সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: 'হার কর জিতনে ওয়ালো কো বাজিগর কহতে হ্যায়।' জম্মু ও কাশ্মীরের ফলের ট্রেন্ড যে পথে এগোচ্ছে তাতে বিজেপির জন্য একথা বলাই যায়। কংগ্রেস-এনসি জোটের কাছে ধরাশায়ী হলেও বিরাট কামব্যাক গেরুয়া শিবিরের। শুধু তাই নয়, বৃহত্তম দল হিসেবেও জম্মুতে নজির গড়তে চলেছে তারা। অন্যদিকে, কার্যত মুছে যাওয়ার পথে জম্মু ও কাশ্মীরের শেষ মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির পিডিপি।
এক যুগ পর জম্মু ও কাশ্মীরে শেষ হয়েছে বিধানসভা নির্বাচন। মঙ্গলবার চলছে ফলপ্রকাশ। আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই স্পষ্ট হবে কার মাথায় উঠবে ভূস্বর্গের মুকুট। এদিকে ফলাফলের ট্রেন্ড বলছে, জম্মু ও কাশ্মীরে ২৮টি আসনে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। ৪৭টি আসনে এগিয়ে রয়েছে কংগ্রেস ও এনসির জোট। একদা শাসকদল পিডিপি এগিয়ে মাত্র ৪টি আসনে। অন্যান্যরা এগিয়ে ৯টি আসনে। অর্থাৎ ক্ষমতা দখলের পথে ইন্ডিয়া জোট এগিয়ে থাকলেও উপত্যকায় বিজেপির উত্থান নজরকাড়া। ২০১৪ শেষ বিধানসভা নির্বাচনে ২৫টি আসন পেয়েছিল বিজেপি। ২৮ আসনের পিডিপির সঙ্গে জোট করে সেবার সরকার গড়ে তারা। ফলাফলের বর্তমান ট্রেন্ড দেখে বলাই যায়, এবার আরও বাড়তে চলেছে বিজেপির আসন।
শেষবার জম্মু ও কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচন হয়েছিল ২০১৪ সালে। তখন অবশ্য উপত্যকা ছিল পূর্ণ রাজ্য। কিন্তু ২০১৯ সালের আগস্টে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। এর পর থেকেই এটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত হয়। ৪৭ আসন বিশিষ্ট কাশ্মীরের মাটিতে বিজেপির ঘাঁটি তেমন শক্ত না হওয়ায় শুরু থেকেই বিজেপির টার্গেট ছিল ৪৩ আসন বিশিষ্ট জম্মু। হিন্দু অধ্যুষিত এই আসনে সর্বোচ্চ আসনের দখল নিতে চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখেনি বিজেপি। সন্ত্রাসকে নির্মূলের প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি ভগ্নপ্রায় মন্দির সংস্কার ও পুনর্গঠন, কাশ্মীরের পণ্ডিত সম্প্রদায়ের পুনর্বাসন এমনকি মহিলাদের বার্ষিক ১৮ হাজার টাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। অনুমান করা হচ্ছে, বিজেপির দেওয়া প্রতিশ্রুতি মন ছুঁয়েছে জম্মুবাসীর তার ফল পড়েছে ভোট বাক্সে। পাশাপাশি ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের সুফল উঠে এসেছে বিজেপির খাতায়। কাশ্মীরে অবশ্য প্রত্যাশা মতোই খুব একটা সাফল্য দেখা যাচ্ছে গেরুয়া শিবিরের।
জম্মু ও কাশ্মীরের বুথ ফেরত সমীক্ষার রিপোর্ট অবশ্য আগেই এই আভাষ দিয়েছিল, ইন্ডিয়া টুডের সিভোটার (India Today-CVoter)-এর দাবি ছিল, ৪০-৪৮টি আসন পেতে চলেছে ন্যাশনাল কনফারেন্স ও কংগ্রেসের জোট। ২৭-৩২ আসন পেতে পারে বিজেপি, মেহবুবা মুফতির পিডিপি পেতে পারে ৬-১২টি আসন এবং অন্যান্যরা ৬-১১টি। ভাস্কর রিপোর্টারস পোল (Bhaskar Reporters Poll)-এর দাবি ছিল, ন্যাশনাল কনফারেন্স ও কংগ্রেস জোট পেতে পারে ৩৫-৪০, বিজেপি ২০-২৫, পিডিপি ৪-৭ এবং অন্যান্য ১২-১৮। রিপাবলিক-গুলিস্তান নিউজ (Republic-Gulistan News)– এর রিপোর্ট অবশ্য ত্রিশঙ্কুর দিকে ইঙ্গিত করে। এদের রিপোর্ট অনুযায়ী, ৩১-৩৬টি আসন পেতে পারে এনসি-কংগ্রেস জোট, বিজেপি পেতে পারে ২৮-৩০টি এবং পিডিপি ৫-৭টি।