সুবীর দাস, কল্যাণী: বেশ কয়েক দিন ধরেই প্রাতঃভ্রমণকারীরা টার্গেট হচ্ছিলেন। সকালে বেরোলেই চোখ লক্ষ্য করে ছুড়ে দেওয়া হত লঙ্কার গুঁড়ো। আর তারপরেই ছিনতাই করা হত গলায় থাকা সোনার হার, আংটি-সহ অন্যান্য অলঙ্কার। থানায় একাধিক অভিযোগ আসতে শুরু করেছিল। দিনের পর দিন এক ঘটনা ঘটায় আতঙ্ক ছড়িয়েছিল প্রাতঃভ্রমণকারীদের মধ্যেও। পুলিশ তদন্তে নেমে একাধিক দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করে। দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করতে টিআই প্যারেড করা হয়। আর তাতেই সাফল্য মিলল। চিহ্নিত হল দুই ছিনতাইকারী। ঘটনাটি নদিয়ার কল্যাণী থানা এলাকার। পুলিশের এই সাফল্যে খুশি স্থানীয়রাও।
আজ, শুক্রবার রাণাঘাট পুলিশ জেলার পক্ষ থেকে এই বিষয়ে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করা হয়। সেখানেই ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরেই কল্যাণী এলাকায় ছিনতাইয়ের অভিযোগ আসছিল। প্রাতঃভ্রমণকারীরা সকালে বেরোতেন। আর তাঁদেরই টার্গেট করা হত। দুই যুবক বাইকে করে আসত। ফাঁকা রাস্তায় হাঁটা কোনও প্রাতঃভ্রমণকারীকে টার্গেট করা হত। তারপরই তাঁর কাছে গিয়ে চোখে লঙ্কার গুঁড়ো ছেটানো হয়। ওই ব্যক্তি বা মহিলার চোখে সেই লঙ্কার গুঁড়ো গেলে তারপরই শুরু হত হাতসাফাই। গলা থেকে টেনে খুলে নেওয়া হত অলঙ্কার। দামি আংটিও ছিনতাই হত। তারপরই ছিনতাইকারীরা দ্রুত চম্পট দিত।
পুলিশ তদন্তে নামে। কিন্তু ওই দুষ্কৃতীরা নম্বরবিহীন বাইক নিয়ে ওই কাজ চালাচ্ছিল। ফলে তাদের ধরতে সমস্যা দেখা দেয়। এরপরই পুলিশ সিদ্ধান্ত নেয়, দুষ্কৃতীদের ধরতে ফাঁদ পাতা হবে। সাদা পোশাকে পুলিশ কল্যাণীর বিভিন্ন এলাকায় থাকবে। এভাবে নজরদারি চালানোর সময় গত ১৫ জুন কল্যাণীর ৫-এর পল্লী থেকে দুই ছিনতাইকারী গ্রেফতার হয়। তাদের থেকে পাওয়া যায় বেশ কিছু সোনার গয়না ও লঙ্কার গুঁড়ো। দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করতে টিআই প্যারেড করানো হয়। ওই দু'জনকে শনাক্ত করা হয়। এরপরই অন্যান্য প্রক্রিয়া শুরু করে পুলিশ। তাদের কল্যাণী মহকুমা আদালতে তোলা হয় অভিযুক্তদের। বিচারক ধৃতদের ৭ দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। ধৃতদের জেরা করে আরও ছিনতাইয়ের অলঙ্কারের সন্ধান পেতে চাইছে পুলিশ।