নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: অরাজকতার সীমা ছাড়ানো বাংলাদেশকে (Bangladesh) এবার কড়া হুঁশিয়ারি ভারতের। সংখ্যালঘু হিন্দু যুবক দীপুচন্দ্র দাসকে নৃশংস হত্যায় অপরাধীদের বিরুদ্ধে দ্রুত কড়া পদক্ষেপের বার্তা দেওয়া হয়েছে বিদেশমন্ত্রকের তরফে। পাশাপাশি বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের মিথ্যাচার উড়িয়ে দিল্লিতে বাংলাদেশের দূতাবাসের নিরাপত্তা নিয়েও বার্তা দেওয়া হয়েছে ভারতের তরফে।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে জ্বলছে গোটা বাংলাদেশ। নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে সংখ্যালঘু হিন্দু যুবক দীপু দাসকে। এরইমাঝে বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমের তরফে গুজব ছড়ানো হয়, দিল্লিতে আক্রান্ত হয়েছে বাংলাদেশের দূতাবাস। গোটা ঘটনা নিয়ে রবিবার বিবৃতি জারি করা হল বিদেশমন্ত্রকের তরফে। যেখানে বলা হয়েছে, 'বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমের সেই বিভ্রান্তিমূলক প্রচার আমাদের নজরে এসেছে। কিন্তু সত্যিটা হল, দিপুচন্দ্র দাসের হত্যা ও বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার দাবিতে ২০ ডিসেম্বর দিল্লিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল ২০-২৫ জন যুবক। যদিও তাঁরা কোনওরকম আক্রমণ বা নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরির চেষ্টা করেনি। ঘটনাস্থলে মোতায়েন পুলিশকর্মীরা অল্প সময়ের মধ্যেই ওই বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী ভারত দূতাবাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।'
এর পাশাপাশি বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, 'ভারত বাংলাদেশের পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখছি। সেখানকার প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হয়েছে। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা যে উদ্বিগ্ন সে কথাও বাংলাদেশ প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। যারা নৃশংসভাবে দীপু দাসকে হত্যা করেছে অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের পাশাপাশি বিচারের আওতায় আনার আবেদন জানানো হয়েছে।'
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাতে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির। এই ঘটনার পরই ভয়ংকর হিংসা ছড়ায় গোটা বাংলাদেশে। এরই রোষ গিয়ে পড়ে দীপু নামে ওই সংখ্যালঘু হিন্দু যুবকের উপর। ময়মনসিংহের মোকামিয়াকান্দা গ্রামের বাসিন্দা দীপু গত দু’বছর ধরে ভালুকার একটি কারখানায় কর্মরত ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ কারখানায় হঠাৎ একদল বিক্ষোভকারী চড়াও হন। চলে ভাঙচুর। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, টেনে হিঁচড়ে কারখানার বাইরে বের করে আনা হয় দীপুকে। তারপর গণপিটুনি দেওয়া হয় তাঁকে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দীপুর। এরপর তাঁর দেহ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে নিয়ে যায় বিক্ষুব্ধ জনতা। গাছে বেঁধে ধরিয়ে দেওয়া হয় আগুন। সঙ্গে চলে স্লোগান। গোটা ঘটনায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে রাস্তা। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু কী কারণে তাঁকে খুন করা হল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে সূত্রের দাবি, ধর্ম নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের জেরেই খুন করা হয়েছে দীপুকে। যদিও তা মানতে নারাজ নিহতের পরিবার।
