সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হিন্দু মেয়েকে বিয়ে করার অপরাধে এক মুসলিম যুবকের বাড়ি ও দোকান বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল। ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) ডিন্ডোরি জেলায়। জানা গিয়েছে, ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর রত্নাকর ঝা’র নির্দেশেই এই কাজ করা হয়েছে। হিন্দু মেয়েটির পরিবারের মদতেই গোটা ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে।
গত ৭ এপ্রিল সাক্ষী সাহু নামে এক হিন্দু মেয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে (Hindu Muslim Marriage) করেন আসিফ খান নামে এক মুসলিম যুবককে। স্থানীয় একটি মন্দিরে তাঁদের বিয়ে হয়। এর পরেই মেয়েটির বাড়ি থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। তাঁদের তরফে বলা হয়, বাড়ির মেয়েকে অপহরণ করে মুসলিম যুবকের সঙ্গে জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের পরদিনই আসিফের বাড়ি এবং তিনটি দোকান ভেঙে দেওয়া হয়।
[আরও পড়ুন: কেরলের স্থানীয় নির্বাচনে জয় বামেদের, তবে কাঁটা হয়ে রইল বিজেপির উত্থান]
মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট আদেশ দেয়, মেয়েটির পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে যেন কোনও পদক্ষেপ না করা হয়। মধ্যপ্রদেশ সরকারকে দ্রুত তদন্ত করে জবাব দিতে নির্দেশ দেন বিচারপতি। কিন্তু আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পরেও কোনও সুরাহা হয়নি। আসিফের বাবা একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “আমাদের কী হবে? কোথায় থাকব আমরা?” সদ্য বিবাহিত দম্পতিও স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। আসিফ বলেছেন, “আমি মুসলিম হয়েও একটি মন্দিরে গিয়ে বিয়ে করেছি। এতে আমি কী অন্যায় করেছি?”
সাক্ষীও তাঁর স্বামীর সঙ্গে একমত। তিনি বলেছেন, “মুসলিম যুবককে বিয়ে করার বিষয়টি আমার পরিবার মেনে নিতে পারেনি। ভাইরা আমাদের হুমকি দিয়েছিল।” স্থানীয় প্রশাসনের তরফে বলা হয়, বেআইনি ভাবে বাড়ি বানানো হয়েছে তাই ভেঙে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আসিফের বাবা জানিয়েছেন, তাঁদের বাড়ি আইন মেনেই তৈরি হয়েছে। সাক্ষী বলেছেন, “আমার সংসার শুরু করার আগেই আমার বাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। কাউকে ভালবেসে বিয়ে করা কোনও অন্যায় নয়। কিন্তু তাও কিছু মানুষ মনে করেন, আমরা অন্যায় করেছি। কিন্তু আমি গর্ব করে বলতে পারি, আমরা কোনও ভুল করিনি।” একই সুর আসিফের গলায়। তিনি বলেছেন, “আমি নির্দোষ। কারও কাছে আমার সততা প্রমাণ করার দরকার নেই। আমার ভালবাসাই আমার সবচেয়ে বড় শক্তি।” জানা গিয়েছে, আপাতত স্থানীয় প্রশাসন এবং সাক্ষীর পরিবারের থেকে লুকিয়ে রয়েছেন তাঁরা।