সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিয়ের মাঝেই ঝেঁপে বৃষ্টি এল। আর তাতেই ধুয়ে গেল ধর্মের যাবতীয় ভেদাভেদ। হিন্দু-মুসলিম যুগল একসঙ্গে জীবন কাটানোর শপথ নিলেন একই ছাদের তলায়। ধর্মের ভেদ থাকলেও দুই নবদম্পতিকেই আশীর্বাদ করলেন নিমন্ত্রিতরা। সাম্প্রদায়িক হিংসার মুখে ছাই দিয়ে একসঙ্গে মেতে উঠলেন প্রীতিভোজে।
মন ছুঁয়ে যাওয়া ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের পুণায়। জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার একই জায়গায় দু'টি বিবাহ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সংস্কৃতি কাওয়াড়ে পাটিল এবং নরেন্দ্র গালান্দে পাটিল নামে দুই যুবক-যুবতীর বিয়ের আসর বসে একটি মাঠে। সন্ধে ৬টা ৫৬ মিনিটে তাঁদের বিয়ের লগ্ন ছিল। ওই মাঠের লাগোয়া একটি হলেই আবার মুসলিম যুগল মাহিন এবং মহসিন কাজির চারহাত এক হচ্ছিল। একসঙ্গেই পাশাপাশি দু'টি জায়গায় চলছিল দু'টি বিয়ের অনুষ্ঠান।
আচমকাই আকাশ ভেঙে বৃষ্টি। বাধ্য হয়ে ভেঙে যায় নরেন্দ্রদের বিয়ের আসর। কিন্তু তখনও সাতপাকে ঘোরা বাকি। এমন অবস্থায় লাগোয়া হলে চলে যান নরেন্দ্র-সংস্কৃতি। মুসলিম যুগলের পরিবারকে অনুরোধ করেন, বিয়েটা সম্পন্ন করার জন্য একটু জায়গার ব্যবস্থা যদি করা যায়। সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যান কাজি পরিবার। মঞ্চ ফাঁকা করে দিয়ে শুরু হয় নরেন্দ্র-সংস্কৃতির বিয়ে। যাবতীয় আচার এবং নিয়ম পালন করে বিবাহ সম্পন্ন হয়। পাশাপাশি দাঁড়িয়ে ছবিও তোলেন দুই সদ্যবিবাহিত দম্পতি। বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে দুই ধর্মের আত্মীয়রাই একসঙ্গে ভোজে বসেন।
পাটিল পরিবারের এক সদস্য বলেন, "আচমকা বৃষ্টি এসে যাওয়ায় সব কিছু কেমন ঘেঁটে গিয়েছিল। তবে পাশের হলটিতেই বিয়ের অনুষ্ঠান চলছিল। সেসময়ে গিয়ে আমরা কাজি পরিবারকে অনুরোধ করি, যদি আমাদের জন্য কিছুটা সময় দেওয়া হয় বিয়ের আচারটুকু শেষ করার জন্য। ওঁরা সঙ্গে সঙ্গে মঞ্চ খালি করে দেন।" তিনি আরও বলেন, একে অপরের ধর্মের প্রতি সম্পূর্ণ সম্মান রেখেই বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে ধর্মের ভিত্তিতে ভেদাভেদের বিষ যেভাবে ছড়াচ্ছে, তার মাঝে এই ঘটনা যেন একবুক টাটকা বাতাস।
