সুব্রত বিশ্বাস: রাত আটটায় কাজে যোগ দেওয়ার সময় পকেটে ছিল মাত্র এক হাজার টাকা। দু’ঘণ্টা বাদেই তাঁর কাছে থেকে ভিজিল্যান্স আধিকারিকরা উদ্ধার করে ১ লক্ষ ৫৩ হাজার টাকা। শিয়ালদহ (Sealdah) স্টেশনে ১৮ অক্টোবর রাতে ভিজিল্যান্স কর্মীরা হেড টিটিই (TTE) সোয়েব রাজার কাছ থেকে এই বিশাল অঙ্কের টাকা উদ্ধার করেন। একই দিন অন্য এক সিনিয়র টিটিই প্রসূন বিশ্বাসের কাছ থেকে উদ্ধার হয় ৪৮ হাজার ৪৬৬ টাকা। এই লক্ষ লক্ষ টাকা উদ্ধার হওয়ায় দুই টিটিই-কে আজীবন চাকরি থেকে বরখাস্ত করল রেল (Indian Railways)।
সোয়েব রাজা, প্রসূন বিশ্বাস অফিসে ক্যাশ ডিকলারেশনের খাতায় জানিয়েছিলেন, তাঁর কাছে ৫০০ টাকা আছে। শিয়ালদহ স্টেশনে দু’জনেই লাগেজ স্কোয়াডে কর্মরত ছিলেন। দু’ঘণ্টার মধ্যে তাদের কাছে লক্ষ-লক্ষ টাকা আসার উপযুক্ত প্রমাণ দেখাতে পারেননি কেউই। ভিজিল্যান্সের দেওয়া রিপোর্টে দু’জনকেই চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করল পূর্ব রেল। এই দু’জনকে সরাসরি বরখাস্ত করা নিয়ে পূর্ব রেল জানিয়েছে, অবৈধ টাকা পাওয়ায় এই বরখাস্ত। সম্প্রতি রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ও পূর্ব রেলের জিএম অরুণ অরোরা কাজকর্মে স্বচ্ছতা না রাখলে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ফলে এক মাসের মধ্যেই এই ধরনের চরম সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।
[আরও পড়ুন: অস্ত্র বিক্রির সময়ই পুলিশের জালে কারবারি, কলকাতায় আগ্নেয়াস্ত্র-সহ ধৃত ২]
দুই টিকিট পরীক্ষকের বিরুদ্ধে এই কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি চরম হুঁশিয়ারি দিয়ে রেল আধিকারিকরা জানিয়েছেন, শিয়ালদহ, হাওড়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে এই ধরনের বেআইনি উপার্জন নিয়ে অসংখ্য অভিযোগ আসে। বুকিংহীন পণ্য থেকে হাজার হাজার টাকা আদায় করে থাকেন এক শ্রেণির টিকিট পরীক্ষক। বহু টিকিট পরীক্ষক কাজের সময়ের আগে এসে নিজের প্রভাব খাটিয়ে বেআইনি টাকা আদায় করে। টিকিট পরীক্ষকদের বেআইনি কারবার যাতে সামনে না আসে সেজন্য বহু সিসি ক্যামেরার মুখও ঘুরিয়ে দেওয়া হয় অন্য দিকে। টিটিই-দের এই মৌরসিপাট্টায় আঘাত করাও বহু ক্ষেত্রে কঠিন কাজ হয়ে দাঁড়ায় বলে তাঁদের মত।
[আরও পড়ুন: নেত্রীর কথাই শিরোধার্য, মন দিয়ে রবীন্দ্রসংগীত গাইবেন মদন মিত্র, শুরু রেকর্ডিং]
তবে এবার ভিজিল্যান্স বড় ধরনের দৌরাত্ম্য ধরে ফেলায় এই ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়েছে। রেল আধিকারিকদের আবেদন, এই ধরনের বেআইনি কাজ রুখতে যাত্রীরাই প্রতিবাদ করুন, রেল কর্তৃপক্ষের কাছে উপযুক্ত প্রমাণ-সহ অভিযোগ দায়ের করতে আবেদন করেছে।