বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: ঘন কুয়াশার কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত উত্তর-পশ্চিম ভারতে। বিমান ও ট্রেন চলাচলের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। সমস্যায় পড়েছেন পর্যটকরা। বছরের শেষ কয়েকটা দিন, বিশেষ করে বাঙালিদের কাছে, পর্যটনের সময়। কুয়াশার কারণে লক্ষ লক্ষ বাঙালি পর্যটক সমস্যায় পড়েছেন। রাজধানী, দুরন্ত, শতাব্দী বা বন্দে ভারতের মতো ট্রেনগুলিও ১৪ থেকে ১৭ ঘণ্টা দেরিতে চলছে। বিমান চলাচলেও ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিমান সংস্থাগুলি অ্যাডভাইজারি জারি করেছে। সোমবারও অনেক বিমান দেরিতে চলেছে। আবার কিছু বিমান বাতিলও করা হয়েছে।
বছর শেষ হতে চলেছে। তাই এখন বাঙালি পর্যটকদের বাড়ি ফেরার পালা। কনকনে ঠান্ডা ও ঘন কুয়াশার কারণে উত্তর পশ্চিম ভারতের উত্তরাখণ্ড, জম্মু-কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ, রাজস্থান বা দিল্লিতে বেড়াতে যাওয়া বহু বাঙালি সমস্যায় পড়েছেন। ট্রেন চলাচলে প্রভাব পড়ায় ঘন্টার পর ঘন্টা হাড় কাঁপানো ঠান্ডার মধ্যে স্টেশনে বসে থাকতে হচ্ছে। হাড়কাঁপানো ঠান্ডার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ঘন কুয়াশা। এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে দেশের বিমান পরিষেবার ওপর।
সোমবার ভোর থেকে দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ায় দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ উত্তর ভারতের বিমানবন্দরগুলো কার্যত কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে। এর ফলে ইন্ডিগো, স্পাইসজেট এবং এয়ার ইন্ডিয়ার মতো বিমান সংস্থাগুলোর সূচিতে ব্যাপক ওলটপালট ঘটেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পক্ষ থেকে যাত্রীদের জন্য বিশেষ 'ট্র্যাভেল অ্যাডভাইজ়রি' জারি করা হয়েছে। উড়ান দেরিতে চলার প্রবল সম্ভাবনার কথা জানিয়ে যাত্রীদের ঘর থেকে বেরোনোর আগে সংশ্লিষ্ট সংস্থার ওয়েবসাইট বা অ্যাপে 'ফ্লাইট স্ট্যাটাস' যাচাই করে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে দিল্লি, জম্মু, অযোধ্যা, গোরক্ষপুর, দ্বারভাঙ্গা, পাটনা, গুয়াহাটি এবং বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে উড়ান চলাচলে বিঘ্ন ঘটতে পারে বলে সতর্ক করেছে স্পাইসজেট। যাত্রীদের বারবার ফ্লাইট স্ট্যাটাস দেখার অনুরোধ জানানো হয়েছে। উত্তর ভারতের সিংহভাগ এলাকা এখন ঘন কুয়াশার কবলে। চণ্ডীগড় থেকে বারাণসী পর্যন্ত দৃশ্যমানতা এতটাই কম যে রানওয়েতে বিমান ওঠা-নামা করা রীতিমতো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে এয়ারলাইনগুলো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিলেও কুয়াশা না কমা পর্যন্ত পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা কম।
ধোঁয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে দেশের রাজধানী। দৃশ্যমানতা নেমে গিয়েছে শূন্যে। এই পরিস্থিতিতে জনজীবন বিপর্যস্ত দিল্লির। ১২৮টি বিমান পরিষেবা বাতিল করা হয়েছে, পাশাপাশি প্রায় ২০০টি উড়ানের সময়সূচি বদল করা হয়েছে। ব্যহত রেল পরিষেবা। নয়ডায় বন্ধ করে করে দেওয়া হয়েছে স্কুল। সবমিলিয়ে অত্যন্ত বিপজ্জনক দিল্লির পরিস্থিতি। আবহাওয়া দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, সোমবার সকাল ৭টায় দিল্লির বাতাসের গুনগত মান বা একিউআই ছিল ৪০৩। যা ভয়ানক খারাপ বলে ধরা হয়। ধোঁয়াশার জেরে দিল্লি বিমানবন্দরের আশপাশের দৃশ্যমানতা নেমে যায় ১২৫ মিটারে।
