স্টাফ রিপোর্টার: ২৮ জানুয়ারি ১৮৩৫। উইলিয়াম বেন্টিঙ্কের এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তির ফলে তৈরি হল বেঙ্গল মেডিক্যাল কলেজ। ঘটনা হল, এই মেডিক্যাল কলেজ পরিচালনার জন্য একটি কমিটি গঠন হয়। সেই কমিটির অন্যতম সদস্য ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। এখানেই শেষ নয়, মেডিক্যাল কলেজ পরিচালনার জন্য যে কমিটি তৈরি হয়, সেই ধাঁচেই তৈরি হয়েছে স্বাধীন ভারতের ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিল (National Medical Council)।
এশিয়ার প্রথম মেডিক্যাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শনিবার ১৮৯ বছরে পা দিল। এদিনের অনুষ্ঠানে অশীতিপর প্রাক্তনীদের আলোচনায় টুকরো টুকরো স্মৃতি উঠে এসেছে। ডা. ইউ এন ব্রহ্মচারী, ডা. মধুসূদন গুপ্ত, নীলরতন সরকার, রাধাগোবিন্দ কর (RG Kar) থেকে ডা. বিধানচন্দ্র রায়ের মতো মনীষীদের মতো একই সঙ্গে উচ্চারিত হয় দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার প্রথম মহিলা চিকিৎসক কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম। এদিন সকালে ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে অধ্যক্ষ ডা. ইন্দ্রনীল বিশ্বাস জানান,‘‘এতসব চিকিৎসক-সমাজ সংস্কারক এই কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসা করেছেন তাঁদের লেখা প্রেসক্রিপশন বা ব্যবহৃত সামগ্রী নিয়ে একটি মিউজিয়াম তৈরি হবে। যাঁর কাছে যে সামগ্রী আছে সব কলেজে জমা দিন। এসব বাঙালির নিজস্ব সম্পত্তি।’’
[আরও পড়ুন: হাতে আর মাত্র দু’দিন, আবাসে ৫০ হাজার বাড়ির অনুমোদন কীভাবে? চিন্তায় রাজ্য]
হিন্দু স্কুল বা সংস্কৃত কলেজের মতো মেডিক্যাল কলেজেরও প্রিন্সিপাল হওয়ার জন্য বিদ্যাসাগরকে প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বিদ্যাসাগর জানান, চিকিৎসক-শিক্ষকই এই পদের যোগ্য। এদিনের অনুষ্ঠানে জানান আরেক প্রাক্তনী নবতিপর ডা. অমরনাথ দে। তবে ঘড়ি ব্যবসায়ী ডেভিড হেয়ার কয়েক বছরের জন্য অধ্যক্ষ হিসাবে কাজ করেন। একটি সুইস ঘড়ি কলেজকে উপহার দেন। কিন্তু চিকিৎসক না হওয়ার সুবাদে সেই সময়ে তাঁকেও হেনস্তা হতে হয়েছিল।
[আরও পড়ুন: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ড: গোপাল অন্তর্ধান রহস্যের তদন্তে ইডি, নেওয়া হচ্ছে আইনি পরামর্শ]
এটা যেমন একটা দিক, তেমনই পরাধীন ভারতে বাঙালি হিন্দু রোগী মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসার জন্য ভরতি হলে পথ্য হিসাবে কাঁচা সবজি-মাছ দেওয়া হত। রোগীর পরিবার রান্না করে দিত। এমন সব ইতিহাস-সংস্কার বুকে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মেডিক্যাল কলেজ। এখন মোট শয্যাসংখ্যা ২ হাজার ২০০টি ও ২৫০ জন ফ্যাকাল্টি আছে।