সুকুমার সরকার, ঢাকা: নারী পছন্দের শাড়ির তালিকায় প্রথমেই থাকে জামদানি (Jamdani) আর বেনারসি। কিন্তু সম্প্রতি জামিদানি শাড়ির দাম ঊর্ধ্বমুখী, তাই তরুণ প্রজন্ম এখন ঝুঁকে পড়েছেন বেনারসির দিকে। তাই নজরে সবার রাজধানী ঢাকার মীরপুরের বেনারসি পল্লি। বেনারসি (Benarasi), জামদানি, কাতান, সিল্ক, জর্জেট, তাঁত-সহ বিভিন্ন ধরনের শাড়ির জন্য জনপ্রিয় মীরপুরের বেনারসি। ইদের প্রাক্কালে তাই এখানকার সমস্ত দোকানে ব্যস্ততা তুঙ্গে। আবার বিয়ের শাড়ি কেনার জন্য এখনও বেশিরভাগ মানুষের প্রথম পছন্দ মীরপুরের বেনারসি পল্লি।
তরুণী থেকে শুরু করে মধ্যবয়সি – সকলের গন্তব্য এখন মীরপুরের বেনারসি পল্লি। সাধ ও সাধ্য মিলিয়ে শাড়ি কিনতে ক্রেতার ভিড়। দেশি তাঁত, জামদানি, টাঙ্গাইল শাড়ির পাশাপাশি সিল্ক, কাতানও বিক্রি হচ্ছে প্রচুর। এবারের ইদকে সামনে রেখে বেনারসি পল্লিতে পাওয়া যাচ্ছে নানা আঙ্গিকে সোনালি, মেরুন, ম্যাজেন্টা, সবুজ ও ধূসররঙা কম্বিনেশনের বেনারসি, স্বর্ণকাতান শাড়ি। দোকানিরা জানালেন, এবার ইদে (Eid)বেনারসি স্বর্ণকাতান বাজার মাত করবে। সাড়ে ৩ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে একটি স্বর্ণকাতান শাড়ি। এছাড়াও রয়েছে মেঘদূত কাতান, ঘাড্ডি কাতান, চেন্নাই সিল্ক, সাউথ কাতান, মসলিন, ঢাকাই জামদানি, তাঁত জামদানি, কানিয়াচল শাড়ি।
[আরও পডুন: নিয়ম ভাঙায় ১৮ লক্ষ ইউজারের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করল WhatsApp! আপনি মানছেন তো?]
রাজধানী ঢাকার মিরপুর, নরসিংদি জেলার সোনারগাঁও, মাধবদী, বেলাবো থেকে শুরু করে দেশের উত্তরের জেলা বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ঘোলাগাড়ি কলোনির কারিগররা চরম ব্যস্ত সময় পার করছেন। দিন আনা দিন খাওয়া মজুরিতে কাজ করলেও পেশা এখন নেশা হয়ে যাওয়ায় দিনরাত উদয়াস্ত কাজ করে চলেছেন। একে মালিকের অতি মুনাফা আর বাজারের বিক্রিবাটা ভাল না থাকায় কাজ ছাড়া আর কিছু করারও নেই। পাবনা জেলার ঈশ্বরদী বেনারসি পল্লি, ফরিদপুর জেলার মসলিন জামদানি পল্লি, নাটোর জেলার লালপুর উপজেলার ধানাইদহপাড়ার ঐতিহ্যবাহী বেনারসি পল্লিতে চলছে চরম ব্যস্ততা।
[আরও পডুন: আচমকা বুক সমান জলে ভরল পুকুর! ‘অলৌকিক’ কাণ্ডে ভাতারে জোর শোরগোল]
তবে কারিগরদের বড় একটি সমস্যা রয়েছে। তাঁত মেশিনের সাহায্যে এখানে উন্নতমানের শাড়ি তৈরি করা হয়। কিন্তু প্রযুক্তি তেমন উন্নত না হওয়ায় এর ফিনিশিংয়ের কাজ করতে হয় ঢাকায় গিয়ে। গন্তব্য মীরপুরের বেনারসি পল্লি। ফিনিশিংয়ের কাজ শেষে তারা নিজ গাঁয়ে ফিরে আসেন। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে তৈরি করা বেনারসিসহ হরেক রকমের শাড়িগুলো বাজারজাত করেন। এক্ষেত্রেও তাঁরা ঢাকার উপর অনেকটাই নির্ভরশীল। কারণ, এই শাড়িগুলো তাঁরা ঢাকার ব্যবসায়ীর কাছেই বেশি বিক্রি করে থাকেন।