপতি তুষার রাও গেদেলার বেঞ্চ।
তবে এটাই প্রথমবার নয়। ২০২১ সালের ২০ ডিসেম্বর লালকেল্লার মালিকানা চেয়ে আবেদন করেছিলেন সুলতানা। কিন্তু সেবারেও তাঁর আবেদন খারিজ হয়ে যায় কোর্টে। এই প্রেক্ষিতে এদিন দিল্লি হাই কোর্ট আদেশনামায় বলে, 'আপিল করতে মামলাকারী ৯১৩ দিন দেরি করেছেন। তাঁর যুক্তি, তিনি অসুস্থ ছিলেন। তাঁর মেয়েও রোগভোগের পর মারা যায়। তাই তিনি এতদিন আবেদন করতে পারেননি। আমাদের কাছে এই যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয়। তাই এই আবেদন খারিজ করা হল।' জানা গিয়েছে, সুলতানা তাঁর পিটিশন দাবি করেছিলেন, ১৮৫৭ সালে প্রথমবার ব্রিটিশরা তাঁদের পরিবারকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করেছিল। মুঘল সম্রাটকে দেশ থেকে নির্বাসিত করা হয়েছিল। এরপর লালকেল্লা জোর করে দখল করে মুঘলদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছিল।
পিটিশনে সুলতানা আরও দাবি করেন যে, লালকেল্লার মালিক তিনিই। কারণ এটি তাঁর পূর্বপুরুষ বাহাদুর শাহ জাফরের থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন। তাই লালকেল্লার অধিকার হস্তান্তর করতে হবে। পাশাপাশি ১৮৫৭ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত সরকার যে লালকেল্লা দখল করেছে, তার জন্য ক্ষতিপূরণও দিতে হবে। প্রসঙ্গত, বাহাদুর শাহ জাফার ১৮৬২ সালের ১১ নভেম্বর ৮২ বছর বয়সে মারা যান। ফলে এত বছর পর হঠাৎ এসে লালকেল্লার মালিকানা দাবি করা ধোপে টিকল না ওই মহিলার।