অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: অনুষ্ঠান বাড়িতে রীতিমতো স্যুটেডবাবু হয়ে হাজির। কখনও পাত পেড়ে খাওয়া। অন্যান্যদের সঙ্গে কথাবার্তাও বলা। তার মধ্যেই নজরে চারদিকে ঝালিয়ে নেওয়া। ফাঁক পেলেই সুযোগ বুঝে হাতসাফাই। শিলিগুড়ি শহরের একাধিক অনুষ্ঠানবাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটছিল। পুলিশের কাছে অভিযোগও দায়ের হয়। একের পর এক অভিযোগ পেয়ে ওঁত পেতে বসেছিল পুলিশও। শেষপর্যন্ত চোরবাবাজি ধরা দিলেন। তাও আবার সাক্ষাৎ আমন্ত্রিতদের ভূমিকায়।
চুরির এই অভিনব কায়দায় তদন্তকারীরাও তাজ্জব বনে গিয়েছেন। বিয়ে-সহ একাধিক অনুষ্ঠানের বাড়িতে ভিড়ের মধ্যে হানা দেওয়া। ধরা পড়লে বেদম মার খাওয়ার সম্ভাবনা জেনেও অকুতোভয় ছিলেন ওই ব্যক্তি। ধৃত ওই ব্যক্তির নাম মনোজ চৌধুরী। তিনি পেশায় রংমিস্ত্রি। সোমবার ধৃতকে শিলিগুড়ি আদালতে তোলা হয়।
ধৃত সেই রংমিস্ত্রি।
শীতের মরসুমে একাধিক বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল শিলিগুড়ি শহরে। চলতি মরসুমে ওইসব বিয়ের আসরে চুরির ঘটনা ঘটে। আমন্ত্রিতরা কি তাহলে চুরি করছে? নাকি আমন্ত্রিত সেজে অন্য কেউ বা কারা হানা দিচ্ছেন সেখানে? শিলিগুড়ি থানার পুলিশও ধন্দে পড়ে গিয়েছিল। ওইসব অনুষ্ঠান বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা শুরু হয়। জানুয়ারি মাসে প্রধাননগরের এক বিয়েবাড়িতে একইভাবে চুরির ঘটনা ঘটে। সেই সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে এক বিনা আমন্ত্রিত ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা হয়। সেই ছবি সামাজিক মাধ্যম, বিভিন্ন ভবন ও অনুষ্ঠান বাড়িতে ছড়িয়ে দেওয়া হয় পুলিশের তরফে।
রবিবার রাতে শিলিগুড়ির সেভক রোডের একটি অনুষ্ঠান বাড়িতে বিয়ের আসর বসেছিল। সেখানে স্যুটেড-বুটেড হয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন এই মনোজ চৌধুরী। তাঁকে দেখে চিনে ফেলেন এক অবসরপ্রাপ্ত সেনা আধিকারিক। তিনিই পুলিশে খবর দেন। পানিট্যাঙ্কি ফাঁড়ির পুলিশ দ্রুত সেই অনুষ্ঠান বাড়িতে পৌঁছে যায়। ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। ধৃত ওই ব্যক্তির বাড়ি শিলিগুড়ি সংলগ্ন শিবমন্দির এলাকায়। চুরির জিনিসপত্র কোথায় রাখা হয়েছে? কত দিন ধরে তিনি এই চুরি করছেন? সেসব কিছুই জানতে চাইছেন তদন্তকারীরা।
