সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মৃত্যু এক অবধারিত প্রান্তিক স্টেশন। অনিবার্য সেই গন্তব্যের কাছে পৌঁছে যাওয়ার সংকেত মানুষ যখন পায়, তখন ভাঙা মন নিয়ে সে অপেক্ষা করে শেষ মুহূর্তের জন্য। কিন্তু সেই অবস্থায় কি কেউ এপিটাফ লিখে যেতে পারে? চেন্নাইয়ের (Chennai) এজ্জি কে উমামহেশ তেমনই একজন মানুষ। মৃত্যুকে সামনে দেখেও যিনি নিজের শোকবার্তা (obituary) লিখে রাখার সাহস রাখেন। জানিয়ে যেতে পারেন, ‘আমার পার্টি শেষ’!
গত ১৬ অক্টোবর মারা গিয়েছেন প্রাক্তন রেসিং কার চালক ও ইন্ডিয়ান গ্রাঁপি ফর্মুলা ওয়ান সংস্থার প্রাক্তন সহ সম্পাদক এজ্জি। তাঁর ইচ্ছা অনুসারে তাঁর পরিবারের তরফে স্থানীয় এক সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে সেই শেষ বার্তা। সেই প্রতিবেদন মন জিতে নিয়েছে নেটিজেনদের।
[আরও পড়ুন: পিপিই কিট পরে কোভিড ওয়ার্ডেই দেদার নাচ! ইন্টারনেট মাতাচ্ছেন ডান্সার ডাক্তারবাবু]
অত্যন্ত ঝুঁকিবহুল এক হার্ট সার্জারির পরে ক্রমেই শরীর ভেঙে পড়েছিল। ৭২ বছরের এজ্জি বুঝতে পেরেছিলেন সময় শেষ হয়ে আসছে। এরপরই নিজের ‘বন্ধু, শত্রু ও যাঁরা তার মাঝামাঝি’ তাঁদের উদ্দেশে অন্তিম বার্তা লিখে রাখেন তিনি। সেই সঙ্গে তিনি লিখে গিয়েছেন তাঁর এপিটাফও। সেখানে লেখা আছে, ‘এজ্জি কে উমামহেশ ছিলেন নিজের শর্তে ভুবনগ্রামে বেঁচে থাকা একজন ধর্মহীন মানুষ’।
আবেগঘন ভাষায় এজ্জি আরও লিখেছেন, ‘‘আমার পার্টি শেষ। যাদের পিছনে ফেলে যাচ্ছি তাদের জন্য কোনও হ্যাং ওভার রইল না। সবার সময়ই ফুরিয়ে যায়। ভালো করে বাঁচুন, জীবনকে উপভোগ করুন এবং পার্টি চালিয়ে যান।’’ ওই লেখাটিতে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি তাঁর পুনর্ব্যবহারযোগ্য দেহাংশকে দান করে দিতে চান। বাকি দেহটি দিয়ে যেতে চান অঙ্গব্যবচ্ছেদ-বিদ্যার অধ্যয়নের জন্য।
[আরও পড়ুন: নেই যানবাহন, জঙ্গলপথে ১৭ কিলোমিটার হেঁটেই স্কুলে যান কেরলের এই শিক্ষিকা]
এখানেই শেষ নয়। তিনি আরও এক বার্তা লেখেন। সেটিও তাঁর মৃত্যুর পরে ফেসবুকে পোস্ট করে দেন তাঁর আত্মীয়রা। সরস ভঙ্গিতে সেই লেখায় তিনি জানান, তাঁর পুরনো গাড়িটি এবার জবাব দিয়ে দিয়েছে। চিকিৎসা কর্মীদের অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও সেই গাড়ি যে আর সারবে না তা তিনি বুঝে গিয়েছেন। সকলকে এমন ভাবে বিদায় জানানোর এই ভঙ্গি নেটিজেনদের হৃদয় জিতে নিয়েছে। শক্তি চট্টোপাধ্যায় লিখেছিলেন, ‘মৃত্যুর পরেও যেন হেঁটে যেতে পারি’। এজ্জির শেষ বার্তাতেও সেই দৃঢ় প্রত্যয়েরই সুর।